নিজস্ব প্রতিনিধি: নিত্যদিন ট্রেন দেরি করে আসে। এখন আবার তৃতীয় লাইনে কাজের ছুতো তুলে ধরে বড় সংখ্যার লোকাল ট্রেন বাতিল করে স্পেশ্যাল ট্রেন চালানো হচ্ছে। তাও আবার সংখ্যায় খুব কম। সেই সব স্পেশ্যাল ট্রেন বর্ধমান থেকেই বাদুরঝোলা হয়ে আসছে। তার জেরে মাঝপথে কেউ সেই ট্রেনে না উঠতে পারছেন না পা রাখতে পারছেন। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার জেরে সোমবার সকালে কার্যত ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙল জনতার। রেললাইনে নেমে শুরু করে দিলেন অবরোধ(Rail Blocked)। আটকে গেল দুইদিকেরই ট্রেন। কিন্তু তার থেকেও বড় কথা অবরোধে আটকে পড়া ট্রেনযাত্রীরা কেন ট্রেন থেকে নেমে এসে অবরোধে সামিল হচ্ছেন না সেই অভিযোগ তুলে ট্রেনের অন্দরে হামলা চালাল বিক্ষোভকারীরা। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই সোমবার সকালবেলাতেই কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে হুগলি(Hooghly) জেলার খন্যান(Khanyan) রেলস্টেশন। ঘটনার জেরে বেশ কিছু ট্রেনযাত্রী যেমন আহত হয়েছেন তেমনি পাথর ছুঁড়ে ভাঙা হয়েছে লোকাল ট্রেনের কাঁচও।
পূর্ব রেলের(Eastern Railway) হাওড়া-বর্ধমান ডিভিশনে(Howrah Burdhwan Division) রসুলপুর ও শক্তিগড় স্টেশনের মধ্যে তৃতীয় লাইনের কিছু কাজ হওয়ায় আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেশ কিছু লোকাল ট্রেন বাতিল করেছে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। সিংহভাগ লোকাল ট্রেন বাতিল হওয়ায় গত কয়েকদিন ধরেই বিপাকে পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। আর এর রেশ এদিন অর্থাৎ সোমবার সকাল থেকেই চোখে পড়তে শুরু করে দিয়েছে। এদিন সকাল থেকেই খন্যান স্টেশনে ভিড় বাড়তে শুরু করে দিয়েছিল। কেননা বর্ধমান থেকে হাতেগোনা যে সব স্পেশ্যাল ট্রেন ঢুকছিল তাতে পা রাখতেই পারছিলেন না কেউ। শেষে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ট্রেন আটকে অবরোধ শুরু করেন ট্রেনে উঠতে না পারা যাত্রীরা। তাঁদের দাবি রেল কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে, যতদিন না ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে ততদিন মেমারি ও পাণ্ডুয়া থেকে ৩ জোড়া ট্রেন সকালের দিকে ও বিকালের দিকে চালাতে হবে। সেই অবরোধের মাঝেই আবার বিক্ষোভকারীরা চড়াও হন আটকে পড়া ট্রেন যাত্রীদের ওপর।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, ট্রেনে আটকে থাকা যাত্রীদেরও অবরোধে সামিল হতে হবে। যদিও ট্রেনযাত্রীরা তাতে কান দেননি। আর তারপরেই ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়তে শুরু করেন। তাতেই ট্রেনে আটকে থাকা বেশ কিছু যাত্রী আহত হন। কারও পাথরের আঘাতে মাথা ফাটে তো কারও বা থেঁতলে যায় শরীরের কোনও অংশ। এর জেরে ট্রেন যাত্রী ও অবরোধকারীদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। রেল পুলিশ এসে দুইপক্ষকে কোনও রকমে থামালেও উত্তেজনা রয়েই গিয়েছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত অবরোধ বজায় আছে বলেই জানা গিয়েছে। ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন রেলের আধিকারিকেরা। তার মাঝেই বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীরা ট্রেনের মহিলা কামরায় উঠে মহিলা যাত্রীদের মারধর করার পাশাপাশি তাঁদের কয়েকজনের শ্লীলতাহানিও করেছে।