নিজস্ব প্রতিনিধি: ১০৫ বছরের পুরোনো ও ঐতিহ্যবাহী পাম্বান রেল ব্রিজ (Pamban Railway Bridge) খুব শীঘ্রই পাকাপাকিভাবে ইতিহাসের পাতায় উঠতে চলেছে। শতাব্দী প্রাচীন এই রেল ব্রিজ আজও পরিষেবা দিয়ে চলেছে সাধারণ ট্রেনযাত্রীদের জন্য। সমুদ্রের উপর এই রেল ব্রিজ দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে রামেশ্বরম দ্বীপকে যুক্ত করেছে। পুরোনো ব্রিজের পাশেই একটি অত্যাধুনিক নতুন রেল ব্রিজ তৈরি করছে রেলমন্ত্রক। যার কাজ চলছে জোরকদমে। ২.০৫ কিলোমিটার এই নতুন ব্রিজটি ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রযুক্তিগতভাবে এক আশ্চর্য নিদর্শন হতে চলেছে বলে দাবি রেলের। আগামী বছর মার্চের মধ্যেই ব্রিজটি সকলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রেলমন্ত্রক।
ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে রামেশ্বরম যাওয়ার একমাত্র রেলপথটি শতাব্দী প্রাচীন। বঙ্গোপসাগরের উত্তাল জলরাশির উপর এই ব্রিজ রেলযাত্রা পর্যটকদের কাছে একদিকে যেমন রোমহর্ষক অন্যদিকে ঝুঁকিবহুল ছিল। কারণ পুরোনো এই ব্রিজের স্টিল গার্ডারগুলি সমুদ্রের নোনা জলে নষ্ট হয়ে যায় দ্রুত। অবশেষে ভারত সরকার নতুন রেল ব্রিজ তৈরির অনুমোদন দেয়। কিন্তু ওই রেল পথে সামুদ্রিক জাহাজ চলাচল করে। তাই নতুন ব্রিজটি হবে ভার্টিক্যাল লিফট যুক্ত। যা ভারতের প্রথম ভার্টিক্যাল লিফট ব্রিজ হতে চলেছে পাম্বান রেল ব্রিজ। এর ফলে কোনও জাহাজ বা বড় স্টিমার ওই পথে এলে ব্রিজটির নির্দিষ্ট অংশ উপরের দিকে উঠে যাবে।
দুই কিলোমিটারের সামান্য বেশি নতুন পাম্বান রেল ব্রিজটি তৈরি করতে খরচ হচ্ছে ২৫০ কোটি টাকা। এরমধ্যে ৬৩ মিটার অংশ তৈরি হচ্ছে ভার্টিক্যাল লিফট প্রযুক্তির সাহায্যে। বর্তমান পুরোনো পাম্বান ব্রিজটি অবশ্য দু’ভাগে ভাগ হয়ে যায় কোনও ব্রিজ বা বড় স্টিমার এলে। নতুন ব্রিজটি সমুদ্রতল থেকে ২২ মিটার উপরে হচ্ছে। আগেরটির থেকে আরও তিন মিটার উঁচুতে। আর নতুন পাম্বান ব্রিজে আপ ও ডাউন দুটি লাইন পাতা হবে। ফলে ট্রেন ও মালগাড়ি যাতায়াতে আর সময় নষ্ট হবে না। রেলের দাবি, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই ব্রিজে ট্রেনের গতিও অনেক বেশি হবে, এবং আগামীদিনে বৈদ্যুতিন ব্যবস্থা চালু করা হবে। আগামী বছর মার্চের মধ্যেই ট্রেন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে নতুন পাম্বান রেল ব্রিজটি।