নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: শনিবার ভূত চতুর্দশী তিথিতে সন্ধ্যা নামতেই বারাসতে জনতার ঢল নামল মণ্ডপে-মণ্ডপে। কেএনসি রেজিমেন্ট থেকে নবপল্লী সর্বজনীন- সময় যত গড়িয়েছে ততই ভিড় বেড়েছে। নবপল্লী সর্বজনীনের এবারের থিম বদ্রিনাথ। মূলত রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বারাসতে মণ্ডপে মণ্ডপে কালী প্রতিমা দর্শন করা যাবে বলে ঘোষণা করেছিলেন জেলার পুলিশ সুপার। কিন্তু এদিন সন্ধ্যায় বারাসাতের কেএন সি রেজিমেন্ট থেকে লালী সিনেমা হলের সামনে পুজো মণ্ডপে ভিড় দেখে তড়িঘড়ি পুলিশ ফোর্স নামাতে হয় বারাসত জেলা পুলিশ প্রশাসনকে। বারাসতে বিকেল চারটের পর থেকে পণ্যবাহী যান সহ স্বাভাবিক যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ আগামী পাঁচ দিন হবে বলে আগাম জানিয়ে দিয়েছিল পুলিশ প্রশাসন। সন্ধ্যার ভিড় যশোর রোডের স্বাভাবিক গাড়ি চলাচলকে থমকে দেয়।
গত দুবছর করোনার কারণে বিধি নিষেধ থাকায় সেভাবে মানুষ শ্যামা পুজোতে অংশগ্রহণ করতে পারে নি। এবার নেই কোন বিধি নিষেধ। তাই সবকটি পুজো উদ্যোক্তা মনের মতন করে তাদের পুজো মণ্ডপকে দর্শকদের উপহার দিতে সাজিয়ে তুলেছে। বারাসত কলেজ থেকে কলোনির মোড় পর্যন্ত শুধু ছিল জনস্রোত। মণ্ডপের সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি তোলার ধুম লক্ষ্য করা যায়। বারাসতের কে এন সি রেজিমেন্টের শ্যামা পূজা মণ্ডপ, আলোকসসজ্জা ও প্রতিমা দেখতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বারাসত স্টেশন নিকটবর্তী পায়োনিয়ার অ্যাথলেটিক ক্লাবের এবারের থিম ‘হ্যারি পটার। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসতের কালীপুজোর গাইড ম্যাপ(Guide Map) উদ্বোধন করে বারাসত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন এবার বারাসতে ২৫ টি বড় পুজো হচ্ছে। প্রায় ১০/১৫ লক্ষ দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে প্রতিবছর। পুলিশ, দমকল, চিকিৎসক সব মিলিয়ে একটি টিম ওয়ার্ক কাজ করবে। ১২ থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত মন্ডপ ও প্রতিমা দর্শন করতে পারবেন সাধারণ মানুষ।তাদের নিরাপত্তার জন্য জেলা ও বাইরে থেকে প্রচুর পুলিশ কর্মী নিয়োজিত থাকছে।সব মিলিয়ে এর জন্য ২২৫০ জন পুলিশ কর্মী রাস্তায় থাকছে। ১২ টি পুলিশ সহায়তা কেন্দ্র, স্থায়ী সিসি টিভি(CCTV) ছাড়াও আরও ৩৫০ টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।
সাদা পোষাকের পুলিশ ও মহিলা বাইক বাহিনী থাকবে । এর জন্য ৮০ টি মোটর বাইক পেট্রোলিং টিম থাকছে সর্বত্র। চুরি, ছিনতাই রুখতে স্পেশাল ফোর্স থাকছে। পুলিশ সহায়তা বুথ থেকে শিশুদের নিরাপত্তার জন্য স্পেশাল আইডেন্টি কার্ড এর ব্যবস্থা থাকছে। শব্দ বাজী(Banned Fire Crackers) সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পুলিশী অভিযান চালানো হচ্ছে। ১২ থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত বিকাল ৪ টা থেকে ভোর ৪ টা পর্যন্ত পণ্যবাহী গাড়ী চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকছে। এছাড়াও মাঝারি ও রুট বাস চলাচল এর ক্ষেত্রেও বাস স্ট্যান্ড সিফটিং করা হয়েছে। বারাসতের ডাকবাংলো মোড় থেকে স্বাভাবিক যান চলাচল রবিবার থেকে টানা ৫ দিন বিকেল চারটে থেকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ।