নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: দীর্ঘদিন ধরেই নেশা করার জন্য সেবন করা হচ্ছে কাশির সিরাপ ফেনসিডিল। বিশেষ করে তরুণ ও যুব প্রজন্মের কাছে কারণসুধা হয়ে উঠেছে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসায় ব্যবহ্যত সিরাপ। আর তাতেই পোয়াবারো মাদক কারবারীদের পোয়াবারো। প্রশাসনের নজরদারি এড়িয়ে গত কয়েক বছর ধরেই সীমান্ত পেরিয়ে এদেশে ঢুকছে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল। মঙ্গলবার দেশের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ডিভিশন বেঞ্চ নেশার দ্রব্য হিসেবে ব্যবহার করা কাশির সিরাপকে মাদক হিসেবে ঘোষণা করেছে। ফেনসিডিল পরিবহণ ও আদান-প্রদানকে অবৈধ হিসেবেও ঘোষণা করা হয়েছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের ফলে ফেনসিডিল সংক্রান্ত অনেক মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন পুলিশ আধিকারিকরা।
প্রায় ২৫ বছর আগে ১৯৯৭ সালে বিশেষ অভিযানে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাসিন্দা বাদল পালকে ২৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। তরুণ ও যুব প্রজন্মকে বিপথে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনায় যশোরের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল। নিম্ন আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন দোষীসাব্যস্ত হওয়া বাদল পাল। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যশোরের বিশেষ ট্রাইব্যুনালের রায় খারিজ করে দিয়ে তাকে বেকসুর খালাস দেয় হাইকোর্ট। পর্যবেক্ষণে বিচারপতি বলেন, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ফেনসিডিল মাদক নয় এবং এটি পরিবহন অপরাধ নয়।’
হাইকোর্টের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দ্বারস্থ হয় সরকার। এদিন শুনানি শেষে হাইকোর্টের রায়কে বাতিল করে দিয়ে বাদল পালের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখে আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী তাঁর নির্দেশে বলেন, ‘ফেনসিডিল অবশ্যই মাদক। তাই এটি বহন করা অবৈধ।’