এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

বকটুইয়ের ঘটনায় ফিরে এল দলগাঁওয়ের স্মৃতি

নিজস্ব প্রতিনিধি: বাম জমানায় বিরোধীদের ওপর অমানুষিক অত্যাচার চালাবার অভিযোগ উঠেছে বারংবার। গণহত্যা আর গণধর্ষণ বাম জমানার ট্রাডিশন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সাঁইবাড়ি, মরিচঝাঁপি, বাণতলা, বিজন সেতু, ধানতলা, সূচপুর, ছোট আঙাড়িয়া, সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, নেতাই এরকই সব ঘটনার এক একটি নিদর্শন। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে শাসকের দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠেছিল। কিন্তু এই সব তালিকায় একমাত্র দলগাঁও(Dolgnao) ছিল ব্যতিক্রম। যেখানে আমজনতার জনরোষে আক্রান্ত হয়েছিল শাসককুল। যদিও বামজমানায় ঘটে যাওয়া সেই ঘটনার পিছনে রাজনীতি জড়িয়ে আছে সেটা কোনও কালেই স্বীকার করেননি সাদা ধুতি পাঞ্জাবি পরিহিত পক্ককেশের কমরেডরা। এমনকি তাঁরা এটাও স্বীকার করেননি যে ওই ঘটনা চূড়ান্ত অত্যাচারের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠা আমজনতার গণরোষ ছিল। অনেকটাই পরবর্তীকালে ঘটে যাওয়া লালগড়ের মতোই। ১৯ বছর পর বীরভূম জেলার রামপুরহাট থানার বকটুই(Boktui) গ্রামের ঘটনার জেরে সেই দলগাঁও কাণ্ড আবারও সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। ঘুরে বেড়াচ্ছে সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াতেও।

ঠিক কী হয়েছিল দলগাঁওয়ের বুকে? ঘটনাটি ২০০৩ সালের ৬ নভেম্বরের। একটি বাড়িতে ১৯জনকে কুপিয়ে খুন করে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। সেই সব দেহ এতটাই ভয়ঙ্কর ভাবে পুড়ে গিয়েছিল যে শনাক্ত করা তো দূর, ডিএনএ টেস্টও সক্ষম ছিল না। সেই ঘটনা ঘটেছিল এক সিটু নেতার বাড়িতে। ঘটনার জেরে ১২১ জনের নামে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা রুজু করে পুলিশ। গ্রেফতারিও হয় বিস্তর। এই ১৯ বছরে তাঁদের মধ্যে জন কুড়ি-একুশ জন অভিযুক্ত মারাও গিয়েছেন। অনেকে আবার জামিনও পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। মানুষ কার্যত দলগাঁওকে ভুলেই গিয়েছিল। বকটুই আবার তাঁকে সামনে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সেই সময়কার অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলার আলিপুরদুয়ার মহকুমার বীরপাড়া(Birpara) এলাকায় থাকা দলগাঁও চা বাগানে সিটু(CITU) নেতা তারকেশ্বর লোহারের(Tarakeshwar Lohar) বাড়িতে ঘটেছিল ওই ঘটনা। যারা মারা গিয়েছিল তাঁরা প্রত্যেকেই ছিল তারকেশ্বরের অনুগত দুষ্কৃতী তথা শাগরেদ।

