নিজস্ব প্রতিনিধি: ২০১১ সালে পরিবর্তনের পর থেকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সরকারকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই জেলায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকের আয়োজন করা শুরু করে দিয়েছিলেন। সেই প্রশাসনিক বৈঠক এখনও তিনি নিয়মিত করে চলেছেন। সেই সব প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্যের শীর্ষ আমলাদের পাশাপাশি রাজ্যের মন্ত্রী, জেলার বিধায়ক, সাংসদ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি জেলা স্তরের আমলা ও আধিকারিকেরাও থাকেন। সেই সব বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কার্যত সেই সব জেলায় চলা নানা সরকারি প্রকল্পের খবরাখবর নেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় নির্দেশও দেন। কিন্তু সেই সব বৈঠকে আমজনতার অংশীদারিত্ব থাকে না বলে কার কী প্রয়োজন সেটা রাজ্য সরকার জানতে পারতো না। সেই সমস্যার সমাধান করার জন্যই মুখ্যমন্ত্রী ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে মুখ্যমন্ত্রী চালু করেন দুয়ারে সরকার কর্মসূচী। সেখানেই আমজনতা তাঁদের প্রয়োজন মতো খাদ্যসাথী, স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, রূপশ্রী, কন্যাশ্রী প্রকল্পের সাহায্য চেয়ে আবেদন করেন। এবার সেই দুয়ারে সরকার কর্মসূচী থেকে চাকরি পাওয়ার দরজাও খুলে দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। যার জেরে উপকৃত হতে চলেছে রাজ্যের কয়েক লক্ষ তরুণ-তরুণী।
জানা গিয়েছে, রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা দফতরের মাধ্যমে রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীরা যাতে চাকরি পেতে পারেন তার জন্য দুয়ারে সরকার কর্মসূচীতে পদক্ষেপ করতে চলেছে নবান্ন। আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকেই রাজ্যে আবারও বসতে চলেছে দুয়ারে সরকার কর্মসূচী। সেখানেই বেকার যুবক-যুবতীরা চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবে। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে ডিরেক্টরেট অব ভোকেশনাল এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং। যুবক-যুবতীদের আবেদন খতিয়ে দেখে তাঁদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চাকরি প্রদানের ব্যবস্থা করবে রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা দফতর। এই বিষয়ে রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, ‘প্রথম পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে মাসে ১০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। পরে আরও সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। কারিগরি শিক্ষা দফতর ‘আমার কর্মদিশা’ নামে একটি অ্যাপ তৈরি করেছে। যার মাধ্যমে যুবক–যুবতীদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চাকরির উপযোগী করে তোলা হবে। ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে থাকা কর্মীরা এই অ্যাপের সাহায্যেই কর্মসংস্থানের ব্যাপারে জানাবেন। প্রতিটি জেলার দায়িত্বে থাকছেন একজন প্রজেক্ট ম্যানেজার। একাধিক বেসরকারি সংস্থাকে এই উদ্যোগে সামিল করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ দেবেন তারাই। যাঁরা প্রশিক্ষণের জন্য নাম নথিভুক্ত করবেন, তাঁদের কোনও টাকা জমা দিতে হবে না। বরং সংশ্লিষ্ট সংস্থাই তাঁদের ভাতা হিসেবে কিছু টাকা দেবে। সাফল্যের সঙ্গে প্রশিক্ষণ শেষ হলে কাজের নিশ্চয়তাও থাকছে।’