নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে দাঁড়িয়ে দলেরই বিধায়ককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর(Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের জেরেই এবার শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আনা হল স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ। সেই অভিযোগ গ্রহণও করেছেন রাজ্য বিধানসভার(State Legislative Assembly) অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়(Biman Banerjee)। আর তার জেরে নিয়মমাফিক শুভেন্দুকে সেই মর্মে নোটিসও পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। এই স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ দায়ের করেছেন বিজেপির’ই(BJP) ৪ বেসুরো বিধায়ক। এরা হলেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী, কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়, বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ ও বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। এই চার বিধায়ক খাতায় কলমে বিজেপিতে থাকলেও তাঁরা অনেক আগেই তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। কিন্তু এখন তাঁদের অভিযোগের জেরেই কিছুটা বিপাকে পড়ে গেলেন শুভেন্দু।
বুধবার রাজ্য বিধানসভায় অধিবেশন চলাকালীনই শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন ২ বিজেপি বিধায়ক রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী ও কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়। কৃষ্ণ কল্যাণীর অভিযোগ, ওয়াকআউটের সময় শুভেন্দু তাঁকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, বিরোধিতা করার জন্য তাঁর বাড়িতে আয়কর হানা হবে। কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়ের অভিযোগ ছিল আরও মারাত্মক। তাঁর কথায়, ‘আমাকে গুলি করে মারার হুমকি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।’ দুই বিধায়কের এই অভিযোগ নিয়ে তখনই উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। তা তিনি নিজের ভাষণেই তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃষ্টিও আকর্ষণ করেন। মুখ্যমন্ত্রীই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনা উচিত বলে জানিয়ে দেন। তাঁর জেরে বিমানবাবু জানান, ‘অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর, সদস্যদের নিরাপত্তার পাশাপাশি ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হল বৃহস্পতিবার সকালে। এদিনই চার বিধায়ক বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের নোটিস দেন বিধানসভার অধ্যক্ষকে। চার বিধায়কই ওই নোটিসে সই করেছেন। একই সঙ্গে গতকাল রাত থেকেই ওই চার বিধায়কের নিরাপত্তা জোরদার করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। স্পিকার তাঁদের পাঠানো নোটিস গ্রহণও করেছেন। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় সেটা জানিয়েও দেন স্পিকার। তিনি বলেন, বিধানসভার প্রিভিলেজ কমিটি শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ওঠা সবকটি অভিযোগ খতিয়ে দেখবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বড় শাস্তি পেতে পারেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর পদ নিয়েই টানাটানি শুরু হয়ে যেতে পারে। যদিও শুভেন্দু তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, ‘আগে তো ওরা প্রমাণ করুক আমি ওই কথা বলেছি! মুখ্যমন্ত্রী কান দিয়ে দেখেন, চোখ দিয়ে শোনেন৷ ক্ষমতা থাকলে আমায় ছুঁয়ে দেখান। শুভেন্দু অধিকারীকে ছুঁয়ে দেখান।’ তবে ঘটনা হচ্ছে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে পৃথক একটি স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস এনেছেন রাজ্যের ২ মহিলা মন্ত্রী সহ তৃণমূলের মহিলা বিধায়কেরাও। কার্যত এখন জোড়া স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিসে বিপাকে পড়ে গেলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।