নিজস্ব প্রতিনিধি: দুইজনই স্কুল পড়ুয়া। মাত্র কয়েকমাসের আলাপ। তা থেকেই প্রেমের সম্পর্ক। কিন্তু দুইজনই অপ্রাপ্তবয়স্ক। প্রেমিক দ্বাদশ শ্রেনীর পড়ুয়া আর প্রেমিকা নবম শ্রেনীর ছাত্রী। দুইজনের বাড়িতে তাদের প্রেমের সম্পর্কের কথা কানে ওঠে। তা থেকেই অশান্তির সূত্রপাত। দুই পরিবারই প্রেমের সম্পর্কে আপত্তি জানায়। তাতে দুইজনের জেদ আরও বেড়ে যায়। নিজেরাই ঠিক করে নেয় পালিয়ে বিয়ে করবে। কিন্তু মন্দিরের পুরোহিত সেই বিয়ে দিতে চায়নি নিজে জেল হেফাজতে যাওয়ার ভয়ে। আবার রেজিস্ট্রিও করা যায়নি যথাযথ বয়সের অভাবে। তার জেরেই শেষে চরম সিদ্ধান্ত। একই গাছে কাপড় দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করল সেই নাবালক প্রেমিক-প্রেমিকা(Minor Lovers)। বৃহস্পতিবার সকালে তাদের দেহ উদ্ধার হওয়ার পর থেকেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে নদিয়া(Nadia) জেলার তেহট্ট(Tehatta) থানা এলাকায়।
জানা গিয়েছে, তেহট্টের নাতনা উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেনীর পড়ুয়া সজল মণ্ডলের সঙ্গে কয়েকমাস আগেই আলাপ হয় দেবনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী বিজয়া বিশ্বাসের। খুব দ্রুত তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই প্রেমের গাঢ়ত্ব এতই দানা বেঁধেছিল যে দুইজনে প্রাপ্তবয়স্ক না জেনেও বিয়ে করতে জেদ ধরে নেয়। কিন্তু এই প্রেমের সম্পর্কে প্রথম থেকেই আপত্তি ছিল দুই পরিবারের। তারওপর সজল ও বিজয়া বিয়ে করতে চাওয়ায় জেদ করায় দুই পরিবারই তাতে প্রবল আপত্তি তোলে। বাড়ির আপত্তিতে বিয়ে করা সম্ভব নয় বুঝে সজল ও বিজয়া বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করার পরিকল্পনা নেয়। কিন্তু পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে মন্দিরের পুরোহিত তাদের বিয়ে দিতে চায়নি। এরপরেই বুধবার দুইজনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। এরপর সারারাত আর বাড়ি ফেরেনি কেউই। অনেক খুঁজেও হদিশ মেলেনি দুইজনের।
অবশেষে বৃহস্পতিবার সকালে নদিয়া জেলারই তেহট্ট মহকুমার করিমপুর(Karimpur) থানা এলাকার মহিষবাথানে একটি আমবাগানে ঝুলন্ত অবস্থায় দু’জনের দেহ উদ্ধার হয়। একই গাছ থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলতে দেখা যায় সজল ও বিজয়াকে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। সেখানেই দু’জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। দুইজনের দেহ ময়নাতদন্তের পরে এদিনই তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।