কৌশিক দে সরকার: সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের মে মাস নাগাদ রাজ্যের ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন(Panchayat Election) অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সেই নির্বাচনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের(West Bengal State Election Commission) পাশাপাশি রাজ্য প্রশাসনেও। প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজ্যের শাসক দলও। কিন্তু সেই প্রস্তুতি এখনও সেভাবে শুরু হয়নি বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) অন্দরে। তবে পঞ্চায়েতের টিকিট দেওয়া নিয়ে এবার সতর্ক পদক্ষেপ করতে চায় পদ্মশিবির। টিকিট দেওয়ার আগে অবশ্যই দেখে নেওয়া হবে দলের প্রতি সে কতটা দায়বদ্ধ। কিন্তু কোন মাপকাঠিতে তা মাপা হবে তা এখনও ঠিকই হয়নি। আর এই টিকিট বিলির(Ticket Policy) ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা নেওয়ার মূলে উঠে আসছে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পরবর্তীকালের জার্সি বদলের ঘটনা। সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah) আগামী ১৭ জানুয়ারি বঙ্গ সফরে আসছেন। সেই সময়েই নাকি তিনি বঙ্গ বিজেপিকে এই টিকিট বিলির নীতি জানিয়ে দেবেন।
আরও পড়ুন ‘সরকার চায় আপনাদের চাকরি হোক’, আন্দোলনরতদের বার্তা অভিষেকের
একুশের ভোটের আগে দলে দলে মানুষ পদ্মশিবিরে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু ভোটে বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়তেই তাঁদের বড় অংশই হয় বসে গিয়েছেন, নাহয় দল ছেড়েছেন কিংবা তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। আবার এই নব্য বিজেপির দাপটে কোনঠাসা হয়ে পড়া আদি বিজেপির নেতা থেকে কর্মীরা তাঁরাও দলে যোগ্য সম্মান পাননি বলে আজ বসে গিয়েছেন। এর প্রভাব সরাসরি পড়ছে ভোটের বাক্সে। বিধানসভা নির্বাচনের পরে হয়ে যাওয়া পুরসভা নির্বাচনে কার্যত বিজেপির মুখ থুবড়ে পড়া দশা সেটাই প্রমাণ করে। এখন তো এমন অবস্থা যা পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির হয়ে কেউ প্রার্থী হতেও চাইছে না। দলের সমর্থক থেকে শুরু করে সদস্য মায় নেতারাও পিঠটান দিচ্ছেন। মাঝে শোনা গিয়েছিল তৃণমূল এবারের পঞ্চায়েতে যাদের টিকিট দেবে না তাঁদের নিজেদের দিকে টেনে নেবে পদ্মশিবির। দেবে ভোটে লড়াই করার টিকিটও। কিন্তু পরে সেই পরিকল্পনায় কিছুটা হলেও রদবদল করা হয়েছে। কেননা দীর্ঘদিন ধরে যারা দল করছেন তাঁরা যেমন নতুন করে এই পদ্ধতিতে বঞ্চিত হতে পারতেন টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে, তেমনি নতুন নতুন দলে এসে ভোটের টিকিট পেয়ে জিতে গিয়েও যে সে বিজেপিতেই থাকবে তারও কোনও গ্যারেন্টি নেই।
আরও পড়ুন ওরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে রামচন্দ্রকে দেখতে পেয়েছে, বিজেপিকে জবাব অভিষেকের
এই কারণেই এবার পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট বিলির ক্ষেত্রে বাড়তি কিছু সতর্কতার পথ নিচ্ছে বঙ্গ বিজেপি। এই নিয়ে যে নীতি শাহ তৈরি করে দিয়ে যাবেন কার্যত তা মেনেই টিকিট বিলি হবে পঞ্চায়েত ভোটে। তবে বিজেপির কাছে এবার মস্ত বড় সমস্যা হয়ে উঠে আসতে চলেছে মহিলা সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী খুঁযে বের করা। এমনিতেই পদ্মশিবিরের জনপ্রিয়তা বাংলায় এখন তলানিতে ঠেকেছে। তার জেরে কার্যত প্রার্থী খুঁজে পাওয়াই ভার। এই অবস্থায় মহিলা সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী আরওই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। নেপথ্য অবশ্যই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প। বিজেপির প্রার্থী হলে পাছে এই প্রকল্পের টাকা বন্ধ হ্যে যায় এই ভয়ে মহিলারা বিজেপির প্রার্থী হতেই চাইছেন না। এই সমস্যার কথা এবার বঙ্গ বিজেপির তরফে শাহের সামনে তুলে ধরা হবে। দেখা হবে তিনি এই সমস্যার কোন প্রতিকার খুঁজে দেন।