নিজস্ব প্রতিনিধি: ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর, ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচ্য অযোধ্যার রাম মন্দির-বাবরি মসজিদ মামলার ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ। সেসময় ভারতের প্রধান বিচারপতি ছিলেন রঞ্জন গগৈ, তিনি বর্তমানে রাজ্যসভার মনোনীত সাংসদ। তাঁর কর্মজীবনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি আত্মজীবনী লিখেছেন, যার নাম জাস্টিস ফর দি জাজ (Justice for the Judge: An Autobiography)। সেই বইয়ের বিভিন্ন পাতায় উঠে এল বিভিন্ন না জানা ঘটনার কোলাজ।
যেমন ২০১৮ সালের চার সিনিয়র বিচারপতির সাংবাদিক বৈঠক বা তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম দ্বারা তাঁর মেয়াদকালে নেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়। কিন্তু সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনাটির বর্ননা হল রামজন্মভূমি নিয়ে রাম মন্দির-বাবরি মসজিদ নিয়ে ঐতিহাসিক রায়ের পর তিনি সাংবিধানিক বেঞ্চের বিচারপতিদের নিয়ে তাজ মানসিং হোটেলে ডিনার করতে গিয়েছিলেন। এবং বিচারপতিদের পছন্দ মতো ওয়াইনের অর্ডার করেছিলেন।
প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ লিখেছেন, ‘সেদিন অযোধ্যা মামলার রায় দানের পর সুপ্রিম কোর্টের সচিব আমাদের এক নম্বর কোর্টের বাইরে অশোক চক্রের নীচে ফটোশেসনের আয়োজন করেন। এরপর সন্ধ্যেবেলা আমি সমস্ত বিচারপতিদের (যাঁরা অযোধ্যা মামলায় দায়িত্বে ছিলেন) নিয়ে হোটেল তাজ মানসিংহ-তে যাই। এবং সেখানে আমরা চাইনিজ খাবার খেয়েছিলাম এবং সেখানে থাকা সবথেকে দামী ওয়াইন বেছে নিয়ে ভাগ করে পান করেছিলাম। এবং আমি সবচেয়ে পুরোনো বোতলটিই বেছে নিয়েছিলাম’। উল্লেখ্য, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের সদস্যরা ছিলেন বিচারপতি সরদ বোবদে, বিচারপতি ওয়াই চন্দ্রচুর, বিচারপতি অশোক ভুষণ এবং বিচারপতি এস আব্দুল নাজির।
উল্লেখ্য, অযোধ্যা মামলার ঐতিহাসিক রায়ের পরই ভারতের প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেন রঞ্জন গগৈ। এর কিছুদিনের মধ্যেই তিনি রাষ্ট্রপতি মনোনীত রাজ্যসভার সাংসদ হন। যা নিয়ে প্রবল বিতর্ক হয় দেশজুড়ে। এমনকি রাজ্যসভা অধিবেশনে যাওয়ার পরও তাঁকে বিরোধীদের টিপ্পনি হজম করতে হয়। এবার তাঁর আত্মজীবনী নিয়েও যে বিতর্কের ঝড় উঠতে চলেছে সেটা বলাই বাহুল্য।