নিজস্ব প্রতিনিধি: কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে রবিবার রাজ্য জুড়ে ব্লক ব্লকে চলছে তৃণমূলের প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে। প্রতিটি ব্লকে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করছে তৃণমূল(TMC)। জায়গায় জায়গায় দুপুর থেকে অবস্থান বিক্ষোভে দেখা গিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। আবাস এবং ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগে মোদী সরকারকে(Modi Government) নিশানা করেছে তৃণমূল। সঙ্গে উঠে এসেছে মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থানের প্রসঙ্গও। এবার সেই ধর্না মঞ্চেই হাজির হলেন বিজেপি বিধায়ক(BJP MLA)। শুধু তাই নয়, তিনি মেনে নিলেন কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বাংলার জনতা আর এই সমস্যার সমাধানে তিনি অবিলম্বে চান কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যেকার আলোচনা। আর এই ঘটনার জেরেই এখন চরম অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে বঙ্গ বিজেপি(Bengal BJP) নেতৃত্ব। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরবঙ্গের(North Bengal) দক্ষিণ দিনাজপুর(Dakshin Dinajpur) জেলার গঙ্গারামপুরে(Gangarampur)। যে জেলা আবার খোদ বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের(Sukanta Majumdar) নিজ জেলা।
আরও পড়ুন শাড়ির আঁচলেও হাজির বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা
ঠিক কী হয়েছে? জানা গিয়েছে, এদিন দলের কর্মসূচী পালন করতে গঙ্গারামপুরের ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব বাতাস্কুড়ি মোড়ে স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায়ের(Satyendranath Roy) বাড়ির ১৫০ মিটার দূরে মঞ্চে বেঁধে বিক্ষোভ কর্মসূচী চলছিল। সেখানেই হঠাৎ হাজির হন বিজেপি বিধায়ক। সেখানেই তিনি বলেন, ‘সকল রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে নিজ নিজ কর্মসূচী পালন করার। আপনারা আপনাদের কর্মসূচী পালন করুন, তা নিয়ে আমার কোনও আপত্তি নেই। আমি শুনেছি টাকাপয়সার কিছু হিসাবে গরমিল থাকার জন্য কেন্দ্র সরকার টাকা আটকে দিয়েছে। আমরা চাই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার এই নিয়ে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করুক। আমি থাকছি আপনাদের সঙ্গে। আমার সমর্থন থাকছে। গরীব মানুষের নিত্যদিনের টাকা যত তাড়াতাড়ি তাঁদের হাতে চলে আসে ততই ভাল। ১০০ দিনের টাকা, আবাস যোজনার টাকা, আটকে থাকায় গরীব মানুষদের অসুবিধা হচ্ছে।’ আর বিজেপি বিধায়কের এহেন অবস্থান ও বক্তব্যে এখন চরম অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে বাংলার পদ্মশিবির।
আরও পড়ুন মোদির হাত ধরে Light and Sound উলুবেড়িয়ার ঘাটে
ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, এখন বিজেপির নেতা থেকে বিধায়কেরাও বুঝতে পারছেন, বঙ্গ বিজেপির কতিপয় কিছু নেতার পরামর্শে দিল্লির সরকার কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা কার্যত ব্যুমেরাং হচ্ছে বিজেপির কাছেই। গ্রামের মানুষ যে বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সেটা সদস্য সদ্য হয়ে যাওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলই বলে দিচ্ছে। যে রাজবংশী, মতুয়া, আদিবাসী, পাহাড়, বামপন্থী ভোটে ভর দিয়ে বাংলার রাজনীতিতে উনিশ ও একুশের ভোটে সাফল্যের মুখ দেখেছিল নরেন্দ্র মোদির দল সেই সব ভোট ব্যাঙ্ক এখন বিজেপির হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। যা পরিস্থিতি তাতে ২৪’র ভোটে বাংলা থেকে বিজেপি ১টাও লোকসভা কেন্দ্রে জয়ের মুখ দেখবে কিনা সন্দেহ। আর তাই জনরোষ ও বিপর্যয়ের আঁচ পেয়েই এবার বিজেপির নেতা থেকে বিধায়কেরা তৃণমূলের সুরেই সুর মেলাতে শুরু করে দিয়েছেন। এরা যদি আগামী দিনে তৃণমূলে চলেও আসেন তাহলেও অবাক হওয়ার মতো কিছু থাকবে না।