এই মুহূর্তে




ঢাকার ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গনের’ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ গুঁড়িয়ে দিল ইউনূস সরকার




নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের সব চিহ্ন মুছে ফেলতে কোমর কষে ঝাঁপিয়েছে তালিবানি রাজত্ব প্রতিষ্ঠার অন্যতম হোতা তথা রাজাকার মোল্লা মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার। এবার বুলডোজারে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল রাজধানীর বিজয় সরণির মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গনে থাকা মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য। ওখানে জুলাই-অগস্টে মারা যাওয়া নব্য রাজাকারদের স্মৃতির উদ্দেশে গণমিনার গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীর শীর্ষ নেতা তথা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই ক্ষোভ উগরে দিয়ে লিখেছেন, ‘রাজাকারদের জন্য মিনার গড়তে অতীতের শহিদদের মুছে ফেলা ইঙ্গিত দিচ্ছে, তালিবানি রাজত্বে রয়েছে আমরা।’

২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকার বিজয় সরণিতে “মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ” নামে একটি চত্বর উদ্বোধন করেছিলেন দেশত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই প্রাঙ্গনে ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের “মৃত্যুঞ্জয়” নামে একটি ভাস্কর্য এবং ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বিভিন্ন সংগ্রামী অধ্যায় অবলম্বনে নির্মিত ভাস্কর্য। গত বছরের ৫ অগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভেঙে ফেলে জামায়াত ইসলামী-বিএনপি সহ মুক্তিযু্দ্ধ বিরোধী শিবিরের কর্মীরা। আর শুক্রবার (২৭ জুন) থেকে ভাঙা শুরু হয়েছে ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের অর্থবহ সাতটি প্রতিকৃতি।

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক তথা জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীর শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, ‘নতুন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ অর্থহীন। বঙ্গবন্ধু সহ পাকিস্তান ভাঙার ষড়যন্ত্রকারী মুক্তিযোদ্ধাদের স্থান আর্বজনার স্তুপে হওয়া উচিত। একাত্তরের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরালগুলো ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে মুজিব কন্যা শেখ হাসিনাকে উচ্ছেদ আন্দোলনে প্রাণ হারানো জুলাই শহিদদের স্মরণে গণমিনার তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই নির্মাণের জন্য জায়গা পরিস্কার করা হচ্ছে।’

নব্য রাজাকারদের জন্য গণমিনার নির্মাণের আর এক হোতা জঙ্গি সংগঠন আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের মিডিয়া সমন্বয়ক এবং বাংলা আকাদেমির পরিচালক মোহাম্মদ আজম ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের অর্থবহ প্রতিকৃতি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন। তাঁর কথায়, ‘বদলে যাওয়া বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের নামগন্ধ রাখা উচিত নয় বলেই মনে করি। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কাছে লজ্জার। গত ৫৩ বছর ওই লজ্জা বহন করে চলেছি। সেই লজ্জা দ্রুত মুছে ফেলে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের উচিত ইসলামিক রাষ্ট্র গড়ার দিকে উদ্যোগে সামিল হওয়া।  “মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ” নামে এই ম্যুরালের জায়গায় নতুনভাবে “জুলাই শহিদদের” স্মরণে একটি “গণমিনার” নির্মাণ করা হবে।’

যদিও ‘মৃত্যুঞ্জয়ী’ প্রাঙ্গনের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রতিকৃতি ভেঙে দেওয়ার কথা জানাজানি হতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা আর নিন্দার ঝড় উঠেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়া কতটা যৌক্তিক?’ লেখক আজিজুর রহমান খান আসাদ লিখেছেন, ‘ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল ভাঙা মানে শুধু একটি শিল্পকর্ম ও ঐতিহাসিক স্মৃতি ধ্বংস নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ।’

,

 




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

ক্ষমতায় বিএনপিকে চান বাংলাদেশের ৩৯ শতাংশ তরুণ, বলছে জনমত সমীক্ষা

আইসিইউতে জনপ্রিয় গায়িকা ফরিদা পারভীন, ইউনূস সরকারের সাহায্য নিতে অস্বীকার

বদলের বাংলাদেশে দেড় বছরের শিশুর গলায় ছুরি ধরে মাকে গণধর্ষণ

থানায় ঢুকে কনস্টেবলকে ‘স্যার’ বলে পাকড়াও ভুয়ো এসআই, ঠাঁই শ্রীঘরে

বেনজির কাণ্ড, উর্দি পরেই জামায়াতের হয়ে ভোট চাইলেন পুলিশ কর্তা

শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টাইগারদের টি টোয়েন্টি দলে ঠাঁই হল না সৌম্য-শান্ত’র

Advertisement




এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