নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুব্রত সাহার(Subrata Saha) প্রয়াণে সোমবার উপনির্বাচন হচ্ছে মুর্শিদাবাদ(Murshidabad) জেলার সাগরদিঘী(Sagardighi) বিধানসভা কেন্দ্রে। এদিন সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়েছে সেখানে ভোটগ্রহণের পর্ব। সাগরদিঘী বিধানসভার মোট ২৪৬টি বুথে আধাসেনা ও রাজ্য পুলিসের সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। প্রতিটি বুথেই সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে চলছে ভোটগ্রহণ। ভোট চলাকালীন লাইভ ওয়েব কাস্টিংয়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। উপনির্বাচনে ৪৪টি ‘ক্রিটিক্যাল’ বুথের দিকে বাড়তি নজর থাকছে নির্বাচন কমিশনের(Election Commission)। শান্তিপূর্ণ ভোট করানোই কমিশনের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ২৪৬টি বুথকে ২২টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি সেক্টরে থাকছে ক্যুইক রেসপন্স টিম(Quick Response Team)। ম্পট ৯জন প্রার্থীর এদিন ভাগ্য নির্ধারণ করবেন মোট ২ লক্ষ ৪৫ হাজার ৮২৫ জন ভোটার। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৫৩৩ জন এবং মহিলা ভোটার রয়েছেন ১ লক্ষ ২১ হাজার ২৮৭জন। কিন্তু পুরুষ ভোটারদের মধ্যে ৩০ হাজারই পরিযায়ী শ্রমিক যারা এবারে অনুপস্থিত। আর তাই শাসক দলের কাছে কিছুটা হলেও চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে এই উপনির্বাচন। বিশেষ করে আসন ধরে রাখার ক্ষেত্রে। প্রথম দুই ঘন্টায় অর্থাৎ সকাল ৭টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৩ শতাংশ ভোট পড়েছে।
আরও পড়ুন স্বাস্থ্যসাথীতে Operation, কড়া সিদ্ধান্ত মমতা প্রশাসনের
সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রে এবারে ৯জন প্রার্থী রয়েছেন। তবে মূল লড়াই হচ্ছে তৃণমূলের প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস ও বিজেপি প্রার্থী দিলীপ সাহার মধ্যেই। এদিনের উপনির্বাচন নিয়ে যাতে কোনও রাজনৈতিক দল প্রশ্ন না তুলতে পারে সেজন্য সতর্ক কমিশনের প্রতিনিধিরা। ভোটের মাত্র দু’দিন আগে বিরোধীদের অভিযোগকে মান্যতা দিয়ে সাগরদিঘি থানার ওসিকে যেমন সরিয়ে দিয়েছে কমিশন তেমনি এদিন ৫৩ নম্বর বুথে প্রিসাইডিং অফিসারকেও বদলে দিয়েছে কমিশন। ওই বুথে যিনি দায়িত্বে ছিলেন, তাঁকে সরিয়ে দেওয়ায় বেশ কিছু ক্ষণ ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল ওই বুথে। নতুন প্রিসাইডিং অফিসার আসার পর সকাল ৭টা ৫২ মিনিট থেকে ফের ভোট শুরু হয়। একই সঙ্গে এদিন ভোটগ্রহণ চলাকালীন সময়ে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ সাহার বিরুদ্ধে নিয়মভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। সামসাবাদ হাইস্কুলে পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বুথের ২০০ মিটারের মধ্যে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্য পুলিশ কর্মীদের সরিয়ে দেন, যা তাঁর এক্তিয়ারে পড়ে না। অথচ তাঁকেই দেখা যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে বুথে ঢুকতে। কেন্দ্রীয় বাহিনী অস্ত্র নিয়ে থাকে বলে তাঁদেরও বুথে ঢোকার অধিকার নেই। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় বাহিনী চলছে বিজেপির কথামতো। এই ঘটনায় রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কমিশন।
আরও পড়ুন পঞ্চায়েত নির্বাচন কার্যত Acid Test, মানছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা
এদিন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে ১১ নম্বর বুথে ঢুকতে বাধা দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। যা নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয় এলাকায়। অথচ নির্বাচনের আইন বলছে প্রার্থী বুথের ভেতরে ঢুকতেই পারেন। বিজেপি প্রার্থী যখন বুথে আসছেন তখন তাঁকে ঢুকতে কোনও বাধাই দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু তৃণমূল প্রার্থীকে বুথে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় বাহিনী কার্যত পরিণত হয়েছে বিজেপি’র বাহিনীতে এবং গেরুয়া শিবিরই তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করছে। আবার তৃণমূলের ফেস্টুন লাগানো টোটোয় ভোটারদের নিয়ে আসা হচ্ছে, এই অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সাগরদিঘীর ৭৮ নম্বর বুথের বড়গরা এলাকা। যে টোটোয় চাপিয়ে ভোটারদের বুথে নিয়ে আসা হচ্ছে, সেই টোটোতে লাগানো রয়েছে শাসকদলের ফেস্টুন। একই সঙ্গে এদিন চোখে পড়ছে কংগ্রেস ও বিজেপির প্রার্থীর মধ্যে কুশল বিনিময়। এদিন সকালে সাগরদিঘী বিধানসভা কেন্দ্রের শামসাবাদে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ সাহা এবং কংগ্রেসের প্রার্থী বায়োডন বিশ্বাস কুশল বিনিময় করেন।