নিজস্ব প্রতিনিধি: বিপর্যয়ের আভাস আগেই মিলেছিল সঙ্ঘের(RSS) নিজস্ব সমীক্ষায়। সেখানেই ধরা পড়ে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে(2024 General Election) বিজেপি(BJP) জয়যাত্রা থেমে যেতে পারে ২০০ থেকে ২১০টি আসনের মধ্যেই। এবার সামনে এসেছে বিজেপির নিজস্ব সমীক্ষাও। সেখানেই আভাস মিলেছে, ১৮০টির বেশি আসন পাওয়া খুবই চাপের। অগ্যতা এবার ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা। আবেগে সুড়সুড়ি দেওয়ার পালা। কেননা হিন্দুত্বের টনিকে আর সমর্থন জুটছে না। তাই নজরে এবার বন্দে ভারত এক্সপ্রেস(Vande Bharat Express)। সম্পূর্ণ ভাবে দেশে তৈরি এই সেমি হাইস্পিড ট্রেন ঘিরে গেরুয়া শিবিরে উন্মাদনার অন্ত নেই। আমজনতার একাংশের মধ্যেও আবেগ তুঙ্গে। আর সেটা বুঝেই এবার বন্দে ভারত এক্সপ্রেসেই বাজি রাখছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi)। আর সেই সূত্রেই তাঁর হাত ধরে বাংলা(Bengal) আরও একজোড়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেস পেতে চলেছে খুব শীঘ্রই। যদিও তার পরেও ২০১৯ এর ভোটে বাংলা থেকে পাওয়া ১৮টা আসনে আবারও জয়ের মুখ দেখা যাবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
আরও পড়ুন সরস্বতী পুজোয় হাতেখড়ি হবে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের, থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসে সংসদে যে বাজেট পেশ হবে সেখানেই বাংলার জন্য ৩টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের কথা ঘোষণা করা হবে। তার মধ্যে ২টি চালু হবে পুজোর আগেই। এই নতুন ২ বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলবে হাওড়া থেকে রাঁচি ও পুরীর মধ্যে। পুজোর পরে আরও ১টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস পাবে বাংলা যা চলবে হাওড়া ও বারাণসীর মধ্যে। অর্থাৎ মোদির হাত ধরে এই নিয়ে মোট ৪টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস জুটতে চলেছে বাংলার কপালে। হাওড়া থেকে পুরী ও রাঁচি—দু’টি রুটেই চলে শতাব্দী এক্সপ্রেস। কিন্তু এই দু’টি রুটে প্রায় সারাবছরই যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ থাকে। অনেক আগে থেকে টিকিট কাটলেও ওয়েটিং লিস্টে চলে যেতে হয়। উৎসব, পার্বণে এই চাপ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে স্পেশাল ট্রেনও চালায় রেল। তাই রেলের এই সিদ্ধান্তে যাত্রীদের প্রভূত সুবিধা হবে বলে মনে করছেন রেলকর্তারা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ৪টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস দিয়েও মোদি কী বাংলার মানুষের সেই সমর্থন পাবেন যা তিনি ২০২৯ সালের ভোটে পেয়েছিলেন?
আরও পড়ুন আবাস প্রকল্পে বাংলাকে ‘টাইট’ দিতে গিয়ে বিপাকে এবার বিজেপিই
২০১৯ সালে বিজেপি বাংলা থেকে যে ১৮টি আসন পেয়েছিল তার মধ্যে আসানসোল তাঁদের ইতিমধ্যেই হাতছাড়া হয়েছে। বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফিরে এসেছেন অর্জুন সিংও। সেই হিসাবে ব্যারাকপুরও হাতছাড়া হয়েছে। বাকি ১৬টি আসনের মধ্যে সঙ্ঘ ও বিজেপির তরফে খালি ৬টি আসনকে চিহ্নিত করা হয়েছে ‘সম্ভাব্য’ হিসাবে। কেননা এই ৬টি আসনে কিছুটা হলেও বিজেপি লড়াই করার জায়গায় রয়েছে। এই ৬টি আসন হল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের কোচবিহার, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লার আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের বনগাঁ, রানাঘাট এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্র। যদিও শেষ মুহুর্তে এই হিসাবও যে বদলে যেতে পারে সেটা মনে করিয়ে দিয়েছেন সঙ্ঘের মাথারা। অধিকারীরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিমুখী হলেও তার জেরে মেদিনীপুরের মাটিতে থাকা মোট ৫টি লোকসভা কেন্দ্রেও যে বিজেপি বাড়তি কোনও অ্যাডভেন্টেজ পাচ্ছে না সেটাও মোটামুটি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় বিজেপির অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে, বড়লোকেদের জন্য চালু হওয়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেস কী পারবে ২০২৪ এর ভোটে আমআদমির ভোট টেনে আনতে!