নিজস্ব প্রতিনিধি: আর ঠিক ৪৮ ঘন্টা বাদেই উত্তরবঙ্গের(North Bengal) জলপাইগুড়ি(Jalpaiguri) জেলার ধূপগুড়ি(Dhupguri) বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। একুশের ভোটে সেই আসন গিয়েছিল বিজেপির দখলে। এবার কিন্তু সেই আসন ধরে রাখা নিয়ে রীতিমত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে গিয়েছে বিজেপি(BJP)। কেননা যে ভোটব্যাঙ্কের সমর্থনের জেরে সেই জয় এসেছিল এখন সেই রাজবংশীরা আর বিজেপির সঙ্গে নেই। সদ্য সদ্য হয়ে যাওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনেই তা প্রমাণিত হয়েছে। এবার সেই উপনির্বাচনের প্রেক্ষাপটেই সামনে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলকে(TMC) ভোট দেওয়া ও সমর্থন করার অপরাধে ৬টি পরিবারকে সামাজিক ভাবে বয়কট(Social Boycott) করার হুকুমজারি করেছেন বিজেপির নেতারা। ঘটনাটি ঘটেছে ধূপগুড়ি যে জেলায় সেই জলপাইগুড়িরই প্রতিবেশী জেলা কোচবিহারের(Coachbehar) বুকে। আর সেই ঘটনাকে ঘিরে এখন রীতিমত অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে দুই জেলারই গেরুয়া শিবিরের নেতারা।
জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জ(Tufanganj) ২ ব্লকের শালবাড়ি(Shalbari)-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের তুরকানির কুঠিতে বিজেপির গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের ফতোয়াতে গ্রামের ৬টি পরিবারকে সামাজিকভাবে বয়কট করার পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই বয়কটের পিছনে রয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই ৬টি পরিবারের সদস্যদের তৃণমূলের প্রতি সমর্থন। এই অভিযোগ সামনে আসতেই রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই এনিয়ে তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের বিডিও’কে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে ওই পরিবারগুলি। শালবাড়ি-২ অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির চেয়ারম্যান পরিমল কার্জি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, ‘শালবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের পর থেকেই বিজেপি এলাকায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলকে সমর্থন করার অপরাধে ৬টি পরিবারকে সামাজিক বয়কট করা হয়েছে। ওই পরিবারগুলির বাজার-ঘাট, জমিতে চাষ-আবাদ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি প্রতিবেশী পরিবারগুলিও যাতে ওই সব পরিবারের সঙ্গে যাতে কোনও যোগাযোগ না রাখে তার জন্যও ফতোয়া জারি করা হয়েছে। এনিয়ে আমরা ব্লক প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছি।’
যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ শালবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মনোরঞ্জন বাড়িয়া। তাঁর দাবি, ‘মিথ্যে অপবাদ দিয়ে বিজেপিকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে তৃণমূল। এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি।’ উল্লেখ্য,পঞ্চায়েত নির্বাচনে তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী হয় ঘাসফুল শিবির। বাকি ৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত গিয়েছে বিজেপির দখলে। শালবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েত তাদেরই মধ্যে একটি। এখন এই ঘটনাকে ঘিরে ধূপগুড়িতে রীতিমত ঝড় তুলেছে তৃণমূল। জোড়াফুলের নেতারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলছেন, বিজেপি উপনির্বাচনে জিতলে সেখানেও এই ধরনের ফতোয়া জারি হবে।