নিজস্ব প্রতিনিধি,সন্দেশখালি: দিনভর নাটক আর চাপানোত্তরের পর অবশেষে রবিবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার হলেন সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি। সোমবার তাকে বসিরহাট আদালতে পেশ করবে পুলিশ। রবিবার অজিত মাইতির ওপর ফের হামলা চালায় গ্রামবাসীরা । গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের বাড়িতে আশ্রয় নেন অজিত মাইতি। সেখানে টানা চার ঘন্টা লুকিয়ে থাকে সে। অবশেষে রবিবার সন্ধ্যার পর সেই সিভিক ভলেন্টিয়ারের বাড়ি থেকে পুলিশ অজিত মাইতিকে বের করে গ্রেফতার করে।সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা অজিত মাইতিকে গ্রেফতার করে আনা হল মিনাখা থানায়। জনরোষ থেকে রক্ষা করতেই পুলিশের এই সিদ্ধান্ত।জমি দখলের অভিযোগে অভিযুক্ত সন্দেশখালি ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেয় তৃণমূল অজিত মাইতিকে । অন্যদিকে, জনসংযোগ বাড়াতে ও ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুজিত বসু এবং পার্থ ভৌমিক রবিবার দিনভর সন্দেশখালিতে এলাকায় এলাকায় ঘুরলেন।
এদিকে ধৃত উত্তম সর্দার আট দিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পর রবিবার ফের মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক উত্তম সর্দারকে পাঁচদিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।এর পাশাপাশি আইএসএফ নেত্রী আয়েশা বিবি কে তিনদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল মহকুমা আদালত। সন্দেশখালির ঘটনায় এবার গ্রেফতার আইএসএফ(ISF) নেত্রী আয়েশা বিবি। রবিবার তাকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়।অন্যদিকে, আয়েশা বিবি গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিক্ষোভে নেমেছেন আইএসএফ নেতারা। জানা গেছে , সন্দেশখালির ঘটনায় হিংসা ছড়ানো, প্ররোচনা দেওয়া সহ একাধিক অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে উত্তেজনা, বিক্ষোভ-আন্দোলন, বন্ধ, এক কথায় তাপ উত্তাপহীন রবিবাসরীয় সকাল সন্দেশখালীর সর্বত্র। বেড়মজুর অঞ্চলের কাঠপুল বাজার এলাকায় অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পে একের পর এক অভিযোগ জানাচ্ছেন বিগত ১০-১২ বছর ধরে নির্যাতিত মানুষরা।
এমন চিত্র ধরা পড়ে রবিবার। বেড়মজুরের বাসিন্দা বিশেষ ভাবে সক্ষম বছর পঞ্চাশের শুভেন্দু মাঝি নিজেই স্ত্রীকে নিয়ে হাতে টানা রিক্সা চালিয়ে হাজির হন অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পে।সেখানেই তিনি লিখিত ভাবে অভিযোগ করে বলেন তার দোকান জোর করে দখল করে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতারা। ভবঘুরের মত আজ দশ বছর ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি।শেখ শাজাহান ফেরার,আর শিবু হাজরা ও উত্তম সর্দাররা জেল বন্দী। তাই সাহস করে নিজেদের জমি বাড়ি দোকান পাট ফিরে পেতে আইনের সাহায্য পেতে পুলিশের দ্বারস্থ সাধারণ মানুষ। পুলিশ ও এলাকাবাসীদের সব কিছু ফিরিয়ে দেবার আশ্বাস দিয়েছে। সন্দেশখালির উদ্ভূত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ২১ দিনের মাথায় সন্দেশখালিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির প্রতিনিধি দল। শনিবারই বিকেলে তারা দিল্লি থেকে কলকাতায় আসেন। রবিবার সকালে তারা বাসন্তী হাইওয়ে ধরে সন্দেশখালি যাওয়ার জন্য হোটেল থেকে বেরোলে ভোজের হাটেই আটকে দেয় পুলিশ। পুলিশ জানায় ওই সব অঞ্চলে ১৪৪ ধারা জারি আছে বলে বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটিকে ধামাখালি জেটি ঘাটের দিকে যেতে দেওয়া হবে না। তখনই পুলিশের সঙ্গে ফ্যাট ফাইন্ডিং কমিটির প্রতিনিধিদের শুরু হয় বাক বিতন্ডা। বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির সদস্যদের অভিযোগ সন্দেশখালি নির্যাতিত মানুষদের অভাব অভিযোগ শোনা এবং সুরাহা করার জন্য তারা সন্দেশখালি যাচ্ছিলেন। কিন্তু সন্দেশখালি থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরেই পুলিশ তাদের আটকে দেয়।
এরপর কলকাতা পুলিশ তাদের লালবাজারে(Lalbazar) নিয়ে যায়।সন্দেশখালি (Sandeshkhali)বেড়মজুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বটতলায় হাতে কাগজ নিয়ে শেখ সিরাজ ও অধীর মাইতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করতে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ। কাঠপোল এলাকায় সেখানে গিয়ে তারা লিখিত আবেদন করবেন বলে গ্রামবাসীরা হাতে কাগজ নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।সন্দেশখালি কান্ড নিয়ে উস্কানিমূলক মন্তব্যর জেরে আইএসএফ নেত্রী আয়েশা বিবির নিঃশর্তে মুক্তির দাবিতে বসিরহাট আদালতের মুলগেটে আইএসএফ নেতাকর্মীরা হাতে ও বুকে প্লাকার ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখায়।অজিত মাইতির ওপর ফের হামলা চালায় গ্রামবাসীরা গ্রাম। গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের বাড়িতে আশ্রয় নেন অজিত মাইতি(Ajit Maity)।জমি দখলের অভিযোগে অভিযুক্ত সন্দেশখালি ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিল তৃণমূল অজিত মাইতিকে । তাঁকে সরিয়ে দুজনকে কনভেনার করল দল । দলীয় সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগণা জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির অন্যতম সদস্য পার্থ ভৌমিক।