নিজস্ব প্রতিনিধি: আপনি দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু জানেন না সামনের রাস্তা খারাপ নাকি ভিড়ভাট্টা রয়েছে। ফলে যেকোনও সময় দুর্ঘটনার মুখে পড়তে পারেন আপনি। এই ধরণের ঘটনা এড়াতে দীর্ঘদিন ধরেই গবেষণা করছেন দেশের বেশ কয়েকটি আইআইটি-র গবেষকরা। ভারতের সড়ক পরিবহন মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে ঘটা দুর্ঘটনার ৭০ শতাংশই দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানোর জন্যই হয়। ফলে এই পরিস্থিতি এড়াতে এমন কোনও যন্ত্র আবিস্কারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে যাতে এই ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার আগেভাগেই সতর্ক করা যায়। সেই চেষ্টাই করছে ভারতের আইআইটিগুলির গবেষকরা।
দেশের অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (IIT)। দেশের বিভিন্নপ্রান্তে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি দেশের মধ্যে প্রথম স্মার্ট স্পিড ওয়ার্নিং সিস্টেম (smart speed warning system) তৈরি করার চেষ্টা করছেন। যেটি গাড়িতে লাগানো থাকবে এবং রাস্তার অবস্থা, পরিকাঠামো ও ভৌগলিক অবস্থানের ভিত্তিতে চালককে সতর্ক করবে যাতে অতিরিক্ত গতির জন্য দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। ২০১৯ সালের মোটর ভেহিক্যাল অ্যাক্ট অনুযায়ী ভারত সরকার এই ধরণের দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল। ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে ভারতে বিক্রি হওয়া সমস্ত গাড়িতে স্পিড কন্ট্রোল ডিভাইস লাগাতে হবে। যাতে ৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতি উঠলেই একটি বিপ শব্দের সাহায্য়ে চালককে সতর্ক করবে। আর গাড়ির গতি ১২০ কিমি প্রতি ঘণ্টা উঠলেই ক্রমাগত বিপ শব্দ হতে থাকবে।
আইআইটি গুয়াহাটি এবং বোম্বে মনে করছে এই ধরণের ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। যা যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজ করে না। বিশেষ করে পাহাড়ি রাস্তায় এই প্রযুক্তি ভালোভাবে কাজ করে না। অতএব, ওভারস্পিডিং-সংক্রান্ত দুর্ঘটনাগুলি এড়ানোর জন্য সামনের রাস্তার অবস্থা ও অবকাঠামোর উপর ভিত্তি করে একটি গতিশীল এবং নিয়ন্ত্রিত গতি একটি স্মার্ট স্পিড ওয়ার্নিং সিস্টেম তৈরি করা প্রয়োজন। ফলে স্মার্ট স্পিড ওয়ার্নিং সিস্টেম তৈরি হবে আসন্ন রাস্তার পরিকাঠামো এবং গাড়ির অবস্থানের উপর ভিত্তি করে। যা হবে অত্যাধুনিক জিপিএস নির্ভর এবং গাড়ির অবস্থান ট্র্যাক করেই চালককে সতর্ক করবে।
আইআইটি গুয়াহাটির এক গবেষকের কথায়, আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে গাড়ির গতি উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন করতে হয় রাস্তার অবস্থান, ধারালো বাঁক বা হেয়ার পিন বাঁক এলে। এই স্মার্ট স্পিড ওয়ার্নিং সিস্টেম এই বিষয়গুলি আগাম জানান দেবে। ফলে সেই বুঝে চালক গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন। আর দুর্ঘটনার সংখ্যাও কমে আসবে।