নিজস্ব প্রতিনিধি: আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের ১০৮টি পুরসভার নির্বাচন। তার মধ্যে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্যতম মহকুমা শহর কাঁথিও। অধিকারীদের খাস তালুক হিসাবে পরিচিত এই শহরের পুরবোর্ড দখল করতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। কিন্তু সেই পুরনির্বাচনের প্রাক্কালে ওই মহকুমারই এক সমবায় দখল করে অধিকারীদের তো বটেই, গেরুয়া শিবিরকে ধাক্কা দিল তৃণমূল। একই সঙ্গে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। কেননা এই সমবায়ের পরিচালন কমিটিতে তৃণমূলকে সমর্থন করেছেন বাম সমর্থিত প্রতিনিধিরাও। আর এখানেই বেশ ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি।
শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় কার্যত পায়ের তলার মাটি সরতে শুরু করে অধিকারীদের। এরপর সময় যতই গড়িয়েছে অধিকারীদের অধিকার ততই খর্ব হয়েছে জেলায়। এরপরেও অবশ্য কাঁথির দুটি বিধানসভা কেন্দ্রেই একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের মুখ দেখেছে বিজেপি। শুধু তাই নয় জেলার ১৬টি আসনের মধ্যে ৭টি আসনেও জয়ের মুখ দেখে গেরুয়া শক্তি। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি যেভাবে গোহারান হারের মুখ দেখেছে তারপর বাংলা জুড়ে বিজেপি ছাড়ার হিড়িক তুঙ্গে উঠেছে। তাল মিলিয়ে ভাঙছে দলের সংগঠন ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এই অবস্থাতেও বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব রীতিমত আশাবাদী কাঁথি পুরসভা দখলের জন্য। তাঁদের আশা অধিকারীদের প্রভাবের হাত ধরেই কাঁথি আসবে তাঁদের দখলে। যদিও ঘটনা এটা যে কাঁথি পুরসভায় অধিকারীদের অধিকার খর্ব করতে বিজেপির তরফে সেই পরিবারের কাউকেই প্রার্থী করা হয়নি পুরনির্বাচনের জন্য।
স্বাভাবিক ভাবেই অধিকারীদের বাদ দিয়ে কাঁথি পুরসভার দখল বিজেপি নিতে পারে কিনা সেটা দেখার জন্য অপেক্ষা করে বসে আছে গোটা বাংলা। ঠিক এই রকম অবস্থায় জেলারই শতাব্দীপ্রাচীন নাচিন্দা ভাইটগড় সমবায় সমিতির পরিচালন কমিটির নির্বাচনে বাজিমাত করল তৃণমূল। কাঁথি-৩ ব্লকের এই সমবায় সমিতির ৪৫টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ২৩টি আসনে ও সিপিআই(এম) সমর্থিত নির্দলরা ২২টি আসনে মনোনয়ন দাখিল করেছে। শনিবার ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহার করার শেষ দিন। আর তারপরেই দেখা যাচ্ছে তৃণমূল ও বাম সমর্থিত নির্দলদের নিয়েই কমিটি গঠন করা হয়েছে। অর্থাৎ পুরনির্বাচনের কাছে অধিকারী তথা বিজেপির কাছে বার্তা গেল প্রয়োজনে বামেরা বিজেপিকে ঠেকাতে তৃণমূলকে সমর্থন দিলেও দিতে পারে। আর এই ঘটনাই চাপে ফেলে দিল বিজেপিকে। যদিও তৃণমূলের দাবি তাঁরা একক ভাবেই এই সমিতির পরিচালন সমিতি দখল করেছে। যদিও কেন তাঁরা সব আসনে প্রার্থী দেয়নি তার কোনও উত্তর মেলেনি।