নিজস্ব প্রতিনিধি: লক্ষ্মীবার বিকালে ঢাকঢোল পিটিয়ে পদ্মে যোগ দেওয়ার কথা ছি, ভাটপাড়ার বাহুবলীর। কার্যত যোগ না দিয়ে তাকে পদ্মে ‘ওয়াপসি’ বলাই চলে। কিন্তু সেটাই ঘটল রাতের আঁধারে, লোকচক্ষুর অন্তরালে। কেন? থাকছে প্রশ্ন। একই সঙ্গে সামনে এসেছে, তাঁর বিজেপি ‘ওয়াপসি’তেই একদম নাখুশ বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার(Sukanta Majumdar)। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, তিনি যদি বিজেপির টিকিটে ফের ব্যারাকপুর থেকেই প্রার্থী হন, তাহলেও সুকান্ত সেখানে প্রচারে যাবেন কিনা সন্দেহ, আদি বিজেপি কর্মী থেকে নেতাদের সাহায্য ও সমর্থন পাবেন কিনা সন্দেহ। নজরে ব্যারাকপুরের সাংসদ(MP Barracpur) অর্জুন সিং(Arjun Singh)। বুধবার রাতেই তিনি ফিরে গিয়েছেন বিজেপিতে। সম্ভবত বিজেপি(BJP) তাঁকেই ব্যারাকপুর থেকে ফের প্রার্থী করতে চলেছে।
বঙ্গ বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, অর্জুনের এই বিজেপিতে ফিরে আসা একদম পছন্দ নয় দলের আদি নেতাকর্মীদের। তাঁদের সেই মনোভাবের আঁচ পেয়ে সুকান্ত নাকি রীতিমত জেদ ধরেছিলেন অর্জুনকে বিজেপিতে না ঢুকতে দেওয়া নিয়ে। কিন্তু তাঁর সেই জেদের দাম দেয়নি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। একই সঙ্গে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও(Suvendu Adhikari) উঠেপড়ে লেগেছিলেন অর্জুনকে পদ্মে ফের পা রাখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। মূলত তাঁর চাপেই খারিজ হয়ে যায় সুকান্তের দাবি। অন্তত সূত্রের তেমনটাই দাবি। আর এই কারণে বঙ্গ বিজেপিতে শুভেন্দু-সুকান্ত দ্বন্দ্বের নয়া সংযোজন অর্জুন সিং। জানা গিয়েছে, বুধবার মাঝরাতে বিজেপির কেন্দ্র ও রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে ভারচুয়ালি দীর্ঘ বৈঠক হয় অর্জুনের। তবে অর্জুনকে নিয়ে দলের অন্দরেই চোরা অস্বস্তি থেকেই যাচ্ছে।
ঘটনা হচ্ছে, উনিশের ভোটের আগে এভাবেই ফুলবদলে অর্জুন বিজেপিতে গিয়ে ব্যারাকপুর থেকে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন। জিতেওছিলেন। সেই হিসাবে তিনি এখনও বিজেপির সাংসদ। এবারেও তৃণমূল থেকেই বিজেপিতে গেলেন তিনি। কিন্তু একুশের ভোটে তিনি বিজেপিকে কোনও লাভের মুখ দেখাতে পারেননি ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে। ভাটপাড়া বাদ দিয়ে বাকি ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রেই জয়ী হয় তৃণমূল। মুখ থুবড়ে পড়ে বিজেপি। অর্জুন তখনও পদেই ছিলেন। তারপরে অর্জুন ফিরেছিলেন তৃণমূলে। কিন্তু ২৪’র ভোটে(General Election 2024) টিকিট না পেয়ে ফের তিনি পদ্মেই পা রাখলেন। তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেওয়াই যায় যে, অর্জুনই ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রার্থী, তাহলেও প্রশ্ন থাকছে, এবারেও কী জিতবেন তিনি? কেননা পরিস্থিতি উনিশের মতো আর তাঁর অনুকূলে নেই।