নিজস্ব প্রতিনিধি,পাঁশকুড়া: সামনেই কালীপুজো, পারিবারিক পুজোর পাশাপাশি বিভিন্ন পুজো কমিটির প্রস্তুতি তুঙ্গে। পাঁশকুড়ার একটি পরিবারের প্রায় ৫০০ বছর পুরানো পারিবারিক কালীপুজো ঘিরে রয়েছে আজব নিয়ম। অন্য পরিবারের জমির মাটি ছাড়া দেবী মূর্তি গড়া হয় না। বছরের পর বছর এই একই নিয়মেই দেবী মূর্তি গড়ে পুজো হয়ে আসছে প্রজন্মের পর প্রজন্মের হাত ধরে। পাঁশকুড়ার বটব্যাল পরিবারের প্রাচীন কালীপুজো ঘিরে এই আজব নিয়ম রয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Medinipur) জেলাকে কালীক্ষেত্র বলা চলে। এই জেলায় প্রতিটি প্রান্তে কালী মায়ের আরাধনা হয়। জেলার সদর শহর তমলুকে অধিষ্ঠাত্রী দেবী বর্গভীমা। পুরাণে বর্ণিত ৫১ সতীপিঠের একপিঠ এবং জেলায় রয়েছে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের(Bamkim Chandra Chattopadhay) উপন্যাসে স্থান পাওয়া প্রাচীন কপালকুণ্ডলা মন্দির। এছাড়াও জেলার প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অজস্র প্রাচীন কালী মন্দির। যেসব মন্দিরের ইতিহাস ও পুজো শুরু হওয়ার কাহিনী যেমন চমকপ্রদ তেমনি পুজোর রীতিনীতি। সেরকমই একটি কালী মন্দির হল পাঁশকুড়ার তালিট্যা গ্রামের বটব্যাল পরিবারের কালী মন্দির। প্রায় ৫০০ বছরেরও ধরে হয়ে আসছে পাঁশকুড়ার এই তালিট্যা গ্রামের(Tallita Village) বটব্যাল পরিবারের(Battabal Family) কালীপুজো। এই পুজোর প্রধান রীতি হল প্রতিবছর দেবী মূর্তি গড়তে অন্য পরিবারের জমি থেকে তুলে আনা হয় মাটি। প্রতিবছর কোজাগরি পূর্ণিমার দিন অন্য পরিবারের জমি থেকে মাটি তুলে শুরু হয় দেবী মূর্তি গড়ার কাজ।
দেবী মূর্তি গড়া থেকে পুজোর দিন পর্যন্ত পরিবারের আমিষ খাবার বন্ধ থাকে। পূর্বপুরুষের সময় থেকে এই নিয়ম বর্তমান প্রজন্মের হাত ধরে লালিত হচ্ছে।পূর্বপুরুষের আমল থেকে একই নিয়মে পূজিত হয় দেবী কালী মা। এর পাশাপাশি এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নানা কাহিনী। পরিবারে বর্তমান সদস্যদের কথায়, পুজোর দিন সন্ধ্যায় দেবী মূর্তি চক্ষুদান করা হয়। সারারাত পুজোর পরই ভোর হতে না হতেই দেবী মূর্তি বিসর্জন করা হয়। এই পরিবারের দেবী সূর্য দেখে না। পরিবারের এই প্রাচীন কালী পুজো প্রতিবছর প্রাচীণ রীতিনীতি ও নিয়ম নিষ্ঠা মেনে হয়। বর্তমানে পরিবারের অষ্টম প্রজন্ম পুজোর দায়িত্ব রয়েছে। পরিবারের সবাই মিলে এই পুজোয় সামিল হয়।