নিজস্ব প্রতিনিধি: পরীক্ষা চলছে নাকি পরীক্ষায় নাম করে প্রহসন চলছে? এই প্রশ্নটাই উঠে গেল বাংলার এক কলেজের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার জেরে। যে কলেজের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সেটির অবস্থান উত্তরবঙ্গের(North Bengal) জলপাইগুড়ি(Jalpaiguri) জেলায়। কলেজের নাম আনন্দ চন্দ্র কলেজ অব কমার্স(Ananda Chandra College of Commerce)। সেখানে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ের একটি ভিডিও ভাইরাল(Viral Video) হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে কলেজের অন্দরে ক্লাসরুমে বসে কেউ পরীক্ষা দিচ্ছে না। বরঞ্চ ক্লাসরুমের বাইরে, কলেজ চত্বরের বাইরে যত্রতত্র হাত-পা ছড়িয়ে বসে পড়ুয়ারা অনলাইনে পরীক্ষা(Online Exam) দিচ্ছে। বই, খাতা খুলে দেদার টুকে চলেছে তারা। কেউ কেউ তো আবার খাতায় নিজের নোটস দেখে, কেউ আবার মোবাইল দেখে অবলীলায় পরীক্ষা দিয়ে চলেছে। আর স্বাভাবিক ভাবেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এহেন ঘটনা দেখে নেটিজেনরা প্রশ্ন তুলছেন, ‘এটা পরীক্ষা হচ্ছে নাকি গণটোকাটুকি।’
জানা গিয়েছে, চলতি সপ্তাহে শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজগুলিতে পরীক্ষা। সেই পরীক্ষা আবার হচ্ছে অনলাইনে। মূলত দ্বিতীয় ও চতুর্থ সেমিস্টারের পরীক্ষা চলছে। আর সেই পরীক্ষাতেই বই, খাতা, মোবাইল, খুলে তা দেখে হাতে লিখে উত্তরপত্র লিখছে পড়ুয়ারা। সেই দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে বেশি সময় লাগেনি। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে জলপাইগুড়ি আনন্দ চন্দ্র কলেজ অফ কমার্সের বিপরীতে থাকা জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের বারান্দায় বসে পরীক্ষা দিচ্ছে দুই ছাত্রী। আর এই ভিডিও দেখে হতবাক নেটিজেনরা। তাঁদের প্রশ্ন, ‘এরাই কী দেশের ভবিষ্যৎ? এরা কলেজ থেকে বেড়িয়ে যদি কোথাও চাকরিও পায় সেখানে কী করবে? কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই বা কীভাবে এই ব্যবস্থা মেনে নিচ্ছে? এটাই কী রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা? অনলাইন পরীক্ষার নাম করে এরকমভাবে বই – খাতা খুলে পরীক্ষা দেওয়ার মানে কী ? এরকম পরীক্ষা দেওয়া তো অর্থহীন।’
যদিও এই গণটোকাটুকিতে বিন্দুমাত্র অন্যায় দেখছেন না খোদ পড়ুয়ারা। তাঁদের সাফ জবাব, ‘আমাদের ক্লাসের সিলেবাস কমপ্লিট হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে অনলাইনে দেখে দেখে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই কোনও ছাত্র -ছাত্রীকে কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে অনলাইনে পরীক্ষা দিতে দেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে কলেজের বিপরীতে প্রাথমিক সংসদ দফতরের বারান্দায় বই খাতা খুলেই পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। আমরা সংসদের বারান্দায় বসেই অনলাইনে পরীক্ষা দিতে বাধ্য হয়েছি।’ কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছন। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি জেলা প্রশাসনের কেউ।