নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশের মধ্যে যে সব রাজ্যে জনঘনত্ব সব থেকে বেশি সেই রাজ্যের মধ্যে প্রথমদিকেই রয়েছে বাংলা(Bengal)। একই সঙ্গে নানা সমীক্ষার তথ্য বলছে গোটা দেশের মধ্যে বাংলাতেই এখন জনসংখ্যার হার তথা বাসিন্দাদের সংখ্যা সব থেকে বেশি হারে বেড়ে চলেছে। হু হু করে সেই জন্যই বাড়ছে কলকাতা(Kolkata) সহ রাজ্যের শহুরে ও শহর লাগোয়া এলাকায় বাড়িঘরের চাহিদা। আর চাহিদা বাড়ছে বলেই দেখা যাচ্ছে শহর লাগোয়া গ্রামীণ এলাকাগুলিতে যথেচ্ছ হারে বহুতল উঠতে শুরু করে দিচ্ছে যা সেই এলাকার চরিত্রকেই বদলে দিচ্ছে। এবার এই ধরনের ঘটনা রুখতেই কোমর বাঁধছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার। রাজ্য বিধানসভায় আনা হচ্ছে Panchayat Building Rules বিল। রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামীণ উন্নয়ন দফতর এই বিল নিয়ে আসছে।
আরও পড়ুন ডাকাতির ঘটনায় ২ কনস্টেবলের ৯ বছরের জেল, লকআপে ইন্সপেক্টরও
গত এক দশক ধরেই দেখা যাচ্ছে বৃহত্তর কলকাতা লাগোয়া গ্রামীণ এলাকাগুলিতে এবং রাজ্যের সব বড় বড় শহর ও শিল্পাঞ্চল লাগোয়া গ্রাম এলাকায় হু হু করে মাথা তুলছে বহুতল আবাসন। কোথাও কোথাও সাধারন মানুষও জমি কিনে বাড়ি করছেন। বড় শহর লাগোয়া এলাকা বা শহরতলি অঞ্চলের পঞ্চায়েতে এই ঘটনা বেশি চোখে পড়ছে। বাড়ি বা আবাসন তৈরি হওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারের মাথা ব্যাথা নেই। মাথা ব্যাথা এই সব বহুতল বাড়ি বা আবাসন নির্মাণের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে আইন ঠিক মতন মানা হচ্ছে না। বেশ কিছু ক্ষেত্রে নজরদারির অভাবেও আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ওই সব বহুতল আবাসন গড়ে তোলা হচ্ছে। বর্তমানে গ্রামীণ এলাকায় বাড়ি তৈরির অনুমতি দেওয়া হয় ২০০৪ সালের West Bengal Gram Panchayat Administration Rules’র Control of Building Operations চ্যাপ্টারের ওপর ভিত্তি করেই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সেই বিধির ফাঁকফোকর কাজে লাগিয়ে এবং পরিবেশের তোয়াক্কা না করে গ্রামীণ এলাকায়ও গড়ে উঠছে কংক্রিটের জঙ্গল। একাধিক পঞ্চায়েত এলাকায় একের পর এক বহুতল মাথা তুলছে। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত নয়া বিধি আরোপ করতে চাইছে নবান্ন।
আরও পড়ুন বাংলাদেশ সীমান্তে এপার বাংলায় ৮টি জেলায় হবে সীমান্ত হাট
গ্রামীণ এলাকায় যথেচ্ছ বহুতল নির্মাণে রাশ টানতে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামীণ উন্নয়ন দফতর নিয়ে আসছে নতুন নির্মাণ বিধি। নয়া বিধির খসড়া তৈরি করছেন তাঁরা। ২০০৪-এর রুলের ওপর ভিত্তি করেই তৈরি হচ্ছে নতুন Panchayat Building Rules বিল যার প্রধান উদ্দেশ্য হলো গ্রামীণ এলাকায় আইন মেনে বাড়ি তৈরি নিশ্চিত করা। এই দফতরের আধিকারিকদের দাবি, নিজস্ব একতলা বা দোতলা বাড়ির তুলনায় বহুতল তৈরির ক্ষেত্রে বেশি অনিয়ম ধরা পড়ে। নয়া বিধি লাগু হওয়ার পর বাড়বে নজরদারি। ন্যায্য ফি দিয়ে বাড়ি তৈরির অনুমোদন মিললেও সমস্ত নিয়ম মানা হচ্ছে কি না, তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। নয়া বিধিতে সাড়ে ছ’মিটার বা তার বেশি উচ্চতার বাড়ি তৈরির অনুমতি পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নতুন নিয়ম যুক্ত হচ্ছে। বাড়ি তৈরির ছাড়পত্রের আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হয় Building Plan। সাড়ে ছ’মিটারের বেশি উচ্চতার বাড়ির ক্ষেত্রে স্বীকৃত সংস্থার বিশেষজ্ঞদের যাচাই বা ‘ভেটিং’ করিয়ে তবেই Building Plan জমা দেওয়ার বিষয়টি জোরদার করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, নিকাশি, পরিবেশের ভারসাম্য সহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি ২০০৪-এর রুলে থাকলেও নয়া বিধিতে তা সুনির্দিষ্ট করে দিতে চলেছে রাজ্য। তাছাড়া, পঞ্চায়েত স্তরে দীর্ঘদিন ছাড়পত্র আটকে না রাখার বিধানও তাতে থাকছে।