নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: কথায় বলে ‘সাপের গালেও চুমু, ব্যাঙের গালেও চুমু।’ অর্থাৎ দুই পক্ষকেই তোয়াজ করা। বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের অবস্থাও অনেকটা তেমন। জাতিসঙ্ঘে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে জাতিসঙ্ঘের প্রথম প্রস্তাবে রাশিয়াকে না চটানোর পথে হেঁটেছিল হাসিনা সরকার। বৃহস্পতিবার আবার ডিগবাজি খেয়ে ইউক্রেনের পক্ষে দাঁড়াল। আর বাংলাদেশ সরকারের এমন দ্বিচারিতায় নিয়ে কার্যত কূটনৈতিক মহলে হাসাহাসি শুরু হয়েছে।
ডিগবাজি খেয়ে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর পক্ষে সাফাই গাইতে আসরে নেমেছেন মার্কিন বান্ধব হিসেবে পরিচিত বিদেশমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। শুক্রবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ মানবিক প্রশ্নে সবসময় সোচ্চার। মানবিক কারণে নির্যাতিতদের কল্যাণে ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ। কোনও চাপের মুখে জাতিসঙ্ঘে ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ।’ তাহলে প্রথম প্রস্তাবের সময়ে কেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার মতো সাহস দেখাতে পারল না বাংলাদেশ? এমন প্রশ্নের জবাবে নিজেদের সুবিধাবাদী চরিত্রই ফাঁস হয়েছে বিদেশ মন্ত্রীর কথায়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জাতিসঙ্ঘের প্রথম প্রস্তাবে রাশিয়াকে একতরফাভাবে দোষারোপ করা হয়েছিল, তাই বাংলাদেশ তখন সমর্থন দেয়নি।’
তবে বিদেশ মন্ত্রীর এমন হাস্যকর যুক্তি মানতে পারেননি দেশের প্রাক্তন কূটনীতিবিদরা। নামপ্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক কূটনীতিবিদ বলেছেন, ‘প্রথম প্রস্তাবে যে সব দেশ ভোটদানে বিরত ছিল, সেই ভারত, চিন, পাকিস্তান বৃহস্পতিবারও নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দেয়নি। বাংলাদেশ ডিগবাজি খেয়েছে, কারণ পশ্চিমী দেশগুলির তাঁবেদারি করে দেশে খয়রাতি সাহায্য আনতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমী দেশগুলি যাতে বাংলাদেশকে খয়রাতি সাহায্য দেওয়া বন্ধ না করে, র্যাবের উপরে জারি করা নিষেধাজ্ঞা যাতে বাইডেন প্রশাসন তুলে নেয়, তার জন্যই ডিগবাজি খেয়েছে শেখ হাসিনা সরকার।’