নিজস্ব প্রতিনিধি, কক্সবাজার: প্রাক্তন সেনা আধিকারিক সিনহা রাশেদ খানের হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত। পরিচয় জানার পরেও প্রাক্তন সেনা আধিকারিককে লক্ষ্য করে গুলি চালানোতেই এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। সোমবার বহুল আলোচিত সিনহা হত্যাকাণ্ড মামলায় রায় দিতে গিয়ে এমনই পর্যবেক্ষণ মন্তব্য করেছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল। পাশাপাশি গোটা ঘটনাকে দুভার্গ্যজনক বলেও আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
সিনহা হত্যাকাণ্ডের রায় জানতে এদিন আদালত চত্বরে ভিড় উপচে পড়েছিল। ছেলেদের খুনিদের সাজা নিজের কানে শুনতে আদালত চত্বরে হাজির ছিলেন প্রাক্তন সেনা আধিকারিক সিনহা রাশেদ খানের মা নাসিমা আক্তার। পাশাপাশি টেকনাফ থানার ওসি থাকাকালীন প্রদীপ দাস যে সব পরিবারকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে অত্যাচার চালিয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও এদিন সকাল-সকাল আদালত চত্বরে হাজির হন। আদালত চত্বরেই মানববন্ধনে অংশ নেন তাঁরা। ‘খুনি প্রদীপের ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই’, ‘মেজর সিনহার খুনি প্রদীপের ফাঁসি চাই’, ‘২০০ মানুষ হত্যাকারীর প্রদীপের ফাঁসি চাই‘ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
সিনহা হত্যা মামলার রায়কে ঘিরে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্য সকাল থেকেই আদালত চত্বরকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেওয়া হয়। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। দুপুর দুটোর আগেই দোষী সাব্যস্ত ১৫ আসামিকে আদালত চত্বরে হাজির হয়। সোয়া দুটো নাগাদ রায় পড়া শুরু করেন বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল। ৩০০ পৃষ্ঠার রায়ে সিনহা হত্যাকাণ্ডের মূল দুই অভিযুক্ত প্রদীপ দাস ও লিয়াকত আলিকে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়। বাকি ছয় অভিযুক্ত প্রদীপের দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত ও বরখাস্ত কনস্টেবল সাগর দেব এবং টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মোহাম্মদ নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনানো হয়।