নিজস্ব প্রতিনিধি, ওয়াশিংটন: এ দুনিয়ায় ভাই সবই হয়, সব সত্যি! সব সত্যি! সব সত্যি! ৫১ বছর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের ফোর্ট ওয়ার্থের বাড়ি থেকে অপহৃত হয়েছিল এক রত্তি মেলিসা হাইস্মিথ। পুলিশেও অভিযোগ জানিয়েছিল তার মা-বাবা। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও একরত্তি মেলিসার হদিশ পায়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তার পরে কেটে গিয়েছে পাঁচ দশক। প্রিয় সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিল মেলিসার বাবা-মা। কিন্তু আচমকাই সেই হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে ফিরে পেলেন আলতা আপান্তেনকো। নাড়ির ধনকে ফের ফিরে পেয়ে কার্যত বাকরুদ্ধ হাইস্মিথ পরিবার।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘নিউইয়র্ক পোস্ট’ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘ছোট মেলিসাকে দেখভালের জন্য কাজের লোক চেয়ে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন টেক্সাসের ফোর্ট ওয়ার্থের বাসিন্দা আলতা আপান্তেনকো। ওই বিজ্ঞাপন দেখে এক মহিলা যোগাযোগ করেন। তাঁকেই মেলিসার দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর সেই সুযোগে ১৯৭১ সালের ২৩ অগস্ট মেলিসাকে অপহরণ করে চম্পট দেন ওই মহিলা। মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পরেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন আলতা আপান্তেনকো। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তন্নতন্ন করে খোষজ পাওয়া যায়নুই মেলিসার।’
মেয়েকে হারানোর দুঃখ নিয়েই দিন গুজরান করে চলছিলেন মেলিসার বাবা-মা। দুজনেই বয়সের ভারে ন্যুব্জ। চার ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি নিয়ে ভরা সংসার। হারিয়ে যাওয়া মেয়ের কথা প্রায় ভুলতেই বসেছিলেন তাঁরা। আচমকাই নাটকীয় মোড়। মেলিসাদের পরিবারের এক আত্মীয় খবর পান ফোর্ট ওয়ার্থের কাছেই এক শহরে এমন এক জনের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে যার শরীরে শরীরে হুবহু মেলিসার মতো জন্মদাগ রয়েছে। আর মিলে যাচ্ছে জন্মদিনও। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ওই শহরে পৌঁছে ওই মহিলার ডিএনএ পরীক্ষা করান মেলিসার মা-বাবা। ডিএনএ রিপোর্ট হাতে আসার পর দেখা যায়, এই সেই মেলিসা! যাকে দীর্ঘ ৫১ বছর আগে হারিয়ে ফেলেছিলেন। নিজের বাড়িতে ফিরে এসেছেন মেলিসা। গত শনিবার ফোর্ট ওয়ার্থের একটি গির্জায় বাবা-মা এবং চার ভাইবোনকে প্রার্থনা শেষে আনন্দে মেতে উঠেছিলেন। মেলিসার বোন শ্যারন হাইস্মিথ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এত বছর ওকে কাছে পাইনি। বাকি দিনগুলি আমরা আনন্দেই কাটাতে চাই।’