নিজস্ব প্রতিনিধি: ভোটের ভোরে পৃথিবীর আলো দেখল এক কন্যাসন্তান। মালদা(Malda) জেলার গাজোল(Gajol) গ্রামীণ হাসপাতালে এই কন্যাসন্তানের(New Born Daughter) জন্ম দেন এক প্রসূতি। মা ও সদ্যোজাত দু’জনেই সুস্থ আছে। সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার খবর পেয়েই তড়িঘড়ি ভোট দিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে গাজোল হাসপাতালে চলে আসেন ওই প্রসূতির পরিবারের সদস্যরা। ভোটের দিন কন্যাসন্তান ঘর আলো করে আসায় তাঁরা খুবিই খুশি। গ্রামবাসী ও আত্মীয়স্বজনের আবদারে তাঁরা সদ্যোজাতর নাম রাখেন ‘মমতা’। কিন্তু কেন এই নাম রাখলেন? পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ‘ভোটের দিন মেয়ের জন্ম হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) মেয়েদের জন্য কন্যাশ্রী, রূপশ্রী সহ নানা প্রকল্প করেছেন। মেয়েদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তাই তাঁর নাম অনুসারে সদ্যোজাতর নাম রেখেছি মমতা।’
আরও পড়ুন কেন্দ্রের স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ বাংলার পড়ুয়াদের
জানা গিয়েছে যিনি এই কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন তাঁর নাম লক্ষ্মী ভুঁইমালি। তাঁর বাপেবাড়ি গাজোলের ২১ মাইল এলাকায়। শ্বশুরবাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুরের আলতাদিঘিতে। স্বামী পলাশ বৈশ্য রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। এলাকায় কাজ না থাকলে ভিনরাজ্যে কাজে যান। শুক্রবার দুপুরে লক্ষ্মী গাজোল হাসপাতালে ভর্তি হন। শনিবার ভোরে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। সদ্যোজাত শিশুটির বাবা পলাশ বৈশ্য জানিয়েছেন, ‘আমাদের গ্রামের সবাই বললেন, ভোটের দিন মেয়ের জন্ম হয়েছে। নাম রাখো মমতা। তাই ওই নাম রেখেছি। আমি চাই, সবার আশীর্বাদে ও মমতা নাম নিয়েই বড় হোক। এদিন সকালেই ভোট দিয়ে মেয়েকে দেখতে হাসপাতালে চলে এসেছি।’ শিশুটির দাদু সমর বৈশ্য জানান, ‘খবর পেয়েই গাজোলে এসেছি। নাতনিকে দেখেছি। ওর নাম মমতা রাখায় আমি খুশি। মুখ্যমন্ত্রী মেয়েদের জন্য অনেক কাজ করেছেন। তাঁর নামে আমার নাতনির নাম রাখায় গর্ব বোধ করছি।’
আরও পড়ুন কমিশনের গেটে শুভেন্দুর লাথি সমর্থন করে না দল
আসলে এই গোটা ঘটনাটি একটি খণ্ডচিত্র মাত্র। বাংলার অগ্নিকন্যার জন্যই আজ বাংলার ঘরে ঘরে হাজারো ‘মমতা’ জন্ম নিচ্ছে, বড় হচ্ছে। বাংলার বুকে কন্যাসন্তান একটা সময় অকাঙ্ক্ষিত হয়ে উঠেছিল। বিশেষ করে গ্রামীণ নিম্নবিত্ত পরিবারে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সরকারের মাধ্যমে মেয়েদের জন্য একের পর এক প্রকল্প চালু করেছেন। কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার তাঁর সব থেকে বড় প্রমাণ। বাড়ির মহিলাদের তিনি সম্মাণ প্রদান করেছেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ড বাড়ির প্রবীণ মহিলার নামে ইস্যু করে। গ্রামে গ্রামে লক্ষাধিক স্বনির্ভর মহিলা গোষ্ঠী তৈরি করেছেন মহিলাদের নিজের পায়ে দাঁড় করাবার জন্য। কার্যত মমতার এই পদক্ষেপ আজ বাংলার সমাজজীবনের ছবিটাই বদলে দিয়েছে। বিরোধীরা যতই গালমন্দ করুক না কেন বিশ্ব আজ মমতাকে কুর্ণিশ জানাচ্ছে মহিলাদের এই উত্তরণ ঘটানোর জন্য। তাই আজ গর্বের সঙ্গে বাবা-মারা তাঁদের মেয়ের নাম রাখছেন ‘মমতা’। কেননা তাঁরাও তো দেখছেন, বাংলায়(Bengal) নারী বিপ্লব আজ কতটা সার্থক হয়ে উঠেছে।