এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

বিশ্বঐতিহ্যের আশায় বুক বাঁধা শুরু করলেন পটশিল্পীরা

নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতার দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর বিশ্বঐতিহ্যের স্বীকৃতি(World Heritage Tag) পেয়ে গিয়েছে। আর তা দেখে বাংলার নানাপ্রান্তে ছড়িয়ে থাকা লোকশিল্পকলার শিল্পীরাও আশায় বুক বাঁধা শুরু করে দিয়েছিলেন। সেই আশা আরও বেড়ে গেল পশ্চিম মেদিনীপুর(Paschim Midnapur) জেলার পটচিত্রদের গ্রাম নয়াতে(Naya) ইউনেস্কোর সদস্যের পরিদর্শনের ঘটনা। শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলা(Pingla) ব্লকের পটচিত্রদের গ্রাম নয়াতে এসেছিলেন ইউনেস্কোর(UNESCO) কনভেনশন ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ কমিটির সম্পাদক জন সিবেস্তিয়ান কার্টিস(John Cartis)। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া(Manas Bhnuiya) এবং জেলা শাসক আয়েশা রানি এ, অতিরিক্ত জেলা শাসক(ভূমিদপ্তর) সুমন সৌরভ মোহান্তি, জেলার ক্ষুদ্র ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতরের অধিকর্তা দেবব্রত রায় প্রমুখ। পটচিত্রদের গ্রামের পরিদর্শন শেষে ইউনেস্কোর প্রতিনিধিকে নিয়ে তাঁরা চলে যান ওই জেলারই সবং(Sabang) ব্লকের মাদুর(Mat) কাজের জন্য বিখ্যাত সারতা(Sarta) গ্রামে। নয়ার মতোই সারতা গ্রাম ঘুরে দেখার পাশাপাশি সেখানকার শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলেন টিম কার্টিস।

নয়া গ্রামে আসছেন ইউনেস্কোর প্রতিনিধিরা—এমন খবর আগে গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছিল। সৌজন্যে জেলা প্রশাসন। সেই মতো শিল্পীরা তাঁদের আঁকা পট(Patchitra) ও অন্যান্য শিল্প সামগ্রীর পসার সাজিয়ে বসেছিলেন। সেই সব আঁকা পটের মধ্যে ছিল চণ্ডিমঙ্গল থেকে ৯/১১ হামলার কথা। কার্টিস কার্যত সেই সব দেখে হতবাক হয়ে যান। পিংলার পটচিত্র যে তাঁর মনে ধরেছে তা কার্যত অকপটে স্বীকার করে নেন ইউনেস্কোর এই সদস্য। পটচিত্র নিয়ে ইউনেস্কো যে কাজ করতে আগ্রহী তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। নয়ার ‘চিত্রতরু’ ভবনে এসে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে পটচিত্র সম্বন্ধে সম্যক ধারণা নেন কার্টিস। এর পর শামিয়ানায় বসে পিংলার পটচিত্রীদের গলায় শোনেন চণ্ডীমঙ্গল থেকে বৃক্ষরোপণ নানা চিত্রকথা। নিজের মোবাইলে ক্যামেরাবন্দিও করেন সমস্ত মুহূর্ত। এর পর তিনি কথা বলেন পিংলার পটচিত্রীদের সাথে। সেখানে দোভাষীর কাজ করেন খোদ জেলাশাসক আয়েশা রানি। একের পর এক শিল্পীর বাড়িতে গিয়ে কথা বলেন তিনি। ঘুরে দেখেন বাহাদুর চিত্রকরের সংগ্রহশালা। সবশেষে পিংলায় জেলাশাসকের সঙ্গে বৃক্ষরোপণ করেন ইউনেস্কোর এই সদস্য। এর পরই তিনি রওনা দেন সবংয়ের সারতা এলাকায়।

