-273ºc,
Friday, 2nd June, 2023 9:54 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি: বছর সাতেক আগে একটি ঠিকাদার সংস্থাকে কলেজ ভবন নির্মাণের জন্য ৪ কোটি ১৯ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা আগাম মিটিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। সেই হিসাবে এতদিনে কলেজ ভবনের কিছুটা হলেও তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু কয়েকদিন আগে পরিদর্শনে গিয়ে রাজ্যের কারিগরি শিক্ষাদফতরের প্রতিনিধি দল সেই কলেজের ঠিকানায় গিয়ে কিছুই খুঁজে পাননি। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা ইটের পাঁচিল দিয়ে ঘেরা একটি জমি দেখতে পান মাত্র। জানতে পারেন সেখানেই নাকি কলেজ গড়ে ওঠার কথা আছে। বাংলার বুকে এমন অনেক নজীর আছে যেখানে দেখা যাবে রাস্তা বা জলাশয়ের অস্তিতে রয়েছে শুধুমাত্র কাগজে-কলমে। কিন্তু বাস্তবে তার কোনও অস্তিত্বও নেই। ঠিক সেইরকমই অবস্থা ওই ITI কলেজের। যার অস্তিত্ব আছে শুধুমাত্র খাতায়-কলমে, বাস্তবে কিছুই নেই। এই ছবি রাজ্যের জমি আন্দোলনের পীঠস্থান নন্দীগ্রামের(Nandigram) বুকে। আর এই অবস্থার জন্য শাসক শিবির ঠারেঠোরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকেই এর জন্য দুষছেন।
আরও পড়ুন অঙ্গ-বঙ্গ-কলিঙ্গে ভরা ডুবি নিশ্চিত, ২৪’র আতঙ্ক পদ্মশিবিরে
ঠিক কী হয়েছে? পূর্ব মেদিনীপুরের(Purba Midnapur) নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকে ওই ITI কলেজ গড়ে ওঠার কথা। সেই কলেজেই(ITI College) পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাজ্যের কারিগরি শিক্ষাদফতরের প্রতিনিধিরা। কার্যত সেটা ছিল রুটিন পরিদর্শন। কাগজপত্র দেখে তাঁরা নন্দীগ্রামের সোনাচুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের জানা মোড়ের কাছে গিয়ে কলেজের সন্ধান শুরু করেন। কেননা খাতায়কলমে সেটাই ছিল কলেজের ঠিকানা। কিন্তু হাজার খুঁজেও তাঁরা সেখানে কোনও কলেজের সন্ধান পাননি। শেষে এক তৃণমূল কর্মী তাঁদের একটি পাঁচিল ঘেরা জায়গায় নিয়ে যান ও জানান সেখানেই নাকি ওই কলেজ গড়ে ওঠার কথা। ২০১৫ সালে কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ প্রকল্পে কলেজটি গড়ার সিদ্ধান্ত হয়। একটি জনসভা থেকে সেই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। কিন্তু এতদিনেই কেন সেই কলেজ গড়ে ওঠেনি?
আরও পড়ুন বাংলার প্রশাসনে গুরুত্ব বাড়ল অতিরিক্ত জেলাশাসকদের
শাসক দলের দাবি, গড়ে না ওঠার পিছনে কেন্দ্রের বঞ্চনা যেমন আছে তেমনি রাজ্যের বর্তমান বিরোধী দলনেতার ভূমিকাও আছে। কলেজের জন্য চিহ্নিত জমিতে কয়েকজন কৃষক বেশ দীর্ঘদিন ধরে চাষাবাদ করে আসছেন। জমিতে পাঁচিল দেওয়ার কাজ শুরু হলে তাঁর বাধা দেন। সেই সময় শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari) তৃণমূলে ছিলেন। দল তাঁকে ওই সমস্যা মেটাতে বলেছিল। কিন্তু তিনি তা মেটাননি। উপরন্তু চাষীদের আদালতে মামলা ঠুকতে বলেন। সেই মামলাতে স্থগিতাদেশ পান চাষীরা। তারপর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এই প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসনের দাবি, ওই জমিতেই কলেজ তৈরি হওয়ার কথা। কাজ শুরু হলেও জমির দখলদারদের বাধায় তা শেষ হয়নি। জমির দখলদার কয়েকজন তাঁদের পরিবারের সদস্যের সরকারি চাকরি দাবি করেছেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসন দেখছে। দখলদারদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করা যায়, জটিলতা কেটে যাবে। আবার কলেজ প্রসঙ্গে শুভেন্দুর অনুগামীদের দাবি, তৃণমূল কংগ্রেসের ওয়েবসাইটে নন্দীগ্রামে সরকারি আইটিআই আছে বলেই দাবি করা হয়েছে। বাস্তবে কলেজের অস্তিত্ব নেই। সাত বছরেও কেন কলেজ হল না, কার পকেটে টাকা ঢুকল, তার তদন্ত করুক সরকার।