নিজস্ব প্রতিনিধি: জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেই প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা(Voter List)। আর তারপরই রাজ্যের আসতে চলেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের(ECI) ফুল বেঞ্চ। তার আগেই অবশ্য রাজ্যকে আনুষ্ঠানিকভাবে লোকসভা ভোটের(General Election 2024) প্রস্তুতি শুরু করে দিতে বলল নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, এই মর্মে তারা রাজ্যের মুখ্যসচিব(Chief Secretary of West Bengal) ও মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। তাতে কমিশন উল্লেখ করেছে, বর্তমান লোকসভার মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। তাই ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি এখনই শুরু করে দিতে হবে। নবান্ন(Nabanna) সূত্রে জানা গিয়েছে, চিঠিতে যে পর্যায়ের প্রস্তুতির কথা বলা হয়েছে তা শুরু হয়ে গিয়েছে আগেই। ওই চিঠিতে রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। কোন আধিকারিক কতদিন সংশ্লিষ্ট পদে রয়েছেন, তা কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে। পুলিস প্রশাসনের ক্ষেত্রেও ওই তালিকা প্রস্তুত রাখার কথা।
এদিকে রাজ্যে নতুন ভোটারদের নাম তোলার জন্য আবেদন জমা পড়েছে ১০ লক্ষের মতো। আর সেখানেই দেখা গিয়েছে, রাজ্যের প্রায় ৫ লক্ষ যুবক-যুবতী যারা ১৮ বছর বয়স পূর্ণ করেছে তাঁরা এবার ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য কোনও আবেদনই জানায়নি। এবছর তাই যত সংখ্যক নতুন ভোটারের নাম তালিকায় তোলার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল তা শেষমেশ পূরণ হয়নি এই কারণেই। এবার সম্ভাব্য প্রথম ভোটার কারা হতে চলেছেন তার জন্য বুথ লেভেল অফিসাররা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তার সমীক্ষা করেন। তাতে দেখা যায়, ১৭ ঊর্ধ্ব এবং ১৮ বছরে পা দেওয়া তরুণ-তরুণীর সংখ্যা প্রায় ১৫ লক্ষ। তাঁরা প্রত্যেকেই যাতে ফর্ম জমা দেন, তার জন্য বিএলওদের নির্দেশ দিয়েছিলেন কমিশনের কর্তারা। ১ নভেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে ফর্ম জমার প্রক্রিয়া। সেই কর্মসূচি মেটার পর হিসেব করে দেখা গিয়েছে, লক্ষ্যমাত্রার নিরিখে নতুন ভোটার হওয়ার যোগ্য অন্তত ৫ লক্ষ তরুণ-তরুণী এবার ফর্ম জমাই দেননি। তার ফলে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তাদের ভোটদান নিয়ে সংশয় রয়ে গেল।
উল্লেখ্য, গতবার নতুন ভোটারদের আগ্রহ বেশ ভালো ছিল। ভোটার তালিকায় নাম তুলতে ১৬ লক্ষাধিক তরুণ-তরুণী আবেদন করেন সেবার। কয়েক সপ্তাহ ধরে নতুন ভোটারদের অনাগ্রহ নিয়ে প্রত্যেক জেলার সঙ্গে আলোচনা করে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের অফিস। কেন তাঁরা এই মানসিকতা নিয়ে চলছেন, তা জানতে চাওয়া হয় জেলার ওসি ইলেকশনদের কাছে। তার উত্তরে অনেকেই জানান, যেহেতু এখন ভোটার তালিকার নাম তোলার সুযোগ রয়েছে বছরে চারবার, তাই কেউ তাড়াহুড়ো করতে চান না। বিএলও’রা যখন এই তরুণ-তরুণীদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের ফর্ম জমার পরামর্শ দিচ্ছেন, তখন তাঁদের একটা অংশ জানাচ্ছেন, তাঁরা পরে নাম তুলবেন। এদিকে, নাম তোলা, সংশোধন, বাতিল প্রভৃতির জন্য সব মিলিয়ে এবার প্রায় সাড়ে ৩৩ লক্ষ ফর্ম জমা পড়েছে। তার মধ্যে অবশ্য বাতিল হয়ে গিয়েছে ৩ লক্ষাধিক ফর্ম। বাকি ফর্মগুলি পরীক্ষা করে ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।