সারতা গ্রামে ইউনেস্কোর সদস্যকে বরণ করে নেন রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। সবংয়ের মাদুর দেখে কার্টিস কার্যত হতবাক হয়ে গিয়েছেন। তাঁর বিশ্বাসই হচ্ছিল না ওই সব জিনিস হাতে বোনা হয়। মাদুরহাট ঘুরে দেখার পাশাপাশি কার্টিস শুনে নেন, কীভাবে বন্যার সময় এই গ্রাম এক বুক জলের নীচে চলে যায় এবং তারপরেও কীভাবে বছরে পর বছর ধরে এই শিল্প আজও টিকে আছে। কার্টিসের সফর প্রসঙ্গে সবংয়ের ভূমিপুত্র তথা রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানান, ‘নয়ার পটচিত্রীদের অসামান্য প্রতিভা। ইউনেস্কোর প্রতিনিধিরা এসেছিলেন। আমরা চাই এটি আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠুক। ইউনেস্কোর প্রতিনিধি নয়ার শিল্পীদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়েছেন একটি ছবি আঁকতে কতদিন সময় লেগেছে? কোথা থেকে তাঁরা এই ছবি আঁকতে শিখলেন? শিল্পীরা জানিয়েছেন, তাঁরা বংশপরম্পরা ধরে বাপ-ঠাকুরদার কাছ থেকে ওই সব আঁকা শিখেছেন। মাদুরহাট ঘুরে দেখার সময় উনি বারবার জানতে চাইছিলেন, সত্যিই এগুলি হাতে বোনা কিনা!’

এই সফর প্রসঙ্গে জেলাশাসক জানিয়েছেন, ‘জেলার দুই শিল্পগ্রাম দেখে ইউনেস্কোর সদস্য যথেষ্টই খুশি। নিজে সব ঘুরে দেখেছেন। তাঁর খুব ভাল লেগেছে গ্রামদুটি। ডেস্টিনেশন ট্যুরিজম করার জন্য তিনি বলেছেন।” পটচিত্রীদের জন্য আরও জমি দেখা হচ্ছে যাতে নয়া গ্রামে একটা স্পট তৈরি করা যায়। নয়ার শিল্পসৃষ্টি দেখে উনি এতটাই মুগ্ধ যে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। পটচিত্র দেখার পাশাপাশি শিল্পীদের সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি। জানিয়েছেন তিনি অভিভূত। নয়াতে সময় কাটাতে পেরে তিনি খুব খুশি। গ্রামটিকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন যাতে আরও বেশি পর্যটক আসেন। পটশিল্প ও মাদুরশিল্প সত্যিই যদি হেরিটেজ তকমা পায়, তা হলে বাংলার শিল্প ঐতিহ্যের মুকুটে যোগ হবে নতুন পালক। কার্টিস অবশ্য বলেছেন, এটি খুব দীর্ঘমেয়াদী  প্রক্রিয়া। অনেক কিছুর মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাঁদের। তবে এটা বলতে পারি, এই দুটি শিল্পই উত্কৃষ্ট মানের। স্বীকৃতি পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ইউনেস্কোর প্রতিনিধি দলকে কাছে পেয়ে আমরাও আপ্লুত। দু’টি শিল্পের প্রসার ঘটানোই রাজ্য সরকারের প্রধান লক্ষ্য।’  

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

শান্তিপুরে প্রবীণ ও অক্ষম ভোটারদের দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট সংগ্রহ করল কমিশন

ভিন রাজ্যের নিখোঁজ বৃদ্ধকে পরিবারের হাতে পৌঁছে দিল রানাঘাট পুলিশ

বারাসতের টাকি রোডে নার্সিংহোমে এক কিশোরীর রহস্যজনক মৃত্যু, তদন্তে পুলিশ

গঙ্গারামপুরে বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করল প্রশাসন

‘মিথ্যা অভিযোগ’, মামলা তুলে নিতে চান সন্দেশখালিতে ‘ধর্ষণের শিকার’ মহিলা

বুধবার শ্রীরামপুরে প্রচারে মুখোমুখি কল্যাণ- দীপ্সিতা, উঠলো স্লোগান, গাইলেন রবীন্দ্র সংগীত

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর