নিজস্ব প্রতিনিধি: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের(Jadavpur University) প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর(Swapnadeep Kundu) রহস্যমৃত্যুর ঘটনার জেরে রবিবার তার মামার বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের(West Bengal Commission for Protection of Child Rights) সদস্যরা। কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চট্টোপাধ্যায়(Ananya Chattopadhay)-সহ কমিশনের সদস্যরা সেখানে কথা বলেন স্বপ্নদীপের মা-বাবা-ভাইয়ের সঙ্গে। যাদবপুরের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের সঙ্গে পরিবারের এই কথোপকথন যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ তার পরই রাজ্যপালের(Governor) কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন যে, ‘এই ঘটনা অমার্জনীয় অপরাধ, আমরা শেষ দেখে ছাড়ব।’ ঘটনাচক্রে এদিনই সকালে পুলিশ এই মৃত্যুর ঘটনায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও ২ পড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছে।
আরও পড়ুন INDIA জিতবে, দেশ মহিলা প্রধানমন্ত্রী পাবে, দাবি জ্যোতিষীর
এদিন রানাঘাটে স্বপ্নদীপের মামার বাড়ি থেকে বেড়িয়ে অনন্যা চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, ‘যা ঘটেছে তা ক্ষমার অযোগ্য। ছেলেটিকে উলঙ্গ অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। ওর দেহে সিগারেটের ছ্যাঁকা ছিল। ও নিজেও ফোন করে ভাইকে জানিয়েছিল, ওকে সমকামী বলা হচ্ছে। তাই এটি যৌন নির্যাতনের পর্যায়ে পড়ে। স্বপ্নদীপের ১৮ বছর বয়স হয়নি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ১৭ বছর ৯ মাস ৯ দিন। তাই পকসো আইনের অধীনে এই ঘটনার বিচার প্রয়োজন। পরিবার জানিয়েছে, গায়ে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছিল। নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছিল প্রথম বর্ষের পড়ুয়াকে। সমকামী বলে দাবি করে একাধিকবার হেনস্থা করা হয়েছিল। অমার্জনীয় অপরাধ, আমরা শেষ দেখে ছাড়ব। অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।’
আরও পড়ুন স্বপ্নদীপের মৃত্যুতে যাদবপুর হারাতে পারে কেন্দ্রীয় অনুদান
এর পাশাপাশি অন্ন্যা জানিয়েছেন, ‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ‘হোক কলবর’ আন্দোলন হয়েছিল, সে সময় যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল, সেখানে আমি ছিলাম। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য সুপারিশ করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্টার মেনে চলার পরামর্শও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তখন অনেকেই এসবের বিরোধিতা করেছিলেন। আমরা যখন সিসিটিভি বসাতে বলেছিলাম, ওখানকার এক অধ্যাপক ফুটপাতে ক্লাস নিতে শুরু করেন। ওখানে সিনিয়র এবং প্রাক্তনীদের দাদাগিরি চলে। কেউ তাঁদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পান না। এর আগে প্রাক্তন উপাচার্য সুরঞ্জন দাসও চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু অধ্যাপক এবং পড়ুয়ারা এর বিরোধিতা করেছিলেন। তাই আজকের ঘটনায় কেউ দায় এড়াতে পারেন না। সিসিটিভি থাকলে আমরা জানতে পারতাম হস্টেলে কী হয়েছিল। সকলের হাতেই রক্তের দাগ লেগে আছে। সকলেই আমাদের আতশকাচের নীচে। আমরা পৃথক ভাবে ঘটনার তদন্ত করছি। যাদবপুর কি অন্য কোনও গ্রহ? দেশের আর পাঁচটা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে নিয়ম আছে, এখানে তা মানা হবে না কেন? কেন ক্যাম্পাসে, হস্টেলে সিসি ক্যামেরা থাকবে না?’