নিজস্ব প্রতিনিধি: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore) নোবেল প্রাপ্তি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন বিধায়ক। ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারীর আলপটকা মন্তব্যের পরেই উঠেছিল তীব্র সমালোচনার ঝড়। পরে অবশ্য ক্ষমা চেয়েছিলেন বিধায়ক। বলেছিলেন এই মন্তব্য করা তাঁর ঠিক হয়নি। তিনি বলেছিলেন, ‘রবীন্দ্রনাথকে নোবেল দিয়ে অপমান করা হয়েছিল। তাই বাংলার ছেলেরা নোবেল (Noble) চুরি করেছে। আর সিবিআই তার কিনারা করতে পারছে না। রাজ্যের পুলিশই নোবেল উদ্ধার করতে পারবে।’ রবীন্দ্রনাথ ঠকুরকে নোবেল দিয়ে অপমান করা হয়েছিল আর তা চুরি করেছে বাংলার ছেলেরা, বিধায়কের এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি সাফ বলেন, দল এই মন্তব্য কোনও ভাবেই সমর্থন করে না।
২৫ বৈশাখ, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন। কবিগুরুর জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আর এই দিনেই বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন ভাতারের বিধায়ক। পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের ব্লক কার্যালয়ে আয়োজন করা হয়েছিল রবীন্দ্রজয়ন্তীর। কবিগুরুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের পাশাপাশি ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বক্তৃতাও। সেখানেই তিনি বলেছিলেন,‘রবীন্দ্রনাথকে নোবেল দিয়ে অপমান করা হয়েছিল। তাই বাংলার ছেলেরা নোবেল চুরি করেছে। আর সিবিআই তার কিনারা করতে পারছে না। রাজ্যের পুলিশই নোবেল উদ্ধার করতে পারবে’। আর এরপরেই শুরু হয় বিতর্ক। ওঠে সমালোচনার ঝড়। তারপরেই তৃণমূল শিবির থেকে তাঁকে তিরস্কার করা হয়। দফায় দফায় চলতে থাকে ভর্ৎসনা। ক্ষমা চেয়ে নেন বিধায়ক। বলেন, ‘মাফ চাইছি। এরকম বলা ঠিক হয়নি’। তারপরে পরিস্থিতি সামলাতে বলেন, নেহাত মজা করেই এই কথা বলেছিলেন তিনি। অন্য কোনও কারণ নেই। বিধায়ক বলেন, ‘আমরা চাই নোবেল উদ্ধার হোক, সিবিআইকে নিয়ে মজা করে এই কথা বলেছি’। বিধায়কের এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। বলেন, দল এই মন্তব্য সমর্থন করে না কোনওভাবেই।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ সকালে বোঝা যায় বিশ্বভারতীর সংগ্রহশালা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল সহ ৫০ টি মূল্যবাণ জিনিস চুরি হয়েছে। এর ৬ দিন পর তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। ২০০৪ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তদন্ত করেও মেলেনি নোবেল। ফের ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সিবিআই আদালতে আবেদন করে জানায় তারা নতুন সূত্র পেয়েছে। এবার তদন্তে নোবেল পাওয়া যাবে। ২০০৯ সালের অগাস্টে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আদালতে আবেদন করে, তদন্ত বন্ধ করতে অনুমতি দেওয়ার জন্য। সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তদন্ত এগোচ্ছে না। ২০১০ সালের ৫ আগস্ট আদালত অনুমতি দেয় তদন্ত বন্ধ করার। আর উদ্ধার হয়নি নোবেলের রেপ্লিকা।
উল্লেখ্য, রাজ্য সম্প্রতি চাইছে আবারও হোক রবি ঠাকুরের নোবেল উদ্ধার। তৃণমূল বারবার সরব হচ্ছে সিবিআই ব্যর্থতার প্রতিবাদ জানিয়ে। দাবি, সিবিআই নোবেল উদ্ধারের তদন্ত ছেড়ে দিলে রাজ্যকে তদন্তের ভার দেওয়া হোক।