নিজস্ব প্রতিনিধি: মেদিনীপুর, পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মভূমি, কর্মভূমি, বিচরণভূমি। সেই জেলাই এখন তিন ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। ঝাড়গ্রাম মহকুমা এখন পৃথক এক জেলা যা জঙ্গলমহলের মধ্যে পড়ে। বাকি রয়েছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা। এই দুই জেলা ২০২২ সালের মাধ্যমিক(Madhyamik) পরীক্ষায় আবারও পাশের হারে টেক্কা দিয়েছে রাজ্যের প্রায় সব জেলাকেই। রাজ্যের মধ্যে সব থেকে বেশি পাশের হার পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) ও পশ্চিম মেদিনীপুর(Paschim Midnapur) জেলার। মেধা তালিকাতেও ভেলকি দেখিয়েছে এই দুই জেলা। এবারে যে ১১৪জন পরীক্ষার্থী মেধা তালিকায় রয়েছে তাঁদের মধ্যে ২১জন মেদিনীপুরের মাটির সন্তান। আরও অবাক করার বিষয় এই ২১জনের মধ্যে ১৪জন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার। বাকি ৭জন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার।
এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় যুগ্মভাবে দ্বিতীয় হয়েছে দুইজন। এদের মধ্যে একজন রৌনক মণ্ডল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল বিদ্যাসাগর হাইস্কুলের ছাত্র। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯২। রৌনক রাজ্যে দ্বিতীয় হওয়ার পাশাপাশি জেলায় প্রথমও হয়েছে। রাজ্যে এবার মাধ্যমিকে তৃতীয় হয়েছে দুইজন। তাঁদের মধ্যে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার চোরপালিয়া শ্রী শ্রী বাসন্তী বিদ্যাপীঠের ছাত্রী দেবশিখা প্রধান। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯১। দেবশিখা রাজ্যে তৃতীয় হওয়ার পাশাপাশি জেলাতেও প্রথম হয়েছে। রাজ্যে এবার ৬জন ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছে। এদের মধ্যে ২জন রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার। তাঁরা হল কাঁথি হিন্দু গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী সমতা কুলিয়া ও মানিকজোড় কামিনীকুমারী হাইস্কুলের ছাত্র প্রতীক মাইতি। দুইজনেরই প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮। দুইজনই জেলায় দ্বিতীয় হয়েছে।
রাজ্যে এবার মাধ্যমিকে সপ্তম হয়েছে ১০জন। তাঁদের মধ্যে ২জন পশ্চিম মেদিনীপুর ও ১জন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার। এরা হল – পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শ্রী রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবনের পড়ুয়া রনিত শাহু ও মালেশ্বরপুর সারদা বিদ্যাপীঠের পড়ুয়া শাশ্বত সিংহ এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কিশোরনগর শচীন্দ্র শিক্ষা সদনের ছাত্র সায়ন্তন মাইতি। এই তিনজনই ৬৮৭ নম্বর পেয়েছে। রনিত ও শাশ্বত রাজ্যে সপ্তম হওয়ার পাশাপাশি জেলাতে দ্বিতীয় হয়েছে। সায়ন্তন রাজ্যে সপ্তম হওয়ার পাশাপাশি জেলায় তৃতীয় হয়েছে। রাজ্যের মধ্যে এবার অষ্টম স্থান পেয়েছে মোট ২২জন। তাঁদের মধ্যে ৩জন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এবং ২জন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার। পূর্ব মেদিনীপুরের যে ৩জন রাজ্যে অষ্টম হয়েছে তাঁরা হল কোলাঘাট থার্মল পাওয়ার প্ল্যান্ট হাইস্কুলের ছাত্রী ঈশিতা সামন্ত, হাঁসচড়া মৃত্যুঞ্জয় ধনঞ্জয় হাইস্কুলের ছাত্র সারস্বত গায়েন ও বিবেকানন্দ মিশন আশ্রমের ছাত্র অনীশ ঘড়াই। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দুইজন হল মেদিনীপুর শ্রী রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবনের ছাত্র দেবমাল্য নিয়োগী ও ধনেশ্বরপুর রাখালচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্রেয়সী ভূঁইয়া। এই ৫জনের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৬। এদের মধ্যে দেবমাল্য ও শ্রেয়সী জেলায় তৃতীয় হয়েছে।
রাজ্যে মাধ্যমিকে এবার দশম হয়েছে ৪০জন। এদের মধ্যে ৮জন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ও ১জন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পড়ুয়া। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পড়ুয়াদের মধ্যে রয়েছে কাঁঠি হিন্দু গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী অনুষ্কা পাহাড়ি ও প্রত্যুষা মিশ্র, কিশোরনগর শচীন্দ্র শিক্ষাসদনের ছাত্র অর্ঘ্যদীপ মাইতি, জ্ঞানদীপ বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের ছাত্র সৌম্যদীপ গিরি, তমলুক হ্যামিল্টন হাইস্কুলের ছাত্র শৌনক প্রামাণিত ও আলেখ্য বাড়, তমলুক রাজকুমারী সান্ত্বনাময়ী গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী তনিষ্ঠা দাস এবং কাণ্ডপশরা দেশপ্রাণ হাইস্কুলের সৌমদীপ শেঠ। পশ্চিম মেদিনীপুইর জেলার রাধামোহনপুর বিবেকানন্দ হাইস্কুলের অয়নকুমার পালও এই তালিকায় আছে। এদের সকলের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৪।