নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশজুড়ে সকলের নজর কেড়ে নিল সুপ্রিম কোর্টের(Supreme Court) একটি রায়। দিল্লির এক দম্পতির(Couple) ডিভোর্স মামলায়(Divorce Case) দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দিয়েছে জোর করে কোনও দম্পতিকে একসঙ্গে থাকতে বাধ্য করা হলে তা হিন্দু বিবাহ আইনে(Hindu Marriage Act) ‘নিষ্ঠুরতা’ বলেই চিহ্নিত হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া এবং জে বি পারদিওয়ালার ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে। এই মামলায় দিল্লি হাইকোর্টের(Delhi High Court) রায় ছিল দুইজনকে একসঙ্গেই থাকতে হবে। সেই রায়কে বাতিক করেই সুপ্রিম কোর্ট নতুন রায় দিয়েছে। দেশের শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ ও ঘোষণা, কোনও দম্পতির যদি একসঙ্গে থাকতে ইচ্ছা না করে ও সেই বিচ্ছেদ যদি কাউকে ক্ষতিসাধনের মুখে ফেলে না দেয় তাহলে তাঁদের জোর করে একত্রে জীবনযাপন করানোর কোনও অর্থই হয় না। সেক্ষেত্রে তাঁদের বিচ্ছেদই কাম্য। কিন্তু তাঁদের যদি জোর করে একসঙ্গে থাকতে বাধ্য করা হয় তাহলে তা ‘নিষ্ঠুরতা’(Cruelty) হিসাবেই চিহ্নিত হবে।
আরও পড়ুন মমতার দুয়ারে সরকারের নকল করে ‘নিধি আপকা নিকট’
জানা গিয়েছে, দিল্লির এক দম্পতির ২৯ বছর আগে ১৯৯৪ সালে বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পরে মাত্র ৪ বছর তাঁরা একসঙ্গে ছিল। বিগত শেষ ২৫ বছর তাঁরা আলাদাই থাকছিলেন। তাঁদের কোনও সন্তানও ছিল না। মহিলার অভিযোগ ছিল পণের দাবিতে তাঁকে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা অত্যাচার করায় তিনি বাধ্য হন স্বামীকে ছেড়ে থাকতে। অন্যদিকে পুরুষটির অভিযোগ ছিল, বিয়ের বছরই তা৬র স্ত্রী তাঁকে না জানিয়ে গর্ভপাত করিয়েছিল। এমনকি তাঁদের বাড়ি ছোট ছিল বলে তাঁর স্ত্রীর যেমন শ্বশুরবাড়ি পছন্দ ছিল না তেমনি নাকি তাঁদের পরিবারকেও তাঁর স্ত্রী পছন্দ করতেন না। ১৯৯৮ সালে তাঁর স্ত্রী বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান ও পণের দাবিতে অত্যাচারের মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়ের করেন তাঁদের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের জেরে ওই ব্যক্তি ও তাঁর ভাইকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। যদিও পরে নিম্ন আদালত থেকে তাঁরা জামিন পান। তারপরেই ডিভোর্স চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন ওই ব্যক্তি। কিন্তু ওই মহিলা তাঁর বিরোধিতা করেন।
আরও পড়ুন চুক্তিতে কর্মরত পুলিশ গাড়ি চালকদের বেতন বাড়ালো রাজ্য
নিম্ন আদালত মহিলার আপত্তির কারণে ডিভোর্স মঞ্জুর করেনি। বরঞ্চ মাসিক খোরপোষের নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ওই ব্যক্তি দিল্লি হাইকোর্টে যান। কিন্তু সেখানেও নিম্ন আদালতের রায়ই বহাল রাখা হয়। তার জেরে ওই ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন। ৩টি আদালতের এই মামলার দৌড় শেষ পর্যন্ত ২৫ বছর বাদে থামল। সুপ্রিম কোর্ট ডিভোর্স মঞ্জুর করেছে এবং সেই সঙ্গে ওই ব্যক্তিকে নির্দেশ দিয়েছে যেহেতু তিনি প্রতি মাসে ১ লক্ষ টাকা করে আয় করেন তাই আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে তিনি তাঁর স্ত্রীকে ডিভোর্সের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩০ লক্ষ টাকা দিয়ে দেবেন। এই রায় যত না গুরুত্ব পেয়েছে তার থেকেও বেশি গুরুত্ব পেয়ে গিয়েছে আদালতের পর্যবেক্ষণ।