কিন্তু কেন ঘটেছিল ওই ঘটনা? দলগাঁও চা বাগানের চৌকিদার ছিল তারকেশ্বর লোহার। কিন্তু সিটুর সামআন্য সদস্য থেকে ধীরে ধীরে সে হয়ে উঠেছিল দলগাঁও চা বাগানে সিটুর শেষ কথা। আর তার জেরে বাগান কর্তৃপক্ষও তাঁর সঙ্গে বিবাদের পথে হাঁটতে চাইত না। ২০০৩ সালে দলগাঁও চা বাগানে ৬টি কেরানি পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল বছরের মাঝামাঝি সময়ে। সেই সময় চা বাগানেরই স্থানীয় বেকার শিক্ষিত যুবকেরা দাবি তুলেছিল, তাঁদের মধ্যে থেকেই ৬জনকে ওই ৬টি কেরানি পদে নিয়োগ করতে হবে। সেই দাবি নিয়ে আপত্তি করেনি বাগান কর্তৃপক্ষের। কেননা বাইরের লোককে ওই পদে নিয়োগ করতে হলে তাঁর থাকাখাওয়ার ব্যবস্থাও বাগান কর্তৃপক্ষকেই করতে হতো। স্থানীয়রা ওই পদে নিয়োগ হলে সেই ব্যায়ভার চাপত না বাগান কর্তৃপক্ষের কাঁধে। কিন্তু স্থানীয়দের দাবি বাগান কর্তৃপক্ষ মেনে নিলেও বেঁকে বসেছিল সিটু নেতা তারকেশ্বর লোহার। কার্যত একসময় সে বাধ্য করে বাগান কর্তৃপক্ষকে তাঁর মনোমত ৬ জন বহিরাগতকে নিয়োগপত্র দিতে। সেই খবর সামনে আসে পুজোর মুখে। আর তা নিয়ে ছড়িয়ে পড়ে ক্ষোভ। কার্যত গোটা বাগান চলে যায় তারকেশ্বরের বিরুদ্ধে। তারকেশ্বর নিজেও বুঝতে পারছিল বাগানে তাঁর রাশ আর নেই। কিন্তু নিজের দখলদারি যাতে চলে না যায় তার জন্য ভয় দেখানোর পথে হাঁটা দিয়েছিল সে। নিজের বাড়িতেই অনুগত শাকরেদদের রেখে দেওয়ার পাশাপাশি এনে রেখেছিল কিছু দাগী দুষ্কৃতীকেও।

কোনও ভাবে ৬ নভেম্বর সকালে ছড়িয়ে পড়েছিল বাগানের বিক্ষুব্ধ জনতাকে শায়েস্তা করতে বাড়ি বাড়ি হামলা চালাতে পারে তারকেশ্বরের বাহিনী। তার জেরেই মুহুর্তের মধ্যে হাজারো জনতা তারকেশ্বরের বাড়ি ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। তাতেই কিছুটা ভয় পেয়ে তারকেশ্বর ঘরের ভিতর থেকে দেশী বন্দুক দিয়ে গিলি ছুঁড়েছিল। তার জেরে মারা যায় বাগানের ২জন শ্রমিক। এরপরেই ক্ষিপ্ত জনতা তারকেশ্বরের বাড়িতে ঢুকে সেখানে থাকা তাঁর সাগরেদ ও দুষ্কৃতীদের টেনে হিঁচড়ে বের করে তাঁদেরই মজুত করে রাখা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে খুন করে। এরপরে তারকেশ্বরের বাড়ির ভেতরে তাঁদের ঢুকিয়ে তাঁদের গায়ে পেট্রোল ছড়িয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওই ডামাডোলের মধ্যেও অবশ্য পালাতে সক্ষম হয় তারস্কেশ্বর ও তার এক সাগরেদ রবি কুজুর। যদিও পরে তাঁরা গ্রেফতার হন। এই সব ঘটনা এই উনিশ বছরে ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল। বকটুই আবার এই ঘটনাকে সামনে নিয়ে চলে এসেছে।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে রাজ্যজুড়ে সাতজনের প্রাণহানি

সোমবার সন্ধ্যায় ঝমঝমিয়ে প্রথম কাল বৈশাখীর বৃষ্টি কলকাতা শহরে

শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ, সন্দেশখালিতে মিছিল তৃণমূলের

তীব্র দাবদহে নদীয়ার এঁচোড় দেদার রপ্তানি হচ্ছে ভিন রাজ্যে

মালদা ও মুর্শিদাবাদের নির্বাচনে বুথগুলিকে ঘিরে কড়া নজরদারি কমিশনের

সেলিম কাঁটা উপড়ে ফেলে মুর্শিদাবাদ ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর