নিজস্ব প্রতিনিধি: অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে বার বার গর্জে উঠেছে তাঁর কলম। সমসাময়িক ঘটনা নিয়েও বার বার নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন কবিতায়। এবার করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় নিহত যাত্রীদের হতভাগ্য পরিজনদের যন্ত্রণা ফুটিয়ে তুলেছেন ‘ট্রেন দুর্ঘটনা’ নামাঙ্কিত কবিতার প্রতি ছত্রে।
গত শুক্রবার ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল চেন্নাইগামী আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৮৮ জন। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন বাংলার জনদরদী মুখ্যমন্ত্রী। আহত যাত্রীদের রাজ্যে ফিরিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে উপযুক্ত চিকিৎসার বন্দোবস্থ করেছেন। গত সোমবার ফের ভুবনেশ্বর ও কটকে ছুটে গিয়েছিলেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত যাত্রীদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন। মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এসএসকেএম হাসপাতাল ছুটে গিয়েছিলেন। স্বজন হারানো অসহায় পরিবারের সদস্যদের যন্ত্রণা শুনেছেন। আর সেই অভিব্যক্তিই বর্ণনা করেছেন নিজের কলমে। পাঠকদের জন্য নিচে তুলে ধরা হলো মুখ্যমন্ত্রীর লেখা কবিতাটি-
ট্রেন দুর্ঘটনা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
এক অজানা দীর্ঘশ্বাস
ব্যথা বেদনায় শোকাতুর নাভিশ্বাস।
এখনো ভাসছে ঘ্রাণে দুর্গন্ধ
লাশকাটা ঘরে ওরা ঘুমোচ্ছে
একেবারে শেষঘুম।
আর কথা বলবে না
আর তাকাবে না
আর কোনও যন্ত্রণা নয়-
হাত কাটা, পা কাটা,
দেহ কাটা, পুড়ে গেছে একেবারে শরীরগুলো।
মাত্র ৫০ দিনের নব্য শিশু
ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে
মায়ের থানে, সাদা কাপড়ে।
কারো বা গলায়
শেষ কর্মের পরিহিত একটি থান,
আঁখির জল সব শুকিয়ে গেছে
অনেক হাহাকারে হৃদয়ে দুর্ভিক্ষ
চোখের সামনে জ্বলছে চিতা
মুহুর্তে উধাও জীবন্ত শরীর।
কাঁদবার জন্য পড়ে রইলো
স্বজন-হারানো আকাশ-বাতাস,
সমুদ্র-পাহাড়, পরিবার-
আমরা একটু ভাবলাম কি?