27ºc, Haze
Tuesday, 28th March, 2023 11:19 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি: সর্বনাশ! একি করলেন তৃণমূলের তারকা সাংসদ(TMC Star MP)! দলেরই কর্মসূচিতে গিয়ে কিনা দলেরই ঘোষিত নীতি পালন করলেন না। কাঠগড়ায় তৃণমূলের তারকা সাংসদ শতাব্দী রায়(Shatabdi Roy)। গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যে চলছে তৃণমূলের ঘোষিত কর্মসূচী ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’(Didir Surakhsha Kabach)। সেই কর্মসূচী মেনে দলের সাংসদ থেকে বিধায়ক, মায় নেতা মন্ত্রীদেরও যেতে হচ্ছে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। শুনতে হচ্ছে তাঁদের অভাব-অভিযোগ, দাবিদাওয়ার কথা। তৃণমূলের তরফে এই কর্মসূচী ঘোষণা করার সময়েই বলে দেওয়া হয়েছিল দলের নেতানেত্রীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূত হয়ে মানুষের কাছে যাবেন, তাঁদের অভাব-অভিযোগের কথা শুনবেন, তাঁদের বাড়ির দাওয়ায় বসে খাবেন, রাতও কাটাবেন দলেরই কোনও কর্মীর বাড়িতে। তবে দলের সব দূতই যে এমন ভাবেই কর্মসূচী পালন করছেন তা জোর গলায় বলা যাচ্ছে না। কিন্তু শতাব্দীর মতো দিনদুপুরে খাবার ছেড়ে কেউ উঠে যাননি। আর তার জেরেই রাজ্য রাজনীতিতে এখন জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন বিজেপির নেতাদের আব্দার, চাই বর্ধমান-দূর্গাপুর-আসানসোল মেট্রো
শতাব্দী রায় ২০০৯ সাল থেকে বীরভূম(Birbhum) লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ। অর্থাৎ ৩ দফার সাংসদ তিনি। এদিন অর্থাৎ শুক্রবার ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচির পর তাঁরই নির্বাচনী কেন্দ্রের আওতায় থাকা হাসন(Hassan) বিধানসভা কেন্দ্রের বিষ্ণুপুর(Bishnupur GP) গ্রাম পঞ্চায়েতের তেঁতুলিয়া(Tnetulia) গ্রামে দলীয় এক কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজন করার কথা ছিল। এই বিষয়টি দলের তরফেই ঠিক করে দেওয়া হয়েছিল। তাই সাংসদের সঙ্গে পাত পেড়ে খেতে বসেছিলেন দলীয় কর্মীরাও। দলের কর্মী-সমর্থকদের পাশে খেতে বসেওছিলেন বীরভূমের সাংসদ। পাতে ছিল ভাত, ডাল, এঁচোড়ের তরকারি, খাসির মাংস, মাছ। কিন্তু নিজের আসনে বসে দু-একটি ছবি তোলার পরেই না-খেয়ে তিনি উঠে পড়েন। শালপাতার থালায় দেওয়া মাংসভাত ছুঁয়েই দেখেননি তিনি। মুহুর্তের মধ্যে সেই ঘটনা ভিডিও হয়ে ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই ভিডিও ভাইরাল হতেও বেশি সময় লাগেনি। স্বাভাবিক ভাবেই এহেন ঘটনায় একদিকে তৃণমূল যেমন তীব্র অস্বস্তিতে পড়েছে তেমনি দলের অন্দরেই কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছেন দলেরই তারকা সাংসদ।
আরও পড়ুন ঝালদায় প্রশাসকের বিজ্ঞপ্তি খারিজ, নয়া নির্দেশ হাইকোর্টের
ঘটনার জেরে কার্যত দল ও সাংসদের মুখরক্ষার খাতিরে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা দাবি করতে থাকেন, সাংসদ অবশ্যই খেয়েছেন। তবে কর্মীর বাড়ির ভিতরে। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে দলের কর্মী এবং সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, ওই তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে সাংসদকে ঢুকতেই দেখা যায়নি। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতারা জানিয়েছেন, ‘অনেকেই ভেবেছিলেন, শতাব্দীদি হয়তো তাঁদের পাশে বসেই খাওয়াদাওয়া করবেন। কিন্তু সারা দিন গ্রামেগঞ্জে ঘুরে সকলেই ক্লান্ত ছিলেন। দিদিও তাই। হয়তো সেই কারণেই বাড়ির ভিতরে বসে খেয়েছেন উনি। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে উঠোনে বসে না খেলেও ওই কর্মীর বাড়ির ভিতরে গিয়ে খাওয়াদাওয়া করেছেন সাংসদ।’ কিন্তু এই ধরনের বিবৃতিতে বিতর্ক আরও বেড়েছে বই কমেনি। কেননা দলের তারকা সাংসদ কেন দলেরই কর্মীদের পাশে বসে খেতে পারলেন না সেটা নিয়ে আবার পাল্টা প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। আর এই সব কিছুর মাঝে যার অভাব এখন বীরভূমের রাজনীতিতে সব থেকে বেশি অনুভূত হচ্ছে তিনি আর কেউ নন খোদ দিদির ‘কেষ্ট’ থুড়ি অনুব্রত মণ্ডল। দলের জেলা সভাপতি এখন যদি পূর্ণ মহিমায় থাকতেন তাহলে সম্ভবত আজকের এই ঘটনাই ঘটত না।