এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

রানী ভবানী নিজের পরিচয় গোপন করে দিয়ে গিয়েছিলেন অঞ্জলি

Courtesy - Facebook

নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার ইতিহাসে যে কয়জন দাপুটে নারী চরিত্রের সন্ধান পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম হলেন নটোরের রানী তথা বাংলার রায়বাঘিনী রানী ভবানী(Rani Bhawani)। তাঁর নিজস্ব জমিদারী ছিল এখনকার মুর্শিদাবাদ(Murshidabad) জেলার আজিমগঞ্জ লাগোয়া বড়নগরে। সেই মহীয়সী মহিলাই নিজের পরিচয় গোপন করে কচু পাতায় অঞ্জলি দিয়ে গিয়েছিলেন যে স্থানে সেটাই এখন মুর্শিদাবাদ জেলার সদর শহর বহরমপুরের(Baharampur) খাগড়া(Khagra) এলাকার আদি দুর্গাবাড়ি(Adi Durga Bari) নামে পরিচিত। এখন সেই পুজো হয় মজুমদার পরিবারের হাত ধরে। সেই সূত্রেই খাগড়া এলাকার ৭৯ নম্বর বি বি সেন রোডের মজুমদার বাড়ির আর এক নামই হয়ে উঠেছে ‘আদিদুর্গা বাড়ি’। এই পরিবারের আদি পদবি ছিল মুখোপাধ্যায়। পরবর্তী সময়ে নবাবদের দেওয়া মজুমদার পদবিই তাঁদের পরিচয় হয়ে উঠে। এখন তাঁদের সকলে মজুমদার বলেই চেনেন।  

মজুমদার পরিবারের এই পুজো(Majumdar Families Durga Puja) কে কবে শুরু করেছিলেন তা জানা যায় না। তবে যে সময়ে রানী ভবানী সেখানে অঞ্জলি দিতে এসেছিলেন তখন ভিক্ষাদ্রব্যে পুজোর আয়োজন করতে হত। পুজোর দীনহীন দশা দেখে মা দুর্গার জন্য রানী ভবানী কাঁসার বাসন, জমির দানপত্র ও রানির সিলমোহর দেওয়া ফরমান পাঠিয়ে দেন। যদিও সেই সবের বিন্দুমাত্র অস্তিত্ব এখন আর নেই। কয়েকশো বছর আগের ভূমিকম্পে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে সেই সব বাসনপত্র ও ফরমান-সহ অনেক কিছুই। ভাগীরথীর ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে রানির দান করা জমিও। তবে পুজো বন্ধ হয়নি। শোনা যায় কলকাতা থেকে নটোরে ফেরার পথে রানী ভবানী বড়নগরে আসছিলেন দুর্গাপুজোর সময়ে। বছরটা ১৭৫২ সালের আশেপাশে হবে। ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় তাঁর ইচ্ছা হয়েছিল অঞ্জলি দেওয়ার। কিন্তু কোথায় সেই অঞ্জলি তিনি দেবেন তা বুঝে পাচ্ছিলেন না। কেননা তখন ভাদীরথীর দুই পাড়ই জঙ্গলে ভর্তি ছিল। সেই সময় বজরা করে যেতে যেতে তিনি শুনতে পেয়েছিলেন উলুধ্বনির সঙ্গে ঘণ্টাধ্বনি।

