নিজস্ব প্রতিনিধি: মাসটা ডিসেম্বর না আগস্ট সেটাই বোঝা ভার আকাশের চেহারা দেখলে। শনিবার থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে কলকাতা সহ আশেপাশের জেলায়। সময় যত গড়াচ্ছে বৃষ্টিও ততই বেড়ে চলেছে। স্বাভাবিক ভাবেই মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে একি শীতকাল নাকি বর্ষাকাল! কার্যত জাওয়াদ বাংলার পা রাখার আগেই দফারফা হয়ে গিয়েছে শীত আমেজের। পরিবর্তে যা আছে তা হল জোলো হাওয়ার ঠাণ্ডা আমেজ। তার জেরে অনেকেই বলছেন শীত শীত আমেজ মিলছে। কেউ কেউ তো গায়ে হাল্কা সোয়েটার বা জ্যাকেটও চাপিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু আবহাওয়াবিদদের সাফ জবাব, এ নয় শীত। সে এখনও বাংলা থেকে বহু দূরে। জাওয়াদ চলে গেলে পারা হয়তো নামবে কিছুটা, কিন্তু শীত এখনও দূর অস্ত।
বস্তুত শনিবার থেকেই কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের আকাশ মেঘলা। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। তার জেরেই নেমেছে পারা। কিন্তু তা শীতের পারা পতন নয়। আবহাওয়াবিদদের দাবি, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আকাশ মেঘলা হওয়ায় দিনের তাপমাত্রা কমেছে। কিন্তু শীত বয়ে আনা উত্তুরে বাতাসের পথে বাধা সৃষ্টি করেছে সে। উপরন্তু মেঘলা আকাশের ফলে রাতে মাটি থেকে বিকিরিত তাপ আবহমণ্ডলের বাইরে যেতে পারবে না। তাই রাতের তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই। আর কলকাতায় যতক্ষন না রাতের তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রির নীচে না নামছে ততক্ষন বাংলায় শীত হাজির হয়েছে একথা বলা যাবে না। তাই জ়ওয়াদ বিদায় নিলেই ঝুপ করে শীত হাজির হবে একথা কিন্তু ভেবে নেওয়া ঠিক হবে না। তবে এটা ঠিক জাওয়াদ চলে গেলে এই মেঘলা আবহাওয়া কাটলেই উত্তুরে ঠান্ডা শুকনো বাতাস ফের বাংলার বুকে আসা শুরু করে দেবে। তখন শীত পড়ার অনুকূল পরিস্থিতিও তৈরি হবে। তাই ১৫ ডিসেম্বরের আগে বাংলায় শীত এসে হাজির হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।
এই বিষয়ে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অভিমত, বঙ্গোপসাগরে কোনও শক্তিশালী নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে বাংলা তো বটেই, সমগ্র পূর্ব ও উত্তর ভারতের আবহাওয়ার ওপরে গভীর প্রভাব পড়ে। তাতে বায়ু চলাচলের স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট হয়। নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় বিদায় নেওয়ার পরেও সেই পুরনো ছন্দ ফিরে পেতে কয়েক দিন সময় লাগে। বাংলায় শীত আসে উত্তর-পশ্চিমের ঠান্ডা শুকনো হাওয়ায় ভর দিয়ে। বিশেষ করে উত্তর ভারতের পাহাড়ি এলাকায় তুষারপাত হলে এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ার পরে সেখান থেকে কনকনে ঠান্ডা হাওয়া পূর্ব ভারতে বয়ে আসে। কার্যত তার হাত ধরেই বাংলায় পা রাখে শীত। আগামী দিন দুয়েক পর থেকে উত্তর-পশ্চিম ভারতে রাতের দিকের তাপমাত্রায় ২-৪ ডিগ্রি পতন দেখা যেতে পারে। কিন্তু জাওয়াদের কারনে বাংলায় আগামী দিন পাঁচেক রাতের তাপমাত্রায় তেমন বড়সড় পরিবর্তন হবে না। তাই শীতও এখনই পড়ছে না বাংলার বুকে।