নিজস্ব প্রতিনিধি: নিজেদের সন্তানদেরই বিক্রি। মোটা টাকার বিনিময়ে সন্তান বিক্রি করেই দিন কাটছিল হাওড়ার সাঁকরাইল এলাকার দম্পতির। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে চক্ষু চড়কগাছ সাঁকরাইল থানার তদন্তকারী পুলিশ (POLICE) অধিকারিকদের। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত মহিলার বাপের বাড়ি থেকেই নিজেদের সন্তান বিক্রির কারবার ফেঁদে বসেছিল দম্পতি।
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি হাওড়ার সাঁকরাইল বিধানসভা এলাকার নলপুর উলা ব্রাহ্মণ পাড়ার। স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক বছর আগেও সন্তান বিক্রির অভিযোগ উঠেছিল এই পরিবারের বিরুদ্ধে। ওই পরিবারের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের বচসাও হয়েছিল। তবে তার বেশ কিছুদিন পর থেকে আবারও সন্তান বিক্রির ব্যবসা শুরু হয়, এমনই অভিযোগ এলাকাবাসীদের। স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, নিজেদের সন্তানদের দূরের মিশনারি স্কুলে ভর্তি করে দেওয়ার গল্প ফাঁদা হত। এরপর মোটা টাকার বিনিময়ে সন্তান দত্তক নিতে চাওয়া অন্য দম্পতিদের কাছে শিশু বিক্রি করে দিত নলপুরের উলা ব্রাহ্মণ পাড়ার বাসিন্দা রত্না ও তার স্বামী বিশ্বজিৎ বর।
ঘটনার সূত্রপাত ছয়- সাত বছর আগে। বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে মেদিনীপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ বরের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করে রত্না। এরপর এক মাসের মাথায় সে তার স্বামীকে নিয়ে এসে বাপের বাড়িতেই পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করে।
রত্নার স্বামী কোনও কাজ করত না। পরিবার সূত্রে খবর, দুটি সন্তান হয়েছিল রত্নার। শিশুদের চার-পাঁচ বছর বয়স হওয়ার পরে রত্না তার মা ও বাবাকে জানায়, দুই সন্তানকে দূরে মিশনারি স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হয়েছে। ওই স্কুলে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা ও থাকা খাওয়ার জন্য কোনও অর্থ লাগবে না, দাবি করা হয় এমনটাই। যদিও রত্না ও তার স্বামীর এই কাজ প্রথম থেকেই সন্দেহ করতেন রত্নার দাদা। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, স্কুলে নয় বরং তাঁর ভাগ্না ভাগ্নিকে অন্য দম্পতির হাতে মোটা টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছিল রত্না ও তার স্বামী বিশ্বজিৎ। এমনটাই দাবি করেছেন রত্নার দাদা মৃগাঙ্ক।
তিনি বলেন, দম্পতি সহ তাঁর মা ও খুড়তুতো দাদাকেও সাঁকরাইল থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে। জানা গিয়েছে, এলাকার কারও সঙ্গেই মিশত না অভিযুক্ত দম্পতি।
সাঁকরাইল থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোথায়, কাদের, কত টাকার বিনিময়ে শিশুদের বিক্রি করা হয়েছে তা জানতে জেরা করা হচ্ছে।
ওই দম্পতির অপর দুই সন্তানকে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে রেখেছে। জানা গিয়েছে, সরকারি হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে অভিযুক্তদের সন্তানদের। এই ঘটনায় এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
