নিজস্ব প্রতিনিধি: অক্ষয় তৃতীয়ার সকালে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বোমা ফাটালেন রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা(Sashi Panja)। তিনি জানিয়েছেন, জাতীয় মহিলা কমিশনের(Nation Women Commission) চেয়ারপার্সন রেখা শর্মার(Rekha Sharma) বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাতে চলেছে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। নেপথ্যা সন্দেশখালির(Sandeshkhali) বুকে মহিলাদের দিয়ে ভুয়ো ধর্ষণ ও গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করানোর ঘটনা। কেননা এখন নতুন করে অভিযোগ উঠেছে, সন্দেশখালির যে সব মহিলারা পুলিশের কাছে শাহজাহান শেখ ও তাঁর দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তাঁদের বিজেপির পার্টি অফিসে ডেকে রেখা শর্মার সামনে সাদা কাগজে সই করানো হয়েছিল, পরে তা ধর্ষণের মামলা যুক্ত করা হয়। এই ঘটনাকে হাতিয়ার করেই রেখা শর্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে চলেছে তৃণমূল। রেখা শর্মার উপস্থিতিতে কী করে সাদা কাগজে সই হল? প্রশ্ন তৃণমূলের। একই সঙ্গে শশী এই প্রশ্নও তুলেছেন যে, ‘তাহলে কী রেখা শর্মাও সন্দেশখালি ষড়যন্ত্রে যুক্ত?’
এদিন শশী জানান, ‘জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মার বিরুদ্ধে কমিশনের দ্বারস্থ হবে তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান হবে। কারণ তিনি রাজনৈতিক সিগন্যাল পেয়েছিলেন বলে এখানে এসে বিষয়টিকে উৎসাহিত করেছিলেন। একটি কমিশনের এই পক্ষপাতিত্ব খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’ শশীর অভিযোগ, সন্দেশখালির ঘটনায় সময় রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব নিয়ে বিভিন্ন কমিশনগুলিকে আসতে দেখা গিয়েছে। গতকালও এক মহিলা জানিয়েছেন যে, দিল্লি থেকে মহিলা কমিশন এসে জোর করে অভিযোগ লিখিয়েছে। এক্ষেত্রে শশী পাঁজার দাবি, সন্দেশখালির মহিলাদের দিয়ে নির্যাতন হয়েছে বলে জোর করে লেখান হয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তথা ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানান শশী পাঁজা। আর এবার তৃণমূল জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে প্রথমে সন্দেশখালি সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। সেই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরেই বিজেপিকে নিশানা করে ময়দানে নেমে পড়ে তৃণমূল। এরই মাঝে মিতা মাইতি নামে এক মহিলা দাবি করেন, ধর্ষণের অভিযোগ সম্পূর্ণই মিথ্যা। ওই মহিলা আরও জানান, রেখা শর্মা যেদিন এসেছিলেন, সেদিন কার কার অভিযোগ রয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়। সেই সময় তাঁদের দিয়ে একটা সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়। সই করার ৪ থেকে ৫ দিন পর থানা থেকে তাঁরা একটি নোটিশ পান যে তাঁরা শেখ শাহজাহানের সাগরেদদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন। যদিও সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলেই দাবি ওই মিতার। যদিও এটা ঘটনা যে, সন্দেশখালিতে শাহজাহান আর তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে জমি দখল, মহিলাদের ওপর নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠার পরেই সেখানকার পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে আসেন মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা। সেই সময় রেখা বলেছিলেন, ‘দিনের পর দিন মহিলাদের উপর নির্যাতন হয়েছে। ১৮টা অভিযোগ পেয়েছি। দু’জন ধর্ষণের অভিযোগ জানিয়েছে। পুলিশের উপর মানুষের আস্থা নেই। আমাকে ধরে গ্রামের মহিলারা কাঁদছেন। রাষ্ট্রপতি শাসন ছাড়া কোনও উপায় নেই।’ এখন তাঁর বিরুদ্ধেই নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাতে চলেছে তৃণমূল।