নিজস্ব প্রতিনিধি: দুর্গা মন্দির। কিন্তু পৌরহিত্য করেন মুসলমান। প্রতিদিনই হয় পুজো। আর নবরাত্রিতে আয়োজন থাকে বিশেষ। পুরোহিতের নাম জামালুদ্দিন খান। শুধু আরাধনা করা নয়, দুর্গা মন্দিরেই থাকেন তিনি।
যোধপুরের ভোপালগড় মরু অঞ্চলে দেখা যায় ছোটখাটো পাহাড় ঘেরা বাগোরিয়া গ্রাম। এই গ্রামেই মন্দির। জামালুদ্দিন মসজিদে নামাজও পড়াতেন। এখন মসজিদের দায়িত্বে তাঁদেরই বংশধর। জামালুদ্দিন এখন পুরোপুরিভাবে থাকেন মন্দিরেই। যখন মসজিদে থাকতেন তখনও প্রতিদিন এই মন্দিরে এসে দুর্গাপুজো করে গিয়েছেন তিনি।
দীর্ঘ ৬০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বংশপরম্পরায় মুসলিম পরিবারই করে আসছেন এই মন্দিরে পৌরহিত্য। জনশ্রুতি, দীর্ঘ বছর আগে সিন্ধের বাসিন্দা ছিলেন জামলুদ্দিনের পূর্বপুরুষ। সেসময় দেখা গিয়েছিল তীব্র খরা। তখন ওই পরিবারের সকলে পাড়ি দিয়েছিলেন ভারতের উদ্দেশ্যে। হঠাৎ উটের দুটি পা ভেঙে যায়। ফলে মরুভূমিতেই আটকে পড়েন ওই পরিবারের সদস্যরা। জলখাবারের অভাবে মৃত্যুর মুখে পড়েছিলেন সকলে। সেই রাতে পরিবারের এক সদস্য দেবী দুর্গার স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। জানতে পেরেছিলেন ধাপকুঁয়ো রয়েছে এখানেরই এক জায়গায়। সেখানে গেলেই মিলবে জলের সন্ধান। স্বপ্নাদেশ ছিল, সেখানেই রয়েছে দেবীর মূর্তি। সেই বিগ্রহের যেন আরাধনা করা হয়।
তারপর থেকেই এখানেই থাকেন বংশপরম্পরায় সকলে। গড়ে তোলা হয় মন্দির। নিয়মিত পুজোর (DURGA PUJA) আয়োজন করা হয়। দেবী দুর্গার পুজো পদ্ধতি ও মন্ত্র শিখে রীতিমেনে ভক্তি সহকারে শুরু করা হয় পুজো। এই পরিবারই গড়ে তোলেন মসজিদও। সেখানে নিত্যদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়াও হয়।
স্থানীয়দের এখানের বেশিরভাগই হিন্দু। নবরাত্রির সময় রেওয়াজ নিরামিষ রান্নার। তবে পৌরহিত্য করেন মুসলিম। এখানে সাম্প্রদায়িকতা বিভিন্ন উত্তাল সময়েও থাবা বসাতে পারেনি।