নিজের সঙ্গে থাকা পাইক ও বরকন্দাজদের পাঠিয়ে তিনি বিষয়টি খোঁজ নিতে বলেন। সরজমিনে দেখার পর পাইক বরকন্দাজরা ফিরে গিয়ে রানিমাকে জানালেন, খাগড়ায় রয়েছেন দরিদ্র ও ধর্মপ্রাণ এক মজুমদার পরিবার। তাঁরাই দেবীদুর্গার পুজোর জন্য গঙ্গায় ঘটপূর্ণ করে কাঁসর ঘণ্টা বাজিয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন। রানি স্থির করলেন সেই বাড়িতে গিয়েই তিনি সেদিনই অঞ্জলি দেবেন। সেই সময় ওই পরিবারের কর্তা ছিলেন সদানন্দ মজুমদার। রানী সেই বাড়িতে পৌঁছে দেখলেন, ডালিম গাছের নীচে মাটির বেদীতে ছোট্ট একটি প্রতিমা স্থাপন করে নিষ্ঠার সঙ্গে চলছে দুর্গার আরাধনা। নিজের পরিচয় না দিয়ে মজুমদার পরিবারের অনুমতি নিয়ে কচুর পাতায় করে রানিমা অঞ্জলি অর্পন করেন। কেননা সেই সময় বাসন না থাকায় কচুর পাতায় করে তাঁকে অঞ্জলি দিতে হয়েছিল। সেদিনই পুজোর দীনহীন দশা দেখে সদানন্দ মজুমদার সম্মতি নিয়ে মা দুর্গার নামে কিছু দেওয়ার কথা জানিয়ে চলে এসেছিলেন রানী। কেউ ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেনি বাংলার রায়বাঘিনী সেদিন তাঁদের বাড়িতে এসে অঞ্জলি দিয়ে গিয়েছিলেন। সেই ঘটনার দিন ২ পরে পাইক বরকন্দাজরা বাড়ি বয়ে দিয়ে গিয়েছিল মা দুর্গার জন্য কাঁসার বাসন, জমির দানপত্র ও রানির সিলমোহর দেওয়া ফরমান। তখনই জানতে পারা যায় তিনি নাটোরের রানি ভবানী।

এখনও বেশ ভক্তি ভরেই এই পুজোর আয়োজন করা হয়। একচালার ডাকের সাজের প্রতিমা। তবে বাহন সিংহমুখি ঘোড়া। সপ্তমীতে, অষ্টমীর সন্ধি পুজোতে ও নবমীতে ছাগল বলি দেওয়া হয়। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ভোগ বিতরণ করা হয়। পুজোর কদিন ভোরে বিভিন্ন ধরণের ফল দিয়ে ভোগ দেওয়া হয়। তার পর সকালে ‘বাল্যভোগ’। ৮-৯ রকমের ভাজা, আলু-পটলের তরকারি, পাঁপড় ও চাটনি দিয়ে তৈরি করা হয় ‘বাল্যভোগ’। তার পর বলিদান পর্ব। দুপুর দেড়টা নাগাদ হয় ‘রাজভোগ’। সপ্তমীতে নিরামিষ ভোগ হলেও অষ্টমী ও নবমীর রাজভোগ আমিষ ও নিরামিষ দু’ ধরণেরই হয়। বলির মাংস, মাছ, দই ও মিষ্টান্ন থাকে রাজভোগে। রাতে লুচিভোগ। লুচির সঙ্গে থাকে তরকারি, পান-সুপারি ও মিষ্টান্ন। দশমীতে হয় চিঁড়ে ভোগ। দই, কমলালেবু, আমসত্ত্ব, কাগজি লেবুর রস ও কিসমিস দিয়ে চিঁড়েভোগ তৈরি করা হয়।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে চাষের জমি লুটের অভিযোগ শেখ শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে

রবিবার থেকে জেলায় জেলায় শুরু হবে বৃষ্টি, সোমবার ভিজতে পারে কলকাতা

‘উনি কেন এখনও ফর্ম ফিলাপ করেননি?’, নাম না করে শান্তনুকে CAA খোঁচা মমতার

শেখ শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে জমি হাতানোর অভিযোগ

‘এখন থেকে আমি আর মোদিবাবুর নাম নেব না, বড্ড মিথ্যে কথা বলেন’

বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে দেখা করেই মৃত্যু মাধ্যমিক উত্তীর্ণ  ছাত্রীর

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর