নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘ভারতরত্ন’ লতা মঙ্গেশকরের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। শোকের ছায়া নেমেছে বাংলার বুকেও। শোকস্তব্ধ শান্তিনিকেতন ও বিশ্বভারতীও। আশ্চর্য ভাবে ঠিক এই দিনেই আজ থেকে ২৫ বছর আগে লতা মঙ্গেশকরকে নিয়ে মেতে উঠেছিল শান্তিনিকেতন ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। কেননা ১৯৯৭-এর ৬ ফেব্রুয়ারি, শান্তিনিকেতনে পা রেখেছিলেন সুরসম্রাজ্ঞী। সেদিনই তাঁকে খুব কাছ থেকে চাক্ষুষ করেছিলেন শান্তিনিকেতনবাসী, বীরভূমবাসী। সেই পা রাখার কারণ ছিল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রদেয় সম্মান ‘দেশিকোত্তম’ গ্রহণপর্ব। ওইদিনেই লতা মঙ্গেশকরকে সেই সম্মাণ প্রদান করেছিল রবীন্দ্রস্মৃতি ধন্য এই কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ঘটনাচক্রে ২৫ বছর বাদে সেই ৬ ফেব্রুয়ারিতেই চিরনিদ্রায় চলে গেলেন কোকিলকন্ঠী ভারতের নাইট্যাঙ্গেল। তাই শোকস্তব্ধ বিশ্বভারতী। শোকাতুর শান্তিনিকেতনও।
১৯৯৭ সালের সেই ঐতিহাসিক মুহুর্ত যারা চাক্ষুষ করেছিলেন তাঁদের এখনও মনে আছে সেদিন বিশ্বভারতীর সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চেই কীভাবে ভারতের সুরসম্রাজ্ঞী আড্ডায় মেতেছিলেন বিশ্বকবির স্নেহধন্যা বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সেই আড্ডার সুর এতটাই গভীর ছিল যে সেই অনুষ্ঠানের পরে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অ্যান্ড্রুজ পল্লির বাড়িতেও চলে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় আলাপ করেছিলেন গুটিকয় আশ্রমিকের সঙ্গেও। সেই আড্ডা যারা খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন তাঁরা এদিন জানিয়েছেন, সেই সময়ে লতাজি নাকি কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেছিলেন, ‘তুমি যদি রাজি হও, একসঙ্গে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইব।’ আসলে লতা নিজেরও খুব ইচ্ছা ছিল রবীন্দ্রসঙ্গীতের অ্যালবাম তৈরি করার। সকলের প্রিয় ‘মোহরদি’ সেই একসঙ্গে গানের প্রস্তাবে সায়ও দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই অ্যালবাম আর হয়নি। কেননা তারপরে পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন কণিকা। লতারও আর শান্তিনিকেতনে আসা হয়নি। অধরাই থেকে গেল লতার রবীন্দ্রসঙ্গীতের অ্যালবাম তৈরির ইচ্ছাও। শান্তিনিকেতন আজ তাই কাঁদছে।