নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রত্যন্ত গ্রামীণ সীমান্তবাসীরা বাণিজ্যিক আদানপ্রদানের সুযোগ নিকটবর্তী গঞ্জ অথবা শহরে সর্বদা যথাযথ ভাবে পান না। মূলত পরিবহণ ও পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণেই তা হয়ে ওঠে না। ভারত(India) ও বাংলাদেশ(Bangladesh), দুই দেশের সীমান্তবর্তী গ্রামের ক্ষেত্রেই এই সমস্যা প্রযোজ্য। আরও বলা ভাল দুই বাংলার সীমান্তবর্তী গ্রামীণ এলাকার মানুষদের ক্ষেত্রেই তা সমান ভাবে প্রযোজ্য। আর সেই জায়গা থেকেই ভারত ও বাংলাদেশের বিদেশ ও বাণিজ্য মন্ত্রকের(Ministry of Foreign Affairs and Trade) যৌথ উদ্যোগে এই সমস্যা সমাধানের জন্য সীমান্ত হাট(Simanta Haat) চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুই দেশের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে ১৬টি সাপ্তাহিক বাজার নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে শুধুমাত্র এপার বাংলাতেই(West Bengal) বসবে ৮টি সীমান্ত হাট। বাকি ৮টি ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে মেঘালয় ও ত্রিপুরার মাটিতে।
আরও পড়ুন Aadhaar Card Update নিয়ে কড়া সতর্কবার্তা UIDAI’র
জানা গিয়েছে, দুই বাংলার সীমান্তে যে সীমান্ত হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সপ্তাহে একদিন করে বসবে। সেখানে সীমান্তের দুই পারের মানুষই বৈধভাবে প্রবেশ করে কেনাকাটা করতে পারবেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতেও পারবেন। গ্রামীণ হাট যেমন হয়, তেমনভাবে হলেও এক্ষেত্রে তা চরিত্রগতভাবে হবে সরকারি নিয়ন্ত্রণে। কোন কোন সীমান্তে এই হাট তৈরি করা হবে, তা রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। তবে প্রাথমিকভাবে দুই দেশের বিদেশমন্ত্রক বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। প্রধানত সীমান্ত অঞ্চলের অর্থনীতি এবং বাণিজ্যিক লেনদেনকে বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সীমান্ত হাট বসলে স্থানীয়ভাবে তৈরি পণ্য, বস্ত্র, হস্তশিল্প তো বটেই, ফসলের ক্ষেত্রেও অনেক সুবিধা পাওয়া যাবে। কারণ গ্রামগুলির কাছেই পাওয়া যাবে একটি করে বাণিজ্যিক কেন্দ্র। সাপ্তাহিক হাটে আসবে দুই দেশের ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই। ফলে নিজেদের পণ্য বিক্রয় ও নানাবিধ প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়ের জন্য বহুদূরের শহরে যেতে হবে না।
আরও পড়ুন আইন মেনে গ্রামে বাড়ি, Panchayat Building Rules আনছে রাজ্য
এব্যাপারে নয়াদিল্লি এবং ঢাকার মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী একঝাঁক সমন্বিত অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য চুক্তি হবে। তা নিয়ে আলোচনা চলছে। আগামী বছর নির্বাচন দুই দেশেই। নরেন্দ্র মোদি এবং শেখ হাসিনা উভয়েই চাইছেন পুনর্নিবাচিত হতে। বাংলাদেশর আওয়ামি লিগ সরকার সেই লক্ষ্যে এখন থেকেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করে দেশের গ্রামীণ অর্থনীতিতে বাণিজ্য প্রভাব ফেলতে সক্রিয়। এই কারণেই এই সীমান্ত হাট অত্যন্ত কার্যকরী হবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ। ভারতও খতিয়ে দেখছে এই সম্ভাবনা। যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অনুমোদন আগে প্রয়োজন। কারণ, শংকা একটাই। অনুপ্রবেশ! প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে এপার বাংলায় উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদা, দক্ষিণ দিনাজপুর, উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলায় ১টি করে সীমান্ত হাট বসানোর কথা ভাবা হয়েছে।