এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

ভারতের জাতীয় পতাকার পথচলা

নিজস্ব প্রতিনিধি: ভারতের জাতীয় পতাকা (INDIAN NATIONAL FLAG) আজ আমরা যেমন দেখি, তেমন কিন্তু নয়। বহু বিবর্তনের পরে আমরা এই পতাকা পেয়েছি। দেখে নেওয়া যাক শুরু থেকে পথচলা।

১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের সময়ে যে পতাকা ছিল তা ব্রিটিশদেরই তৈরি। নীল পতাকার বাম দিকের ওপরের কোণে ছিল ইউনিয়ন জ্যাকের ছবি। ডান দিকের মাঝামাঝি ছিল হলুদ রশ্মির সমন্বয়। গোলাকার। ওই হলুদ গোলকের মাঝে ছিল নীল গোলাকার ফিতে। ওই নীল রঙের মাঝে ইংরেজি হরফে লেখা ছিল ‘হেভেন’স লাইট, আওয়ার গাইড’। মাঝে নকশা করা সাদা তারা। তবে এই পতাকা ভারতীয়দের তৈরি নয়।

১৮৮৩ সালে পতাকা তৈরি করেছিলেন শিরিষ চন্দ্র বসু। বর্গাকার সেই সাদা পতাকার মাঝে ছিল লাল রঙের সূর্য।

১৯০৪ (মতান্তরে ১৯০৯) খ্রিস্টাব্দে সিস্টার নিবেদিতা’র তৈরি পতাকা ছিল লাল রঙের বর্গাকার। পতাকার চারধারে ছিল হলুদ রঙের ১০১টি প্রদীপ। মাঝে হলুদ রঙে বাংলা হরফে লেখা ছিল ‘বন্দে মাতরম’। ‘বন্দে’ ও ‘মাতরম’- লেখার মাঝে ছিল বজ্র, কুসুম ও দণ্ডের একত্রে ছবি।

১৯০৫ সালে অনুশীলন সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার প্রমথনাথ মিত্র জাতীয় পতাকা প্রথম উত্তোলন করেছিলেন। ত্রিবর্ণ সেই পতাকার সবার ওপরে ছিল লাল রঙ। তার ওপরে সাদা রঙের ৮টি ফুল আঁকা ছিল। মাঝে হলুদ রঙ। তার ওপরে সংস্কৃত হরফে কালো কালিতে লেখা ছিল, ‘বন্দে মাতরম’। নিচে সবুজ রঙ। বাঁ দিকে সাদা রঙের সূর্যের ছবি। ডানদিকে ছিল অর্ধ চন্দ্রের ছবি। চাঁদের ওপরে ছিল তারা। এরপরে প্রায় একই আদলে ৪টি পতাকা হয়েছিল।

১৯০৬ সালে কলকাতার পার্সিবাগানে  গেরুয়া, হলুদ, সবুজ রঙের পতাকা উত্তোলন করা হয়। গেরুয়া রঙের ওপরে আঁকা ছিল ৮টি সাদা ফুল। হলুদ রঙের ওপরে সংস্কৃত হরফে লেখা ছিল ‘বন্দে মাতরম’। সবুজ রঙের ওপরে সাদা কালিতে বাঁ দিকে আঁকা ছিল সূর্য এবং ডানদিকে আঁকা ছিল অর্ধ চন্দ্র ও তারা। আবার ১৯০৬ সালে ত্রিবর্ণ একই ধরণের পতাকা দেখা গিয়েছে। সেই পতাকা সবুজ, হলুদ ও লাল রঙের। সবুজ রঙের ওপরে ৮টি সাদা পদ্ম আঁকা। হলুদ রঙের ওপরে নীল কালিতে লেখা ‘বন্দে মাতরম’। লাল রঙের ওপরে সাদা কালিতে ডানদিকে আঁকা সূর্য ও বাঁ দিকে আঁকা অর্ধ চন্দ্র।

১৯০৭ সালে প্যারিসে ভিকাজি রুস্তম মাদাম কামা ত্রিবর্ণের একটি পতাকা উড়িয়েছিলেন। গেরুয়া রঙের ওপরে আঁকা ছিল ৮টি সাদা ফুল। হলুদ রঙের ওপরে লেখা ছিল ‘বন্দে মাতরম’। সবুজের ওপরে বাঁ দিকে সাদা রঙে সূর্য এবং ডান দিকে আঁকা ছিল অর্ধ চন্দ্র-তারা। আবার দেখা গিয়েছে, গেরুয়া রঙের ওপরে সাদা রঙে আঁকা ৭টি তারা। একেবারে বাঁ দিকে আঁকা ছিল একটি ফুল।

