নিজস্ব প্রতিনিধি: গ্রাম বাংলার(Rural Bengal) দখল নিতে ব্যর্থ হলেও সন্ত্রাসের(Terror) রাস্তা ছাড়তে পারছে না হুগলি(Hooghly) জেলার আরামবাগ(Aarambag) মহকুমার গেরুয়া নেতৃত্ব। তাই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন মিটে গেলেও আরামবাগ মহকুমা এলাকার একের পর এক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বিজেপির বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেই চলেছে। এবার অভিযোগ উঠেছে গোঘাট-১ ব্লকের কুমুড়শা গ্রাম পঞ্চায়েতের বায়ুগ্ৰামে এক তৃণমূলকর্মীর ধানজমিতে ঘাসমারা বিষ দিয়ে বীজতলা নষ্ট করে দেওয়ার। অভিযোগ বিজেপি(BJP) আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। উল্লেখ্য, গোঘাট-১ ব্লকের কুমুড়শা পঞ্চায়েতে তৃণমূল(TMC) জিতলেও যে বুথ এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে সেখানে বিজেপি জিতেছে এবং যে কৃষকের জমিতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে তিনি বিজেপিকে ভোট দেননি। তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার অপরাধেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে এখন দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের।
আরও পড়ুন কামদুনি গণধর্ষণ মামলার শুনানি শেষ কলকাতা হাইকোর্টে
এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে গোঘাট-১ ব্লকের কুমুড়শা পঞ্চায়েতের ২৩৫ নম্বর বুথে বিজেপি জয়লাভ করেছে। যদিও পঞ্চায়েত গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। আর তাই ওই এলাকায় ভোটের পর থেকেই চাপা উত্তেজনা রয়েছে। তার মাঝেই ঘটে গিয়েছে বিষ দিয়ে বীজতলা নষ্ট করে দেওয়ার ঘটনা। তৃণমূলের দাবি, এলাকার একটা দু’টো বুথে বিজেপি জিতেই তৃণমূল কর্মীদের ভাতে মারার চেষ্টা শুরু করেছে। বিজেপির তরফে অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। যে কৃষকের জমিতে এই ঘটনা ঘটেছে তিনি আবার তৃণমূলের বুথ কমিটির সদস্য। নাম অশোক বাগ। তিনি জানিয়েছেন, ‘রাজনৈতিক হিংসা থেকেই আমার জমিতে ঘাসমারা বিষ দেওয়া হয়েছে। আমার ৩ কাঠা জমির বীজতলা সবটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। রবিবার বিকেলে বিষয়টি নজরে আসে। এলাকার বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। থানায় অভিযোগ করেছি। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছি।’
আরও পড়ুন ভোটের টাকা পাচ্ছেন না বিজেপির প্রার্থীরা, ক্ষোভ তুঙ্গে
যদিও বায়ুগ্ৰামের ২৩৫ নম্বর বুথের বিজেপির জয়ী প্রার্থী শোভা পোড়েলের দাবি, ‘২৩৫ নম্বর বুথে বিজেপি জিতেছে সেটা স্থানীয় তৃণমূল নেতারা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। তার জন্য চক্রান্ত করে বিজেপির বদনাম করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। অন্যের ক্ষতি করার সংস্কৃতিতে বিজেপি বিশ্বাস করে না। গ্ৰামে আমরা আলাদা রাজনীতি করলেও একে অপরের পরিচিত। চাষবাস করে আমাদের সংসার চলে। অন্যের ক্ষতি করার রাজনীতি আমরা করি না। এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপি কোনওভাবেই জড়িত নয়। বিষয়টি তৃণমূলের নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কি না খতিয়ে দেখা উচিত।’ ঘটনার জেরে গোঘাট-১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বিজয় রায় আবার জানিয়েছেন, ‘তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির সামনা সামনি রাজনৈতিক লড়াই করার শক্তি নেই। তাই পিছন থেকে ক্ষতি করে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে বিজেপি। শুধু কুমুড়শা পঞ্চায়েত নয়, গোঘাট পঞ্চায়েত এলাকাতেও আমাদের আরও এক কর্মীর বীজতলায় ঘাস মারা বিষ দেওয়া হয়েছে। একটা দু’টো আসন জিতে এলাকায় ওরা অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। যে সব তৃণমূল কর্মী চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত তাদের আমরা সতর্ক থাকতে বলছি। পুলিস প্রশাসনকেও বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের এই ধরনের অপরাধমূলক কাজের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’