নিজস্ব প্রতিনিধি: চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে রাজ্যের(Bengal) সব রেশন দোকান(Ration Shop) থেকে আর মিলবে না পুষ্টিযুক্ত আটা(Nutritional Flour)। রাজ্যের খাদ্য দফতর(Food Department) এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। জানানো হয়েছে, রাজ্যের রেশন দোকানগুলিতে এখন পুষ্টিযুক্ত চাল সরবরাহ করা হয়। আটায় যে ভাবে পুষ্টি মূল্য বাড়ানো হয় চালের ক্ষেত্রেও তাই করা হচ্ছে। আটার মতো চালেও ভিটামিন, আয়রন, ফলিক অ্যাসিড প্রভৃতি যোগ করে পুষ্টিগুণ বাড়ানো হচ্ছে। পুষ্টিযুক্ত চাল সাধারণ মানুষের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য হয়েছে। কারণ এতে চালের স্বাদ, গন্ধ প্রভৃতির কোনও পরিবর্তন হয় না। এই পরিস্থিতিতে চাল ও আটা দু’টিকেই পুষ্টিযুক্ত করার কোনও প্রয়োজন নেই বলে মনে করছে খাদ্য দফতর। যদিও প্রশ্ন থাকছে, যারা দুইবেলাই রুটি খান তাঁরা কী এই সিদ্ধান্তের জন্য ক্ষতিগ্রস্থ হবেন না! অনেকেই ডায়বেটিস বা সুগারের জন্য ভাত খান না। তাঁরা দুইবেলাই রুটি খান। এরা এই সিদ্ধান্তের জন্য না পুষ্টিযুক্ত আটা থেকে বঞ্চিত হবেন।
রাজ্যের খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি, রেশনে পুষ্টিযুক্ত আটা সরবরাহ বন্ধ করলে কুইন্টালে ১০ টাকা করে উৎপাদন খরচ কমবে। নতুন ব্যবস্থার পর আটা যে পুষ্টিযুক্ত নয় সেটা প্যাকেটেই লেখা থাকবে। নতুন প্যাকেটের ডিজাইনও তৈরি করা হবে। ২০০৪ সাল নাগাদ রেশনে গমের বদলে পুষ্টিযুক্ত আটা দেওয়া চালু করা হয় কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ অনুমতি নিয়ে। রেশনের গম নথিভুক্ত ময়দা কলগুলিতে পাঠিয়ে সেখানে পুষ্টিযুক্ত আটা উৎপাদনের ব্যবস্থা করা হয়। যদিও প্রথম থেকেই আটা সরবরাহ নিয়ে আপত্তি ও বিতর্ক উঠেছিল। রেশন ডিলারদের একটি সংগঠন কলকাতা হাইকোর্টে তা নিয়ে মামলাও করে। সেই মামলার জেরে বিধিবদ্ধ রেশন এলাকায় গম দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করা হয়। আটা দেওয়া হলে তা নিম্নমানের ও তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যাবে এই আশঙ্কা করেছিলেন রেশন ডিলাররা। এখন শুধু জেলা শহর ও গ্রামে সংশোধিত রেশন এলাকার জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় থাকা গ্রাহকরা আটা পান।
রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের গ্রাহকদের গত দেড়-দুই বছর ধরে আটার বদলে চাল দেওয়া হচ্ছে। কারণ কেন্দ্রীয় সরকার ওপেন সেল স্কিমে রাজ্য সরকারগুলিকে গম বিক্রি করছে না। সম্প্রতি রেশন দুর্নীতি নিয়ে ইডি-র অভিযানের পর গম ভাঙিয়ে আটা দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘প্রভাবশালীদের মালিকানাধীন’ কিছু ময়দা কলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাই রেশনে আটা দেওয়া পুরোপুরি বন্ধ করা হবে কি না সে ব্যাপারে নবান্নের নির্দেশও চেয়েছে খাদ্য দফতর। দেখার বিষয় নবান্ন তাতে সায় দেয় কিনা। কেননা রাজ্যে ভাত খাওয়ার মানুষের সংখ্যা বেশি হলেও রুটি খাওয়ার মানুষের সংখ্যা কিন্তু খুব কম নয়। রেশনে পুরোপুরি আটা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হলে তাঁরা ক্ষুব্ধ ও বঞ্চিত হবেন। তাই অনেকেরই ধারনা নবান্ন হয়তো রেশনের দোকান থেকে পুরোপুরি আট দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাবে সায় নাও দিতে পারে।