নিজস্ব প্রতিনিধি,মোথাবাড়ি: মালদহর মোথাবাড়িতে ছাত্র মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি । আহত হলেন স্থানীয় থানার ওসি হারাধন দেব(OC Haran Deb)। ভাঙচুর হয় পুলিশের গাড়ি। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাসের সেল ছুঁড়তে হয় । ব্যাপক ভাংচুর হয় স্কুল চত্বর। বাঙ্গিটোলা হাইস্কুলের(Bangitola High School) শৌচাগারে ছাদ ও দেওয়াল ভেঙে ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার পর রণক্ষেত্রের চেহারা নিলো। পুরো স্কুল ভাঙচুর করলো ক্ষিপ্ত জনতা। উত্তেজিত জনতাকে বাধা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন মোথাবাড়ি থানার পুলিশ অফিসার এবং কয়েকজন পুলিশ কর্মী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চার রাউন্ড শূন্যে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তে হয় পুলিশকে।
এদিকে এই ঘটনার পর বাঙ্গিটোলা হাইস্কুলের রাজ্য সড়ক(State High Way) অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন শতাধিক গ্রামবাসীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যে পর্যন্ত এই বিক্ষোভ চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মালদা জেলা থেকে বিশাল কমব্যাকট ফোর্স ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।
অন্যদিকে এই দুর্ঘটনার পর মেডিকেল কলেজে আহত ছাত্রের ও তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন মোথাবাড়ি কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের সেচ দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন(Minister Sabina Isamin)। তিনি বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক । একটা পরিস্থিতিতে এরকম একটা দুর্ঘটনা ঘটায় স্বাভাবিক কারণে মানুষ উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল। তবে সবাইকে বিষয়টি বুঝতে হবে। কেন এমন ঘটনা ঘটলো সে ব্যাপারে জেলাশাসককে তদন্ত কমিটি গঠন করার জন্য বলেছি। তবে এলাকায় যাতে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকে সেই অনুরোধ জানানো হয়েছে। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করে কারোর কোন লাভ নেই। যেখানে গলদ রয়েছে সেই বিষয়টি তদন্ত করে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে মৃত ও আহত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাদের সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি তাদের সব রকম সহযোগিতার কথাও বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাঙ্গিটোলা হাইস্কুলের টিফিন টাইমে শৌচাগারে ছাদ ও দেওয়াল ভেঙে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয় জিসান শেখ নামে একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রের। এই ঘটনায় একাদশ শ্রেণির আরো এক ছাত্র জিসান মোমিন গুরুতর জখম হয়। এরপরই বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন গ্রামবাসীরা। ওই হাইস্কুলে চড়াও হয়ে ব্যাপক ভাঙচুর(Ransacked) চালানো হয় । মুহূর্তের মধ্যে ভেঙে তছনছ করে দেওয়া হয় স্কুলের শিক্ষক – শিক্ষিকাদের চেয়ার, টেবিল , সিলিং ফ্যানও। স্কুলের জানালা, দরজা ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয় । এই পরিস্থিতির কথা জানতে পেরে মোথাবাড়ি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু ক্ষিপ্ত জনতার ইঁট , পাথরের আঘাতে সংশ্লিষ্ট থানার ওসি(OC) সহ বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মীকে জখম হতে হয়। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়েছে বাঙীটোলা গ্রামীণ হাসপাতালে।
আর এই পরিস্থিতির মধ্যেই ক্ষিপ্ত জনতা হাইস্কুলের সামনেই রাজ্য সড়কে ধরনায় বসে পড়েন। স্কুল কর্তৃপক্ষের যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও তোলা হয়।পুলিশ সুপার(SP) প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ আধিকারিকেরা রয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।