নিজস্ব প্রতিনিধি: জাল সার্টিফিকেট দিয়ে ব্যাঙ্কের চাকরি বাগিয়ে বহাল তবিয়তে মোটা মাইনে নিয়ে যাচ্ছিলেন মাসের পর মাস। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হল না। ভেবেছিলেন, জাল সার্টিফিকেট দিয়ে পাওয়া চাকরির কেচ্ছা কেউ কোনওদিন জানাতে পারবেন না। কিন্তু মিথ্যা আর কতদিন ধামাচাপা পড়ে থাকবে। তাই সত্যিটা সামনে চলে এসেছে প্রকৃতির নিয়ম মেনেই। আর তা সামনে আসতেই একধার থেকে মুখ পুড়ছে বঙ্গ বিজেপির, শুভেন্দু অধিকারীর(Suvendu Adhikari), তাঁর ঘনিষ্ঠ মেঘনাদ পালের এবং তাঁর স্ত্রী মহুয়া জানা পালের(Mahuya Jana Pal)। কেননা মহুয়ার বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে জাল সার্টিফিকেট দাখিল করে তমলুক কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচার অ্যাণ্ড রুরাল ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্কের নন্দীগ্রাম(Nandigram) শাখায় ম্যানেজার পদে চাকরি করার। অভিযোগ উঠেছে, বিজেপি(BJP) আর শুভেন্দুর মদতেই বিজেপি নেতা মেঘনাদ পাল(Meghnad Pal) ও তাঁর স্ত্রী মহুয়া এই কুকীর্তি করতে সাহস পেয়েছেন। যদিও ঘটনাটি সামনে আসার পরে মহুয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের কথা ভাবছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।
মেঘনাদ পাল বিজেপির নেতা। একই সঙ্গে তিনি একুশের বিধানসভা নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে রাজ্যের বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নির্বাচনী এজেন্ট হয়েছিলেন। এখন সেই মেঘনাদের স্ত্রী মহুয়ার বিরুদ্ধেই উঠেছে সার্টিফিকেট জাল করার অভিযোগ। জানা গিয়েছে, মহুয়া ২০০২ সাল থেকে তমলুক কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচার অ্যাণ্ড রুরাল ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্কে চাকরি করছেন। আগে তিনি গ্রুপ-ডি পদে চাকরি করলেও পরে নিজের গ্র্যাজুয়েশন সার্টিফিকেট দেখিয়ে ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার পদে উন্নিত হন। এখন তিনি ওই ব্যাঙ্কের নন্দীগ্রাম শাখার ম্যানেজারের দায়িত্বে রয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, যে গ্র্যাজুয়েশন সার্টিফিকেট দেখিয়ে মহুয়া প্রমোশন পেয়েছেন সেটি জাল। তিনি আদৌ স্নাতকই নন। সম্প্রতি এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই তোলপাড় শুরু হয়েছে। ঘটনাটি স্বীকার করে নিয়েছেন ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর তরুণ কান্তি মণ্ডল।
তরুণবাবুর দাবি, মহুয়ার সার্টিফিকেট নিয়ে অভিযোগ কানে আসার পরে তিনি তথ্য সংক্রান্ত অধিকার আইনে জানতে চান আদৌ মহুয়া স্নাতক কিনা। সেই মর্মে তিনি ওই ব্যাঙ্কের সিইও’র কাছেও আবেদনও জানান। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এরপর যে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে প্রদেয় স্নাতকের সার্টিফিকেট দাখিল করেছিলেন মহুয়া সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারস্থ হয়। তখন ওই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, মহুয়া জানা পালকে তাঁরা কোনও সার্টিফিকেট দেননি। এরপরেই বিষয়টি নিয়ে ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ জানান তরুণবাবু। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। তার জেরে মহুয়া এখনও বহাল তবিয়তে চাকরি করে যাচ্ছেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।