নিজস্ব প্রতিনিধি: সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় বিগত কয়েকদিন ধরেই উত্তাল প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ। অষ্টমীর রাত থেকেই বাংলাদেশের একাধিক এলাকায় ব্যাপক অশান্তি শুরু হয়। দুর্গাপুজো চলাকালীনই ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় একাধিক দুর্গা প্রতিমা। এখানেই শেষ নয়, প্রতিমার পরে একের পর এক মন্দিরের বিগ্রহ ভাঙা শুরু হয়। জানা গিয়েছে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল যেখানে সেই কুমিল্লার প্রতিমা ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় যে মূল অভিযুক্ত তাঁকে চিহ্নিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। পাশাপাশি তিনি আশ্বাস দিয়ে জানান, খুব শীঘ্রই ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হবে এবং যে বা যারা এই সাম্পদায়িক হিংসার সঙ্গে যুক্ত তাঁদের রেয়াত করবে না বাংলাদেশ সরকার।
বাংলাদেসেরর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, সোশ্যাল মিডিয়াতে ধর্মীয় উস্কানিমূলক বার্তা পোস্ট করে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। তারই ফলশ্রুতি এই সাম্প্রদায়িক হিংসা।এই প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ‘এত বছর কোনও পুজো মণ্ডপে এরকম তাণ্ডবের ঘটনা ঘটেনি। এক্ষেত্রে যা হয়েছে তা ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো হয়েছে। কুমিল্লার ঘটনাকে ঘিরে যে হিংসা ছড়িয়েছে তার জেরেই চাঁদপুরে মন্দির ভাঙচুরের চেষ্টা করেছে একদল উগ্রবাদী লোকজন।’ সেইসঙ্গে তিনি আরও জানান, ‘কমবয়সি একটি ছেলে ফেসবুকে একটি বিতর্কিত পোস্ট দেয়। সেই পোস্টকে কেন্দ্র করেই হিংসা ছড়িয়েছে। চলেছে ভাঙচুর। ইতিমধ্যেই ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।’
উল্লেখ্য, অষ্টমীর রাত থেকে হঠাৎই বাংলাদেশে জ্বলে ওঠে সাম্প্রদায়িক হিংসার আগুন। ঘটনার সূত্রপাত কুমিল্লায়। রটিয়ে দেওয়া যায়, ওই এলাকায় একটি দুর্গাপুজোর প্যান্ডেলে ইসলাম ধর্মগ্রন্থ কোরানকে অসম্মান করা হয়েছে। এরপরেই ওই প্যান্ডেলের ওপর চড়াও হন একদল উন্মত্ত জনতা। শুরু হয় মণ্ডপ ভাঙচুর। এমনকি দুর্গা প্রতিমাও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। কুমিল্লার এই উত্তেজনাই ধীরে ধীরে চাঁদপুর, নয়াখালি, রংপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কক্সবাজারের মতো একাধিক জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। সেখানেও একাধিক দুর্গা প্রতিমা ভেঙে দেওয়ার ঘটনা ঘতে। এমনকি বিভিন্ন দেবদেবীর একাধিক মন্দিরে হামলা চালানো হয়, ভেঙে দেওয়া হয় মন্দিরের বিগ্রহ। এমনকি পীরগঞ্জের একাধিক হিন্দু বাড়িতে গুন লাগিয়ে দেওয়ার মতো সাংঘাতিক ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশের এই সাম্প্রদায়িক হিংসার চরম নিন্দা করেছে আমেরিকা। বিশ্ব দরবারে শেখ হাসিনা সরকারকে একপ্রকার তুলোধোনা করা হচ্ছে। এরপরেই কার্যত নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ সরকার।