তবে ত্রিবর্ণ এই ধরণের জাতীয় পতাকার প্রথম নকশাটি বিদেশে বসে তৈরি করেছিলেন অস্ত্রগুরু দ্রোণাচার্য হেমচন্দ্র কানুনগো। সেই পতাকার ওপরে ছিল লাল, মাঝে গেরুয়া ও নিচে আকাশি রঙ। লাল রঙের ওপরে সাতটি ফুল আঁকা ছিল সাদা রঙে। মাঝে সাদা হরফে লেখা ‘বন্দে মাতরম’। নিচে ডানদিকে অর্ধচন্দ্র। বামদিকে সূর্য। সেই সূর্যের হলুদ রশ্মি। মাঝে গেরুয়া রঙ। দেখা গিয়েছে কখনও এই পতাকার নকশায় পরবর্তীকালে ‘বন্দে মাতরম’ হরফ বাংলা, আবার কখনও সংস্কৃত। মূল এবং প্রথম নকশা তৈরি করেছিলেন হেমচন্দ্রই। তারপর একই রকমের বহু নকশা হয়েছে।  

১৯০৬ সালে ঋষি অরবিন্দের ভাই বিপ্লবী বীরেন্দ্র কুমার ঘোষ এবং স্বামী বিবেকানন্দর ভাই ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত তৈরি করেছিলেন একটি নকশা। জুগান্তর সমিতি পার্টি কংগ্রেসে লাল রঙের সেই পতাকা উত্তোলিত হয়েছিল। পতাকার ওপরে সাদা কালিতে একদম ওপরে আঁকা ছিল অর্ধ চন্দ্র ও তারা। একদম নিচে আঁকা চক্র। পতাকার বাম দিকের কোণ থেকে ডান দিক পর্যন্ত  ছিল ত্রিশূল। ডান দিকের কোণ থেকে বাম দিকের কোণ পর্যন্ত ছিল তলোয়ার।

১৯১৭ সালে হোমরুল লীগের নেতা বাল গঙ্গাধর তিলক এবং অ্যানিবেসান্ত একটি পতাকার নকশা করেছিলেন। সেই পতাকা ছিল লাল ও সবুজ রঙের ‘স্ট্রাইপ’। বাঁ দিকে ওপরের কোণে ছিল ইউনিয়ন জ্যাকের ছবি। ডানদিকে ছিল সাদা কালিতে অর্ধ চন্দ্র ও তারা আঁকা। সাদা কালিতে পতাকায় একদিকে ছিল ৫টি তারা ও একদিকে ২টি তারা আঁকা।

১৯১৬ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা ভাটলাপেনামারু গ্রামের বাসিন্দা পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া একটি পতাকার নকশা করেন। তা নজরে আসে এস বি বোমানজি এবং উমর সোবানির। পিঙ্গালি গান্ধিজিকে তা দেখালে লাল ও সবুজ রঙের সঙ্গে চরকা যুক্ত করতে বলেছিলেন। জাতীয় কংগ্রেসের আমেদাবাদ অধিবেশনে উত্তোলিত হয় নতুন নকশা সাদা, সবুজ ও লাল রঙের সেই পতাকার। যার মাঝে নীল রঙা চরকা। সালটা ১৯২১।

১৯২৩ সালে কংগ্রেসের বৈঠকে এই পতাকার নকশা আবার বদলে হয় ওপর থেকে সাদা, সবুজ ও লাল রঙের। মাঝে নীল রঙের চরকা। ১৯৩০ সাল পর্যন্ত উত্তোলিত হতো এই পতাকা।

১৯৩১ সালে করাচি কংগ্রেস অধিবেশনে পতাকার নকশা ঠিক হয়- গেরুয়া, সাদা, সবুজ। মাঝে নীল রঙের চরকা। ওই পতাকাও পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া’র আঁকা।

 আজাদ হিন্দ বাহিণীর পতাকায় ভেঙ্কাইয়া’র আঁকা সেই ত্রিবর্ণ পতাকায় চরকার বদলে ছিল লম্ফমান বাঘ। যা অহিংসার অবস্থানের বদলে সশস্ত্র লড়াই বোঝায়। ওই পতাকায় লেখা হত ‘আজাদ হিন্দ’।  

১৯৪৭ সালে গণ পরিষদের পতাকা কমিটির প্রাথমিক সিদ্ধান্তের পরে ভেঙ্কাইয়ার নকশার ত্রিবর্ণ পতাকায় চরকার বদলে যুক্ত হল সারনাথ স্তম্ভের ‘অশোক চক্র’/ ‘ধর্মচক্র’। ১৯৪৭ অগাস্ট ১৪ অগাস্ট মধ্যরাত্রি ১২টা’র পরে ১৫ অগাস্ট প্রথম উত্তোলিত হয় ভারতের জাতীয় পতাকা।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

গন ভাইফোঁটার পরিকল্পনা নিয়েছে বসিরহাটের ‘নবোদয় সংঘ’

বনগাঁ থানার এবারের কালীপুজোর থিম ‘ কৈলাস পর্বতে মহাদেব’

বাঁকুড়ার সাঁতরা বাড়ির “বড় বৌমা” পূজিত হলেন মা কালীর রূপে

নৈহাটির বড়মার পুজোয় ভক্তদের ভিড়

তারাপীঠে সারারাত খোলা থাকছে গর্ভ গৃহের দরজা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন উপবাস, নিজের হাতে রান্না করলেন ভোগ

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর