নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ইতিহাস পুরাতনের দলিল। বয়ে নিয়ে চলে বহু স্মৃতি, বহু বাস্তব। ইতিহাসবর্ণিত শমী বৃক্ষটিও এক জীবন্ত দলিল। সাক্ষী রয়েছে বহু ঘাত প্রতিঘাতের। দক্ষিণ দিনাজপুরের ইতিহাস বর্ণিত শমী বৃক্ষ কয়েক হাজার বছরের পুরোনো। পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে বিখ্যাত হরিরামপুর ব্লকের হতিডোবা গ্রামেই রয়েছে এই বৃক্ষ। দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ বিশ্বাস এবং ভক্তির টানে ছুটে আসে দর্শনে। জাতধর্মের ঊর্ধ্বে গিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ করেন সকলে। মহাভারতে বর্ণিত রয়েছে অজ্ঞাতবাস থাকাকালীন এই বৃক্ষের কোটরেই পাণ্ডবরা নাকি নিজেদের অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিল। শতাব্দী প্রাচীন এই মহীরুহের বয়স বাড়তে আরও বহুবছর বাকি বলেই বিশ্বাস স্থানীয়দের। এই শমীবৃক্ষকে কেন্দ্র করেই এলাকাবাসীদের জীবন জীবিকার নির্ভর করে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে।
প্রাচীন এই শমী বৃক্ষ সংরক্ষণ প্রসঙ্গে হরিরামপুর ব্লকের বিডিও পবিত্রা লামা বলেন “হরিরামপুরে হাতিডোবা গ্রামে অবস্থিত শমী বৃক্ষ এলাকার মানুষ বহু বছর ধরে মহাভারতের পবিত্র শমী বৃক্ষ হিসেবে পুজো করে আসছেন। পাশাপাশি দূর দূরান্ত থেকে পর্যটকদের আগমন ঘটে শমী বৃক্ষ দেখতে। আমরা ইতিমধ্যেই শমী বৃক্ষকে কেন্দ্র করে আরও ভালো পর্যটন কেন্দ্র করে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।”
এলাকাবাসী আমিনুর রহমান বলেন “জন্মের পর থেকেই এই গাছ এবং তার ইতিহাস সম্পর্কে জেনে আসছি। তবে শমী বৃক্ষ কত পুরনো তা আমাদেরও জানা নেই। ১লা বৈশাখে শমী বৃক্ষের নিচে বাৎসরিক মেলা বসে। আমরা চাই মহাভারতের ইতিহাস সমৃদ্ধ এই শমী বৃক্ষকে কেন্দ্র করে আরও বড় পর্যটন কেন্দ্র করে উঠুক এলাকায়।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বাম আমলে এই প্রাচীন বৃক্ষ সেভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। তবে হরিরামপুর ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে এলাকার মানুষজনদের ভাবাবেগকে মর্যাদা দিয়ে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। বাংলা ঐতিহ্যের রাজ্য। এই পশ্চিমবঙ্গের আনাচেকানাচে লুকিয়ে রয়েছে ঐতিহ্যের ছোঁয়া। এই শমী বৃক্ষ তার প্রমাণস্বরূপ।