নিজস্ব প্রতিনিধি: আরও এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ করতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) নেতৃত্বাধীন মা-মাটি-মানুষের সরকার। রাজ্য সরকার(West Bengal State Government) সিদ্ধান্ত নিয়েছে ১৯৪৮ সালের Land Development and Planning বা LDP Act’র আওতায় অধিগৃহীত জমিতে বসবাসকারীদের মালিকানা সত্ত্ব(Ownership) দেওয়া হবে। ১৯৫০ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এই LDP আইনের বলে জমি অধিগ্রহণ করেছিল তৎকালীন রাজ্য সরকার। কার্যত সেই সময় থেকেই ওই সমস্ত জমিতে বসবাস শুরু করেন বহু গৃহহীন মানুষ, মূলত যারা দেশ ভাগের শিকার হয়ে ছিন্নমূল অবস্থায় এদেশে এসেছিলেন। বৈষ্ণবঘাটা, সোদপুর সহ রাজ্যের প্রায় ৮ জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে এমন বেশ কিছু জমি। সেখানে বসবাস করেন প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার পরিবার। কিন্তু এতদিন এই বাসিন্দাদের কাছে জমির মালিকানা স্বত্ব ছিল না। এর ফলে আটকে যেত জমি সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ। সেই সমস্যা থেকে রেহাই দিতে এবার বাসস্থানের জমির মালিকানা স্বত্ব তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য। যদিও অনেকেই মনে করছেন কেন্দ্রের বিজেপি(BJP) সরকার থেকে থেকেই যেভাবে NRC ও CAA নিয়ে নড়েচড়ে বসছে তা থেকে আমজনতা স্বস্তি দিয়েই এই মক্ষোব অস্ত্রটি বেছে নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন বঙ্গে গণধর্ষণকাণ্ডে বিপাকে বিজয়বর্গীয়, ধাক্কা দিল সুপ্রিমকোর্ট
রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকদের দাবি, LDP আইনের আওতায় অধিগৃহীত জমিতে বসবাসকারী মানুষজন মাঝেমধ্যেই নবান্নে এসে জমির মালিকানা স্বত্ত্বের আবেদন করতেন। রাজ্যের ইচ্ছা থাকলেও নিয়মের গেরোয় আটকে যেত তাঁদের আর্জি। ২০২১ সালে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরেই এক্ষেত্রে শিথিল মনোভাব নিয়ে নীতি বদলের সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। তার জেরেই এসব এলাকার বাসিন্দাদের হাতে জমির মালিকানা সত্ত্ব তুলে দিতে সমস্ত বাধা সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। নয়া নিয়মে সম্মতি দেয় রাজ্যের মন্ত্রিসভাও। তারপরও বিভিন্ন জটিলতার কারণে নয়া নিয়ম চালু করা সম্ভব হচ্ছিল না। সম্প্রতি বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে সেই জটিলতাও কাটিয়ে ফেলা হয়েছে। খুব শীঘ্রই ওই সব জমির বাসিন্দাদের হাতে মালিকানা সত্ত্ব প্রদানের কাজ শুরু করে দেওয়া হবে বলেও তাঁরা জানিয়েছেন। তবে রাজনৈতিক মহলে মনে করা হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর এহেন পদক্ষেপে সব থেকে বড় ধাক্কা খাবে বিজেপি। NRC ও CAA-কে হাতিয়ার করে যেভাবে বাংলায় থাবা বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল বিজেপি, কার্যত সেই আশায় জল ঢেলে দিলেন মমতা।